শিরোনাম: |
ভালো নেই ওপারের বন্ধুপ্রতিম দেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক, ৭১ সংবাদ ডট কম :
|
![]() বাংলাদেশের মানুষের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই: মে. জে. (অব.) মোহাম্মদ আলী সিকদার (নিরাপত্তা বিশ্লেষক)আমাদের সামপ্রদায়িক সম্প্রীতিতে চোখ রাখতে হবে: ইমতিয়াজ আহমেদ (অধ্যাপক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়)এ ঘটনা পার্শ্ববর্তী মুসলিম দেশগুলো পছন্দ করছে না: ড. নূহ-উল আলম লেনিন (আ.লীগের সাবেক সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য)ভারতের বিষয় হলেও আমাদের দেশে প্রভাবের সম্ভাবনা রয়েছে: ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন, (নিরাপত্তা-বিশ্লেষক) এ নিয়ে এপারের সামপ্রদায়িক সমপ্রীতির দেশের বুদ্ধিজীবী ও সচেতনমহল বলছে, পৃথিবীর সকল মানুষই মানবিক-মানবতাকে পছন্দ করে। মানুষ কখনোই সঙ্ঘাত-সহিংসতা কামনা করে না। হঠাৎ ভারতের মুসলমানদের ওপর হামলার ঘটনা খুবই অস্বাভাবিক। এটা ধর্মের ওপর আক্রমণ বলেও মনে করা হচ্ছে। তারা বলছেন, আমরা দেখছি— বাংলাদেশের মানুষ এ ঘটনায় খুব সচেতনভ চোখ রাখছে। ভারতের সামপ্রদায়িক দাঙ্গার বিষয়টি যেনো আমাদের সামপ্রদায়িক সমপ্রীতির ওপর কোনো প্রভাব না ফেলে। সরকারের সচেতন দৃষ্টি সবসময় রাখতে হবে। এখানে যে সব সংখ্যালঘু রয়েছেন, তারা যেনো সর্ব অবস্থায় সুরক্ষায় থাকতে পারেন। ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ের ঘটনা নিয়ে বাংলাদেশের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। ভারতের ঘটনার পর আমাদের সরকারের কিছুই করার নেই, তবে বাংলাদেশ সরকার সর্ব অবস্থায় এ দেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তায় চোখ রাখছে। কেউ যাতে অতি উৎসাহী হয়ে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে না পারে। এদিকে দিল্লির হিংসার ঘটনায় গতকাল মার্কিন কমিশনার অনুরিমা ভার্গবা জানিয়েছেন, ‘আমরা দেখেছি দিল্লির হিংসায় বেছে বেছে মুসলিমদের আক্রমণ করা হচ্ছে। ওদের বাড়ি, দোকান পুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। সরকারের প্রাথমিক দায়িত্বগুলোর মধ্যে একটি হলো— দেশের প্রত্যেক নাগরিককে ধর্মবিশ্বাস নির্বিশেষে নিরাপত্তা দেয়া। ?মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভারত সফরেই রাজধানী দিল্লিতে বড় হিংসার ঘটনা ঘটে গেছে। ধর্মীয় সংঘর্ষের জেরে ৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর আহত ২০০ জনেরও বেশি। সেখানে মুসলিমদের ক্রমশ একঘরে করে দেয়ার প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে। যা সম্পূর্ণভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল। অন্যদিকে, আরেকটি তদন্তে উঠে এসেছে— সামপ্রদায়িক দাঙ্গার ঘটনায় জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে মসজিদ। এলাকা ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে মুসলিম পরিবারদের। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অধীন দিল্লি পুলিশও গোটা ঘটনায় নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে। শক্ত হাতে সহিংসতা দমনে ব্যর্থ হয়েছে কেন্দ্রের মোদি সরকার। দিল্লির এমন উত্তপ্ত ঘটনা নিয়ে দৈনিক আমার সংবাদের সঙ্গে কথা বলেন দেশের কয়েকজন বুদ্ধিজীবী। তারা বলেন, বন্ধুপ্রতিম দেশে খুব দ্রুতই শান্তি ফিরে আসবে। এ নিয়ে বাংলাদেশের নাগরিকদের আতঙ্কিত না হওয়ারও অনুরোধ জানান তারা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ আমার সংবাদকে বলেছেন, হঠাৎ ভারতের মুসলমান ওপর হামলার ঘটনা খুবই অস্বাভাবিক। এটা ধর্মের ওপর আক্রমণ। এ জন্যই মানুষ রাস্তায় নেমেছে। আশ পাশের যে সমস্ত মুসলিম দেশ রয়েছে তারাও এর প্রতিবাদ জানাচ্ছে। আমরা দেখছি, বাংলাদেশের মানুষ এ ঘটনায় খুব সচেতনভাবে চোখ রাখছে। তাই আমাদেরকে খেয়াল রাখা দরকার, ভারতের সামপ্রদায়িক দাঙ্গার বিষয়টি যেনো আমাদের যে সামপ্রদায়িক সমপ্রীতি রয়েছে এর ওপর কোনো প্রেসার না আসে। সে জন্য সরকারকে সবসময় খেয়াল রাখতে হবে। মানুষ যেভাবে জেগে উঠেছে, এটা যাতে বাংলাদেশের ওপর কোনো প্রেসার না আসে। তার তাই সরকারকে সচেতন দৃষ্টি সবসময় রাখতে হবে। এখানকার যে সমস্ত সংখ্যালঘু রয়েছে তারা যেনো সর্ব অবস্থায় সুরক্ষায় থাকতে পারেন। নিরাপত্তা বিশ্লেষক মে. জে. (অব.) মোহাম্মদ আলী সিকদার বলেছেন, মানুষ কখনোই সঙ্ঘাত-সহিংসতা কামনা করে না। মানুষ মানবিক মানবতাকে পছন্দ করে। কিন্তু সমপ্রতি ভারতে যেভাবে মুসলমানদের ওপর আক্রমণের ঘটনা ঘটছে তা সামপ্রদায়িক দাঙ্গা। এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এমন ঘটনা আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশের কাছে কোনোভাবে কাম্য নয়। নাগরিকত্ব আইন অধিকার, এগুলো রাষ্ট্রের সাথে সম্পৃক্ত। কিন্তু রক্তাক্ত-খুন, জ্বালাও-পোড়াও কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা দেখছি, বাংলাদেশের মানুষ উৎসুক হয়ে ভারতের সব ঘটনায় জানতে ছাচ্ছে। খবর রাখছে। তবে আমি আমি বলবো, বিষয়টি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তাদের ওখানে জীবনহানির ঘটনা; এটা দুঃখজনক। তবে এটা নিয়ে আমাদের সরকারের কিছুই করার নেই, বাংলাদেশের মানুষের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। বাংলাদেশ সামপ্রদায়িক সমপ্রীতির দেশ। তবে সরকারকে সচেতন থাকতে হবে। সতর্ক থাকতে হবে— কেউ যাতে আমাদের সংখ্যালঘুদের ওপর কোনোভাবে আক্রমণ করতে না পারে। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সাবেক সদস্য ড. নূহ-উল আলম লেনিন আমার সংবাদকে বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি ভারত যেভাবে সামপ্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি করেছে, সহিংসতার পথ বেছে নিয়েছে, এটি কোনোভাবে সমাধানের পথ হতে পারে না। এর সঠিক পথ ভারতের রাষ্ট্রকে খুঁজে নিতে হবে। তাদের এই ঘটনা পার্শ্ববর্তী মুসলিম দেশগুলো পছন্দ করছে না, এটি অনুধাবন করা প্রয়োজন। তবে এ ঘটনায় বাংলাদেশের মানুষকে কোনো ধরনের আতঙ্কিত না হওয়ার অনুরোধ জানান তিনি। লেলিন বলেন, এমন ঘটনার পরপরই বাংলাদেশ সরকার খুব সচেতনভাবে সবকিছুর ওপর সজাগ দৃষ্টি রেখেছে। সব কিছুর ওপর খেয়াল রাখছেন। নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, নাগরিক আইন নিয়ে দিল্লির পরিস্থিতি এখন এটা চরমে পৌঁছে গেছে। এটা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় হলেও আশপাশের দেশগুলোতে এক ধরনের প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমাদের দেশেও নিরাপত্তা এবং পর্যবেক্ষণ বাড়াতে হবে। বাংলাদেশে এ পর্যন্ত এ ধরনের আলামত আমরা দেখিনি। তবে অনেকরকম ইলিমেন্ট বাংলাদেশেও আছে। যারা অনেক কিছু উস্কাতেও পারে। সেদিক থেকে সরকারি সব সংস্থাকে খুব সর্তক থাকতে হবে। স্পর্শকাতর এলাকাগুলোর দিকে নজর রাখতে হবে। নাগরিক আইনের আমি কোনো সমাধান দেখি না। এখন ভারতে যে সরকার আছে এটা তাদের অ্যাজেন্ডা। তারা এখন না হলেও পরিস্থিতির পরিবর্তন হলে আবার এটা নিয়ে মাঠে নামবে। এ পর্যন্ত তাদের যে মনোভাব তাতে মনে হয় তারা এটা করেই ছাড়বে। দাঙ্গা আরো ছড়াতে পারে।
|