সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
শিরোনাম: নাটোরে আরো ২০ নারীকে সেলাই মেশিন       ন্যাশনাল ব্যাংক একীভূত হচ্ছে না ইউসিবির সঙ্গে        ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি; বাপ্পী সভাপতি এবং সহ-সভাপতি আশিক মাহমুদ       ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স অ্যাওয়ার্ড পেল ইসলামী ব্যাংক       আইনগত সহায়তা পাওয়া করুণা নয়, দরিদ্র-অসহায় নাগরিকের অধিকার: আইনমন্ত্রী       তীব্র গরমে পথচারীদের বিনামূল্যে শরবত রুহ্ আফজা দিচ্ছে হামদর্দ       সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ির ধাক্কায় শিক্ষার্থীর মৃত্যু      
নওগাঁর সাধন সমাচার-২
নওগাঁয় সাধন চন্দ্র মজুমদার সিন্ডিকেটের দখল বাণিজ্য
dhakawave.com
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২২ জুন, ২০২৩, ১০:০২ পিএম আপডেট: ২৩.০৬.২০২৩ ১০:১৪ এএম |

২০০৮ সালে নওগাঁ-১ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েই দাপট দেখাননি বর্তমান খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। মাঠ বুঝে নিয়েই দাপট বাড়তে থাকে ধীরে ধীরে। এলাকায় পুকুর লীজ, জমিদখল, সরকারি কাজের ঠিকাদারির নিয়ন্ত্রণ সবকিছুই দখলে নেন। অন্যের নামে পুকুর শীঘ্র থাকলেও সেই পুকুর সাধন চন্দ্র মধুমদারের নামে ছেড়ে দিতে হয়েছে। এমনকি বিএনপি নেতার নামে কোন পুকুর থাকলে সেটাও ভয় দেখিয়ে একরকম দখল করা হয়েছে। এরপর গত এক দশকে নওগাঁর নিয়ামতপুরের প্রায় সকল পুকুর ও জলাশয় সংসদ সদস্য সাধন চন্দ্র মঞ্জুমদারের ভাই মনোরঞ্জন মজুমদার মনা ও সিন্ডিকেট সদস্যরা দখল করে নিয়েছেন। সাধন চন্দ্র মজুমদার সিন্ডিকেট এতটাই শক্তিশালী তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাননি।


নওগাঁ-১ আসন পোরশা, সাপাহার ও নিয়ামতপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত। কৃষি এলাকা হিসেবে এই তিন উপজেলারই সুনাম রয়েছে। এই আসনে এক সময় বিএনপির দাপট ছিলো। এখানকার ভোটারদের আকাঙ্খা ছিলো বিএনপিকে বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগকে ভোটে নির্বাচিত করলে কিছু সুফল পাবে। কিন্তু আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন নিয়ে সংসদ সদস্য হিসেবে সাধন চন্দ্র মজুমদার নির্বাচিত হলেও এলাকার মানুষ সুফল পাননি। বরং সাধন চন্দ্র মজুমদার এমপির দাপটে কোনঠাসা হয়ে গেছে ভোটাররা। এমপি নির্বাচিত হয়ে তার ভাই ও সমর্থকদের সাথে নিয়ে একটি শক্তিশালী সিন্ডেকেট তৈরী করেছেন। এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমেই সকল কাজ হয়ে থাকে।


 সংসদ সদস্য হয়ে সাধন চন্দ্র মজুমদারের নামে পুকুর লীজ না থাকলেও তার সিন্ডিকেটের সদস্যরা এই পুকুরগুলো দখল করে নিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতৃবৃন্দরা জানান, প্রায় সাড়ে ৪ হাজার পুকুর সাধন চন্দ্র মজুমদার এমপির সিন্ডিকেটের দখলে। এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমেই সাধন চন্দ্র মজুমদার যত আর্থিক লাভ সেসব করে যাচ্ছেন। নিয়োগের নামে তার কাছে কোন টাকা গেলে সেই টাকা আর কেউ ফেরত পাননি। আর নিয়োগের আশায় ঘুরছেন শিক্ষিত বেকাররা। কৌশলে পুকুর লীজ নেয়া থেকে শুরু করে সরকারি কাজের ঠিকাদারির নিয়ন্ত্রণও তিনিই করেন। রাস্তা উন্নয়ন, পাকা করণ, সংস্কার সব কাজেই কমিশন বাণিজ্য এখন রমরমা। কমিশন বানিজ্যের টাকা কম হলেই রোষানলে পড়েন ঠিকাদাররা। মুখবুজে সহ্য করা ছাড়া কোন উপায় নেই তাদের। মান্দা ব্রীজ থেকে নিয়ামতপুর বাজার পর্যন্ত যে পাকা সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে তার নিম্নমানের কাজ বলে স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ তুলেছেন। এই সড়কে চলাচল করলেই দেখা যাবে নিম্নমানের কাজের রূপরেখা। সড়কটির বিভিন্নস্থানে পিচপাথর উঠে গেছে ও থানাদন্দকে ভরা। এলাকাবাসি এই সক সড়ক দিয়ে চলাচলে নানা দুর্ভোগ পোহাচ্ছে
ন।

নিয়ামতপুর উপজেলার কয়েকজন ভোটার জানান, সাধন চন্দ্র মজুমদার এমপি তার নিজ এলাকা শিবপুরে অবাঙালিদের বেশ কিছু জমি দখল করে নিয়েছেন। সংসদ সদস্য থেকে ২০১৯ সালে মন্ত্রী হওয়ার পর তিনি আরো বেপরোয়া হয়ে যান। নিজ এলাকায় ভাইদের সাথে নিয়ে একটি সিন্ডিকেট তৈরী করেছেন। এই সিন্ডিকেট সদস্যরা খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের হয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। মন্ত্রী হওয়ার পর থেকে নিজ দপ্তরে তিনি সমালোচিত হয়েছেন। তিনি সহজেই মিডিয়ার সামনে মুখ খোলেন না। খাদ্য মন্ত্রনালয়ের সচিব বা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকদের মাধ্যমেই মিডিয়াতে কথা বলান।


নওগাঁর পোরশা থানা আওয়ামী লীগের কয়েকজন জানান, মন্ত্রীর ভাই ও সিন্ডিকেট সদস্যরা খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সকল টেন্ডার বাগিয়ে নেন। যে কারণে নওগাঁর অধিকাংশ চালক মিলমালিকরা মন্ত্রীর উপর নাখোশ।  মন্ত্রী নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন চালকল মিলমালিকদের। সে কারণে ২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর বাংলাদেশ অটো মেজর এন্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির এক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয় বগুড়ার একটি হোটেলে। এই সংবাদ সম্মেলনে লোকসানে চাল সরবরাহ করতে পারবেন না বলে কেন্দ্রীয় কমিটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। অথচ এর আগে বাংলাদেশ অটো মেজর এন্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতি বগুড়ায় এই ধরনের দাবীমুলক কোন সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেননি। কী এমন ঘটনা ঘটেছিলো সেদিন যে তারা বগুড়ায় সংবাদ সম্মেলন করেছে। বাংলাদেশ অটো মেজর এন্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতির কয়েকজন নেতা ওই সময় জানিয়েছিলেন, নওগাঁ যেহেতু খাদ্যমন্ত্রীর এলাকা সে কারণে নিরপেক্ষ ভেন্যু হিসেবে বগুড়ায় বেছে নেয়া হয়।


নওগাঁ জেলা মৎস্য কর্মকর্তার অফিস সুত্রে জানা যায়, নওগাঁ জেলায় দীঘি বা পুকুর রয়েছে ৪৭ হাজার ৩২৪টি। যার মোট আয়তন ১২ হাজার ৮৫০ হেক্টর। যা থেকে মোট উৎপাদন হয় ৫৮ হাজার ৬১৫৪ মেট্রিক টন মাছ। বিল রয়েছে ১২৩টি। যার আয়তন ৭ হাজার ৬৫৫ হেক্টর। মাছ উৎপাদন হয় ৫ হাজার ৩২৩ মেট্রিকটন। এরমধ্যে জেলার পোরশা উপজেলার মৎস্যজীবীর সংখ্যা রয়েছে ১ হাজার ৩৪ জন। সরকারী পুকুর ৮৫৮টি, বেসরকারী পুকুর ১ হাজার ৫৭১টি। ঠিক একইভাবে নিয়ামতপুর ও সাপাহার উপজেলায় রয়েছে আরো প্রায় ৪ হাজার পুকুর। তিন উপজেলা মিলিয়ে প্রায় ৬ হাজার পুকুর রয়েছে।


পোরশা, নিয়ামতপুর ও সাপাহার উপজেলা সদরের বেশ কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, খাদ্যমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকা হলেও তিনি এলাকায় নিয়মিত যাননা। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলে তিনি জেলা পর্যায়েই থাকেন। তাই এলাকার মানুষের অভাব, অনাটন, দাবী দাওয়া তিনি শোনেন না। নিজের সুবিধামত তিনি এলাকায় আসেন। আর নির্বাচন কাছে এলে তাকে এলাকায় দেখা যায়। খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের ভাই ও তার সিন্ডিকেট সদস্যরা এলাকায় এলাকায় টহল দিয়ে থাকে। 


খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার নিজস্ব সিন্ডিকেট দিয়ে তার নির্বাচনী এলাকা নিয়ন্ত্রণ করেন। ভোটাররা ভোট দিয়েছিলো উন্নয়নের আশায় কিন্তু এখন সে সব গুড়েবালি। খাদ্যমন্ত্রী নানা অনিয়ম করে নিজ এলাকায় এখন বিষফোড়া। আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানান, তাদেরকে মূল্যায়ন না করে মন্ত্রী ভাইলীগ ও সিন্ডিকেট লীগ তৈরি করেছেন।  

সূত্রঃdhakawave.com






আরও খবর


Chief Advisor:
A K M Mozammel Houqe MP
Minister, Ministry of Liberation War Affairs, Government of the People's Republic Bangladesh.
Editor & Publisher: A H M Tarek Chowdhury
Sub-Editor: S N Yousuf

Head Office: Modern Mansion 9th Floor, 53 Motijheel C/A, Dhaka-1223
News Room: +8802-9573171, 01677-219880, 01859-506614
E-mail :[email protected], [email protected], Web : www.71sangbad.com