শিরোনাম: |
মুক্তিযুদ্ধের নতুন দিগন্ত রংপুর বিভাগের পাঁচ বই
-আজহারুল আজাদ জুয়েল-
গণহত্যা-বধ্যভূমি ও গণকবর জরিপ দিনাজপুর জেলা :
নিজস্ব প্রতিবেদক, ৭১ সংবাদ ডট কম :
|
![]() মুক্তিযুদ্ধের সময় দিনাজপুরে ব্যাপক গণহত্যা সংঘটিত হলেও সাধারন মানুষ সেই সমস্ত ঘটনা প্রায় ভুলেই গিয়েছিলেন। কিন্তু গণহত্যা-নির্যাতন ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষণা কেন্দ্রের উদ্যোগে ২০১৯ সালে একাত্তরের গণহত্যা-বধ্যভূমি ও গণকবর নিয়ে একটি জরিপ চালানো হয়। দিনাজপুর সরকারি সিটি কলেজের অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হক যিনি লেখক হিসেবে মোজাম্মেল বিশ^াস নামে সুপরিচিত তিনি গবেষণা কর্মটি সম্পাদন করেন। গবেষণার ফলাফল নিয়ে ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে “গণহত্যা-বধ্যভূমি ও গণকবর জরিপ দিনাজপুর জেলা” শিরোনামে বই প্রকাশ করা হয়। প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায় দিনাজপুরের ১৩ উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৭২৬টি গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। ৩২টি বধ্যভূমি ও ৩৪টি গণকবর রয়েছে এই জেলায়। হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা নির্যাতন কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করত এমন ৬৫টি নির্যাতন কেন্দ্রের সন্ধান পেয়েছেন গবেষক মোজাম্মেল বিশ^াস। সব মিলিয়ে দিনাজপুর সদরে ৫০৫টি, বিরলে ১৫৬টি, কাহারোলে ৮টি, বোচাগঞ্জে ৮৯টি, বীরগঞ্জে ১৯টি, খানসামায় ১৩টি, চিরিরবন্দরে ১১৭টি, ফুলবাড়িতে ৮৮টি, পার্বতীপুরে ৫২৬টি, বিরামপুরে ১৭৭টি, নবাবগঞ্জে ১২টি, হাকিমপুরে ৩০টি ও ঘোড়াঘাটে ১২৭টি গণহত্যা, বধ্যভূমি ও নির্যাতন কেন্দ্রের নিদর্শন এবং তথ্য তুলে ধরেন তিনি। বইটিতে গণহত্যার শিকার প্রায় দুই হাজার ব্যক্তির নামও তুলে ধরা হয়। হানাদারদের হাতে মারা যাওয়ার আগে সুঠামদেহী আব্দুল জলিল মোল্লা পাকিস্তানি সেনাদের উদ্দেশে বলেছিলেন, গুলি করবি, একথা আগে বললি না কেন? বললে তো তোদের দু-চারটাকে খেয়ে ফেলতাম বেটা ঠগবাজ।’ একজন প্রত্যক্ষদর্শীর কাছ থেকে জেনে এই বইয়ে শহিদ জলিলের এই উদ্ধৃতি তুলে ধরেছেন মোজাম্মেল বিশ^াস। বইটির ৯৫ পৃষ্ঠায় সেই শহিদ জলিলের কথা আছে। আর এই রকম অসংখ্য শহিদের কথা, তাদের উপর অকথ্য নির্যাতনের কথা তুলে ধরা হয়েছে এই গবেষণা জরিপটিতে। বইটি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের এক অমূল্য সংযোজন। এটি সম্পাদনা করেছেন মুনতাসীর মামুন ও ড. মাহবুবর রহমান। ৩৪৮ পৃষ্ঠার অফসেট মুদ্রণের বইটির মূল্য রাখা হয়েছে ৪০০ টাকা, প্রকাশ করেছে ১৯৭১ : গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর ট্রাস্ট, খুলনা, মুদ্রণে সুবর্ণ। |