শিরোনাম: |
দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে রাজধানী ঢাকার যোগাযোগ গাবতলী থেকে ফরিদপুর পর্যন্ত বিস্তৃত হবে-
নিজস্ব প্রতিবেদক, ৭১ সংবাদ ডট কম :
|
Image result for দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে রাজধানী ঢাকার যোগাযোগের ছবি স্বপ্নের পদ্মা সেতুর কাজ চলমান থাকার পরও দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে রাজধানী ঢাকার যোগাযোগের জন্য বিকল্প আরেকটি রুট নিয়ে বড় ধরনের পরিকল্পনা গ্রহণ করতে যাচ্ছে সরকার। প্রস্তাবিত এই রুটটি ঢাকার গাবতলী থেকে দোহারের মৈনাটঘাট হয়ে চরভদ্রাসন-ফরিদপুর পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। এর ফলে রাজধানী ঢাকা থেকে গাবতলী হয়ে যাত্রীবাহী গাড়ি ও পণ্যবাহী ট্রাক ওইপথে সহজে ও দ্রুততম সময়ে ফরিদপুর দিয়ে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে পৌঁছাতে পারবে। সূত্র জানায়, বর্তমানে মৈনাটঘাট দিয়ে পদ্মা পার হয়ে সীমিত পরিসরে দেশীয় ইঞ্জিনচালিত নৌকা ও স্পিডবোটে মানুষজন ঢাকা-ফরিদপুরে যাতায়াত করছে। তবে এতে খুব বেশি পণ্য পরিবহনের সুযোগ নেই। আর আঞ্চলিক সড়কটিও প্রশস্ত নয়। তবে দূরত্ব কম বলে সময় ও অর্থ বাঁচাতে ঝুঁকি নিয়েই এই রুটে প্রতিদিন শত শত যাত্রী যাতায়াত করে। এ অবস্থায় ফরিদপুর-৪ আসনের এমপি মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন রাজধানী ঢাকার সঙ্গে ফরিদপুর দিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের এই বিকল্প যোগাযোগ পথটি কার্যকর করার সুপারিশ করেন। পরে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এটির সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব পঙ্কজ কুমার পালকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে গত ১৫ জানুয়ারি। ওই কমিটি প্রস্তাবিত এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করে গত সপ্তাহে একটি প্রাথমিক প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ফেরি পারাপার হয়ে ঢাকা থেকে সড়কপথে ফরিদপুরের দূরত্ব ১৩৮ কিলোমিটার। প্রস্তাবিত রুটটি চালু হলে গাবতলী থেকে সড়কপথে মৈনাটঘাটের দূরত্ব হবে প্রায় ৫০ কি.মি. এবং অপরপাশে চরভদ্রাসন (গোপালপুর ঘাট) থেকে ফরিদপুরের দূরত্ব হবে প্রায় ২৫ কি.মি.। ফলে ঢাকা থেকে সড়কপথে ফরিদপুরের দূরত্ব দাঁড়াবে প্রায় ৭৫ কি.মি., যা বর্তমানের রুটের চেয়ে প্রায় ৬৩ কি.মি. কম হবে। দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে বিকল্প এই যোগাযোগ মাধ্যম কার্যকর করতে মৈনাটঘাটে পদ্মা নদীর দুই পাড়ে ফেরিঘাট চালু করবে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে যাত্রীবাহী বাস ও পণ্যবাহী ট্রাক পারাপারের জন্য চালু হবে ফেরি সার্ভিস। প্রস্তাবিত ফেরিঘাট থেকে নদীপথে পদ্মা সেতুর দূরত্ব প্রায় ২৫ কি.মি. এবং পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ঘাটের দূরত্ব প্রায় ৪৫ কি.মি.। বিকল্প এই রুটটি চালু হলে ঢাকার সঙ্গে ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, যশোর, খুলনা, নড়াইল, মাগুরাসহ দক্ষিণের জেলাগুলোর দূরত্ব অনেকটা কমে যাবে। ওই অঞ্চলের লোকজন দ্রুত মালামাল পরিবহনসহ অল্প খরচে ঢাকায় যাতায়াত করতে পারবে। নতুন এই রুটটির সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের লক্ষ্যে গঠিত কমিটির আহ্বায়ক নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব পঙ্কজ কুমার পাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, মাওয়া-জাজিরা প্রান্ত দিয়ে পদ্মা সেতু চালু হলে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোর যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম হবে ওই রুটটি। এতে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের গাড়িগুলো সময় ও দূরত্ব কমাতে এই রুটটি ব্যবহার করবে বলে মনে করা হচ্ছে। এতে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হতে পারে পদ্মা সেতুতে। মৈনাটঘাট ফেরি সার্ভিস চালু হলে দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে যোগাযোগের আরেকটি মাধ্যম চালু হবে। ফলে পদ্মা সেতু বিশেষ করে সড়ক ও রেলপথের ওপর অতিরিক্ত চাপ হ্রাস পাবে। উপরন্তু পণ্য পরিবহনসহ যাত্রী পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটবে। কমিটি যে প্রতিবেদন দিয়েছে, তার পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, মৈনাটঘাট হয়ে দোহার-চরভদ্রাসন রুটে যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু হলে ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলোর দূরত্ব স্থানভেদে ৫০ থেকে ১০০ কি.মি. কমে যাবে। এর ফলে সময় ও জ্বালানি খরচ হ্রাস পাবে। পণ্য পরিবহন ব্যয়ও কমে যাবে। সংযুক্ত এলাকার যোগোযোগ অবকাঠামো উন্নয়নের ফলে অর্থনৈতিক অবস্থারও উন্নতি ঘটবে। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নসহ জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের পাশাপাশি কর্মসংস্থান ও নতুন ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে। ভৌগোলিক অবস্থান, বিভিন্ন পরিবহনের মাধ্যমে বিকল্প সংযোগ স্থাপন, পদ্মা সেতুর ওপর চাপ হ্রাস এবং আর্থ-সামাজিক গুরুত্বের মাপকাঠিতে দোহার-চরভদ্রাসন নতুন ফেরিঘাট নির্মাণ ও ফেরি সার্ভিস চালুকরণ যৌক্তিক হবে বলে মতামত দিয়েছে কমিটি।
|