শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ১৫ চৈত্র ১৪৩০
শিরোনাম: বিএটি বাংলাদেশের ৫১তম এজিএম অনুষ্ঠিত       আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকে ইন্টারন্যাশনাল ইসলামী ডেবিট কার্ড চালু       ফেঞ্চুগঞ্জের তজমুল আলী চত্বরে এমপি হাবিবের পক্ষে ইফতার বিতরণ       মিনিস্টারের ‘শত কোটি টাকার ঈদ উপহার’ অফারে একটি রেফ্রিজারেটর কিনে আরও একটি রেফ্রিজারেটর ফ্রি পেলেন মোঃ আসাদুজ্জামান সুমন       গ্যালাক্সি এ১৫ ৫জি - দুর্দান্ত সব ফিচার ও অসাম ডিসপ্লে নিয়ে স্যামসাং গ্যালাক্সি এ সিরিজের নতুন চমক বাজারে       মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে       আইসিএসবি কর্তৃক বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস পালিত      
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও আমাদের ভ্যাকসিন দেয়ার কথা বলেছে।
দেশের মানুষ এ বছর নভেল করোনাভাইরাসের টিকা পাচ্ছেন না।
এ নিয়ে বিশ্বব্যাপী পরীক্ষা-নিরীক্ষাই এখনও শেষ হয়নি
নিজস্ব প্রতিবেদক, ৭১ সংবাদ ডট কম :
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১০:৪৫ এএম আপডেট: ২৪.০৯.২০২০ ৫:১৬ পিএম |

দেশের মানুষ এ বছর নভেল করোনাভাইরাসের টিকা পাচ্ছেন না। এ নিয়ে বিশ্বব্যাপী পরীক্ষা-নিরীক্ষাই এখনও শেষ হয়নি। টিকা বাজারে আসার পর সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও বিতরণের অনেক বিষয় এখন চূড়ান্ত করেনি কর্তৃপক্ষ। প্রয়োজনীয় মাত্রার কোল্ডচেইন বজায় রাখা সম্ভব না হওয়ায় সব দেশের টিকা সংরক্ষণ করা যাচ্ছে না। এজন্য বিকল্প দেশে অনুসন্ধান চলছে। ভ্যাকসিন দেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সিরিঞ্জ, পর্যাপ্ত পরিমাণে উৎপাদন বা ক্রয়ের পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়নি। 


এছাড়া বিতরণে লোকবল, সরঞ্জামসহ সব পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা এখনই চূড়ান্ত করা উচিত বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সর্বশেষ তালিকা অনুযায়ী টিকা তৈরিতে ১৭৬টি উদ্যোগ চালু আছে। এর মধ্যে ৩৪টি মানবদেহে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে। তৃতীয় ধাপের পরীক্ষায় সবচেয়ে এগিয়ে আছে ৮টি।


সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে এগুলো মানুষের হাতে পৌঁছাতে কমপক্ষে আরও কয়েক মাস (আগামী জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি) লাগবে। আরও একটু সময় নেবে বাংলাদেশে পৌঁছাতে। তাতে চলতি বছর পার হয়ে যাবে। সে পর্যন্ত দেশবাসীকে করোনা থেকে বাঁচতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। এ সময়ের মধ্যে শেষ করতে হবে এ সংক্রান্ত সব ধরনের প্রস্তুতি। এদিকে জাতিসংঘের চলতি অধিবেশনে টিকার প্রাপ্যতা নিয়ে বিশ্বদরবারে কথা বলবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।


স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন আগামী জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারির আগে পাওয়ার সম্ভাবনা কম। চীনা ভ্যাকসিন হাতে পেতে আগামী মে-জুন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে। তবে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন পেতে ইতোমধ্যে চারটি দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। এছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও আমাদের ভ্যাকসিন দেয়ার কথা বলেছে।


জানা গেছে, বিভিন্ন দেশ ও কোম্পানি করোনা টিকার মূল্য নির্ধারণ করেছে। যেমন অক্সফোর্ড ও এস্ট্রাজেনেকার তৈরি ভ্যাকসিনটির প্রতি ডোজের দাম ধরা হয়েছে মাত্র ৪ ডলার। রাশিয়ার ভ্যাকসিনের দাম দুই ডোজ ১০ ডলার, জনসন অ্যান্ড জনসন দুই ডোজ ১০ ডলার। উহান ইনস্টিটিউট অব চায়না ১৪৫ ডলার দুই ডোজ, চীনের সিনোফার্ম দুই ডোজ ১৪৫ ডলার।


যুক্তরাষ্ট্রের মাডর্না দুই ডোজ ৫০ থেকে ৬০ ডলার, ফাইজার দুই ডোজ ৩৯ ডলার। বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশে মোট ১৪ কোটি ডোজ টিকা লাগবে। এজন্য কী পরিমাণ অর্থব্যয় হবে, এর মধ্যে কতটা বিনামূল্যে পাওয়া যাবে, তা এখনও নিশ্চিত হয়নি। অগ্রিম টাকা দিয়ে বুকিংয়ের পরামর্শও দিয়েছে জাতীয় কমিটি। সে বিষয়ে তেমন অগ্রগতি নেই। অথচ বিভিন্ন দেশের সরকার, টিকা প্রস্তুতকারক, বিভিন্ন সংস্থা ও ব্যক্তি এখন পর্যন্ত কোভিড-১৯ টিকার গবেষণা ও উন্নয়নে ১৪০ কোটি ডলার দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।


ওইসব দেশ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা পাবে। এদিকে করোনাভাইরাসের কোনো টিকা পাওয়া গেলে বিশ্বব্যাপী দ্রুত এবং ন্যায়সঙ্গতভাবে বিতরণের লক্ষ্যে ‘ঐতিহাসিক’ একটি চুক্তিতে সম্মত হয়েছে ১৫৬টি দেশ। নতুন এ চুক্তি অনুযায়ী, টিকা পাওয়া প্রতিটি সদস্য রাষ্ট্রের জনসংখ্যার ৩ শতাংশের মধ্যে তা বিতরণ করা হবে। দেশে আনার পর নিয়মানুযায়ী অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা পাবেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। এরপর জ্যেষ্ঠ নাগরিকদের দেয়া হবে। পর্যায়ক্রমে পাবে অন্যান্য বয়সের নাগরিকরা। এখন পর্যন্ত এটাই চূড়ান্ত হয়ে আছে।


ভ্যাকসিন সংরক্ষণের বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম বলেন, আরএনএ ভ্যাকসিনগুলো ছাড়া সব ভ্যাকসিন সংরক্ষণের ব্যবস্থা আমাদের রয়েছে। মাইনাস ২০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় ভ্যাকসিন সংরক্ষণের পর্যাপ্ত সুযোগ আছে, যেটি আমরা ব্যবহার করে থাকি। তাছাড়া কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনগুলোর মধ্যে শুধু অত্যাধুনিক আরএনএ পদ্ধতিতে উদ্ভাবিতগুলোর ক্ষেত্রেই মাইনাস ৬০ ডিগ্রিতে সংরক্ষণ করতে হয়। সেবিষয়েও দাতাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলে জানান তিনি।


বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান বলেন, ভ্যাকসিন বিষয়ে অতিসম্প্রতি বেশকিছু নতুন তথ্য যুক্ত হয়েছে, যা আমাদের আশার সঞ্চার করছে। এগুলো হল- বিশ্বব্যাপী করোনার টিকা সংগ্রহ-বিতরণে নেতৃত্ব দেবে ইউনিসেফ। যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মুখপাত্র মার্গারেট হ্যারিস বলেছেন, বিশ্বজুড়ে ব্যাপক আকারে টিকাদান আগামী বছর মাঝামাঝির আগে সম্ভব হবে না। নোভাভ্যাক্সের টিকাও নিরাপদ এবং রাশিয়ার টিকা স্পুটনিক করোনা প্রতিরোধে সক্ষম। এছাড়া আগামী অক্টোবরে বাজারে আসছে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন, দাম থাকবে নাগালে। খবরটি অবশ্যই আমাদের কিছুটা আশ্বস্ত করেছে।



বিভিন্ন দেশের টিকার বর্তমান অবস্থা
অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন : অক্সফোর্ড ও এস্ট্রাজেনেকার তৈরি ভ্যাকসিনটির তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা চলছে। ইতোমধ্যে বিশ্বের ১০টি সংস্থার সঙ্গে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরুর চুক্তি সই হয়েছে। ইতোমধ্যে ২০০ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন তৈরির আদেশ পেয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে অক্টোবরেই ভ্যাকসিন সরবরাহ করা যাবে।


চীনের ক্যানসিনোর ভ্যাকসিন : চীনে মোট আটটি ভ্যাকসিন মানবদেহে পরীক্ষার অনুমতি পেয়েছে। চীন ও চীনের বাইরে ভ্যাকসিনগুলো নিয়ে পরীক্ষা চালানোর পর অ্যাড ৫-এনকোভ নামের এ ভ্যাকসিন নিরাপদ প্রমাণিত হয়েছে। এ ভ্যাকসিনটি কানাডায়ও মানবপরীক্ষার জন্য অনুমতি পেয়েছে।
রাশিয়ার ভ্যাকসিন : গত ১১ আগস্ট অনুমোদনের পর দ্রুতগতিতে এ টিকা অনুমোদন দেয়া নিয়ে পশ্চিমা গণমাধ্যম এর কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। রাশিয়ার টিকা প্রাথমিক পরীক্ষায় এটি প্রতিরোধে সক্ষমতা প্রমাণ করেছে। শরীরে টিকা দেয়ার পর সক্ষম অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে এবং বড় কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।


মডার্নার ভ্যাকসিন : যুক্তরাষ্ট্রের মডার্নার তৈরি ভ্যাকসিন জুলাইয়ে ৩০ হাজার স্বেচ্ছাসেবীকে প্রয়োগের মধ্য দিয়ে তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা শুরু করে। মডার্নার এমআরএনএ-১২৩৩ ভ্যাকসিন তৈরি প্রতিযোগিতায় অক্সফোর্ডের পরের অবস্থানেই আছে। ইতোমধ্যে এ সংস্থা উৎপাদনের চুক্তিও করে ফেলেছে যুক্তরাষ্ট্রেরই ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা ক্যাটালেন্টের সঙ্গে। সম্প্রতি মডার্নার সিইও স্টিফেনন বানসেল বলেছেন, পরীক্ষামূলক প্রয়োগের ফল আগামী নভেম্বরের মধ্যে পাওয়া যাবে বলে আশা করা যায়।


তৃতীয় ধাপে ফাইজার : আমেরিকার ফাইজার ও জার্মানির বায়োএনটেকের যৌথ উদ্যোগে তৈরি বিএনটি-১৬২ ভ্যাকসিন প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের পরীক্ষামূলক ট্রায়ালে সুরক্ষা এবং কার্যকারিতায় সফল হয়েছে। সম্প্রতি ৬০ হাজার মানুষের দেহে প্রয়োগ শুরু করার মাধ্যমে চূড়ান্ত ধাপের পরীক্ষা শুরু করেছে ফাইজার-বায়োএনটেক। নোভাভ্যাক্সের ভ্যাকসিন : যুক্তরাস্ট্রের টিকা প্রস্তুতকারী কোম্পানি নোভাভ্যাক্সের টিকাটি কার্যকর ও নিরাপদ। চিকিৎসা বিজ্ঞানবিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের সাময়িকী ‘দ্য নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিন’-এ এক নিবন্ধে টিকাটি নিরাপদ ও কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে বলে বলা হয়েছে।


ভারতীয় ভ্যাকসিন : ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট অক্সফোর্ড ভ্যাকসিনের ৪০ কোটি ডোজের এবং নোভাভ্যাক্সের ১০ কোটি ডোজের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল করে চলেছে। বাংলাদেশ ও করোনা ভ্যাকসিন : ইতোমধ্যে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে ২ জুলাই বাংলাদেশের ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো টিকা গ্রহণের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। পাশাপাশি চীনের সিনোভ্যাকের সঙ্গে বাংলাদেশের আইসিডিডিআরবি ভ্যাকসিন ট্রায়াল শুরু করতে যাচ্ছে।






আরও খবর


Chief Advisor:
A K M Mozammel Houqe MP
Minister, Ministry of Liberation War Affairs, Government of the People's Republic Bangladesh.
Editor & Publisher: A H M Tarek Chowdhury
Sub-Editor: S N Yousuf

Head Office: Modern Mansion 9th Floor, 53 Motijheel C/A, Dhaka-1223
News Room: +8802-9573171, 01677-219880, 01859-506614
E-mail :[email protected], [email protected], Web : www.71sangbad.com