শিরোনাম: |
মির্জাগঞ্জে বাঁশ শিল্প অস্তিত্ব সংকটে ; কাঁচামালের স্বল্পতায় বাঁশ শিল্প
নিজস্ব প্রতিবেদক, ৭১ সংবাদ ডট কম :
|
প্লাস্টিক সামগ্রীর প্রসার, প্রয়োজনীয় পুঁজি, পরিকল্পিত উদ্যোগের অভাবে চরম অস্তিত্ব সংকটে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের বাঁশ শিল্প। উৎপাদিত পণ্য সামগ্রীর ন্যায্য মূল্য না থাকায় এ শিল্পের সঙ্গে জড়িতদের অনেকেই পাল্টাতে শুরু করেছেন পেশা। দারিদ্রতাকে আলিঙ্গন করে পৈত্রিক পুরুষের ঐতিহ্যবাহী পেশাকে যারা আগলে রয়েছেন তারাও রয়েছেন নানা সমস্যায় বাজারে প্রচলিত প্লাস্টিক দ্রব্য সামগ্রীর সঙ্গে পাল্লা দিতে না পেরে তারাও হয়ে পড়েছেন কোনঠাসা। ফলে আবহমান বাংলার এ শিল্পের ঐতিহ্য হারানোর পাশাপাশি জেলার বাঁশ শিল্পীদের ভাগ্যে নেমে এসেছে দুর্দিন। একসময় মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গের মধ্যে বাঁশের তৈরি দ্রব্য সামগ্রীর প্রয়োজনীয়তা ছিল অনেক। কুলা, খাঁচা, চালনি, চাটাই, ডোল, ঝুড়ি, পলো, ডালা প্রভৃতি বাঁশজাত পণ্যের ছিল ব্যাপক চাহিদা। কিন্তু কালের বিবর্তনে আধুনিক বিজ্ঞানের প্রসারতায় বর্তমানে বাঁশের তৈরি এসব সামগ্রীর অনেক পণ্যই তৈরি করছে প্লাস্টিক পণ্য নির্মাণ প্রতিষ্ঠান। সাশ্রয়ী মূল্যসহ টেকসই ও স্থায়িত্বের কারণে এসব প্লাস্টিক সামগ্রী দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে জনসাধারণের কাছে। ফলে প্রতিনিয়ত কমছে বাঁশের তৈরি পণ্য সামগ্রীর কদর। উপজেলার গ্রামীণ জনপদে বাঁশের তৈরি সামগ্রী তৈরি হলেও এর বড় একটি অংশের যোগান হত মির্জাগঞ্জ ইউনিয়ন থেকে। এক সময়ে এ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ছিল প্রায় শতাধিক বাঁশ শিল্পী পরিবারের বসবাস। বাঁশের সামগ্রী তৈরি করে স্বাচ্ছন্দ্যময় জীবনযাপনসহ আর্থিক সচ্ছলতা। কিন্তু বিগত কয়েকবছর ধরে বাশঁ শিল্পে বিরাজ করছে চরম মন্দাবস্থা। কুমার খোলা গ্রামের বাঁশ শিল্পী গণেশ চন্দ্র হাওলাদার জানান, বাপ দাদার পেশা তাই আকড়ে ধরে আছি। ছেলেমেয়েরা এখন আর এ পেশায় থাকতে চাচ্ছেনা। পরিশ্রম বেশি, লাভ কম। আগের মত চাহিদাও নেই। বাঁশ শিল্পে জড়িত সুবল মাঝি জানান, বাঁশের দাম বেড়ে গেছে। পুঁজি সংকটও রয়েছে। চাহিদা ও মুনাফা ভাল না থাকায় পরিবারেও যাচ্ছে দুর্দিন। আধুনিক প্রযুক্তির সামগ্রীর ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় এ শিল্পের ক্ষুদ্র বিক্রেতাদেরও যাচ্ছে দুর্দিন। বাঁশের তৈরি সামগ্রীর বিক্রেতা হরেন পাল জানান, এক যুগ আগেও ছিল বাশের সামগ্রীর কদর। পরিবারের দৈনন্দিন কাজে বাঁশের তৈরি কুলা, চালনি, ঝুড়ি, ডালা মানুষ ব্যবহার করত। এখন এসব পণ্য প্লাস্টিকের পাওয়া যাচ্ছে। ফলে বেচা-বিক্রি খুবই কমে গেছে। এখন খাঁচা, চাটাই, ডোল, পলো এসব বিক্রি হচ্ছে কিন্তু এসবেরও এখন আগের মত চাহিদা নেই। চিরায়ত বাঙালি সংস্কৃতির অংশ পরিবেশ বান্ধব বাঁশ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে, পেশা সংশ্লিষ্টদের বিনা সুদে কিংবা স্বল্প সুদে পরিবার ভিত্তিক ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা গ্রহণসহ পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করা জরুরী বলে মনে করছেন অভিজ্ঞরা। |