বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ১৪ চৈত্র ১৪৩০
শিরোনাম: ফেঞ্চুগঞ্জের তজমুল আলী চত্বরে এমপি হাবিবের পক্ষে ইফতার বিতরণ       মিনিস্টারের ‘শত কোটি টাকার ঈদ উপহার’ অফারে একটি রেফ্রিজারেটর কিনে আরও একটি রেফ্রিজারেটর ফ্রি পেলেন মোঃ আসাদুজ্জামান সুমন       গ্যালাক্সি এ১৫ ৫জি - দুর্দান্ত সব ফিচার ও অসাম ডিসপ্লে নিয়ে স্যামসাং গ্যালাক্সি এ সিরিজের নতুন চমক বাজারে       মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে       আইসিএসবি কর্তৃক বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস পালিত       মিনিস্টার গ্রুপ এবং ফরাজী হাসপাতাল লিমিটেডের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর       ইসলামী ব্যাংকের শরী’আহ সুপারভাইজরি কমিটির সভা স¤পন্ন      
মহামারির মধ্যেও বাড়তি ফি আদায় করছে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
নিজস্ব প্রতিবেদক, ৭১ সংবাদ ডট কম :
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৮ এপ্রিল, ২০২১, ১০:০৮ এএম |

এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার ফরম পূরণ সামনে রেখে করোনাকালেও ছাত্রছাত্রীদের ওপর রুদ্রমূর্তিতে আবির্ভূত হয়েছে দেশের অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বোর্ড ফি-র বাইরে কোনো খাতেই অর্থ না-নেওয়ার কড়া নির্দেশনা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না।কোচিং, মডেল টেস্ট, অনলাইনসহ নানা খাতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে দু-তিন হাজার টাকা বেশি আদায় করা হচ্ছে। এভাবে অভিভাবকদের পকেট কেটে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে লাখ লাখ টাকা। কয়েকদিন ধরে টেলিফোনে যুগান্তরে এমন অভিযোগ জানান অভিভাবকরা। পরে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে সরেজমিন অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়।অভিভাবকরা বলছেন, করোনা মহামারির কারণে তাদের অনেকেরই আয় কমে গেছে। এর মধ্যে শুরু হয়েছে ‘লকডাউন’। এ অবস্থায় সন্তানের পরীক্ষার ফরম পূরণের টাকা জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তারা আরও বলেন, এক বছরে স্কুল-মাদ্রাসায় কোনো ক্লাস হয়নি। কিন্তু বেতন ঠিকই আদায় করছে। এ ক্ষেত্রে বোর্ডের নির্দেশনা রয়েছে, ডিসেম্বরের পর কোনো বেতন নেওয়া যাবে না।

কিন্তু অনেক স্কুল কর্তৃপক্ষ তা মানছে না। অভিভাবকদের দাবি, কিছু প্রতিষ্ঠান কোচিং ও মডেল টেস্ট ফি নিচ্ছে। কোচিং করাতে পারবে কি না বা পরীক্ষা নিতে পারবে কি না, সেই প্রশ্নের জবাব দিচ্ছে না। টেস্ট পরীক্ষা বাতিল করা হলেও ফি আদায় করছে। নতুন খাত অনলাইন ফি। আছে আরও কিছু খাত। সন্তান প্রতিষ্ঠানে পড়ায় তারা রীতিমতো জিম্মি। কেননা, এ নিয়ে উচ্চবাচ্য করলে সন্তানের ক্ষতি হতে পারে।তাই মুখ বুজে তারা সবকিছু সহ্য করছেন। অভিভাবকরা আরও বলছেন, উপার্জন না-থাকায় টাকার জোগাড় করতে এখন তাদেরকে ঋণ করে দিতে হচ্ছে ফি। অনেকে স্বর্ণালংকার বিক্রি করছেন। আবার কেউবা গৃহপালিত পশু। সমবায় সমিতি, এনজিওসহ সুদে টাকা দেয় এমন প্রতিষ্ঠান থেকেও কেউ কেউ সন্তানের ফরম পূরণের টাকা সংগ্রহ করে পরিশোধ করতে বাধ্য হচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে বেশিরভাগ বিদ্যালয় অনুরোধ শুনছে না।ক্ষোভ প্রকাশ করে রাজধানীর আহমদ বাওয়ানী একাডেমির এক ছাত্র জানায়, কোচিং ফি-র নামে তাদের কাছ থেকে দুই হাজার টাকা করে বাড়তি নেওয়া হচ্ছে। তার বাবা স্কুলে গিয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। কিন্তু এক টাকাও কম নেয়নি। আরেক শিক্ষার্থী জানায়, সে দুই হাজার টাকা ফি নিয়ে গিয়ে ফরম পূরণ করে প্রথমদিন ফেরত আসে। পরে চার হাজার টাকা নিয়ে যায়।

আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নেহাল আহমেদ যুগান্তরকে বলেন, ফরম পূরণ ফি বাদে কোনো খাতেই একটি টাকাও নেওয়া যাবে না। এ ব্যাপারে কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্তসাপেক্ষে তাদের সব কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হবে। এরপর প্রতিটি টাকা ফেরত দিলে ওই প্রতিষ্ঠান পুনঃকার্যক্রম চালাতে পারবে।জানা গেছে, এ বছর প্রায় ২৯ হাজার স্কুল ও মাদ্রাসা থেকে সাড়ে ২০ লাখ পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। অভিযোগ পাওয়া গেছে, ঢাকাসহ প্রায় সারা দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই ফরম পূরণের নির্ধারিত ফি-র বাইরেও অর্থ আদায় করা হচ্ছে। ঢাকার যাত্রাবাড়ীর সবুজ বিদ্যাপীঠ স্কুল ও কলেজের এক অভিভাবক জানান, মানবিক ও বিজনেস স্টাডিজে চার হাজার ৫০ এবং বিজ্ঞানে চার হাজার ১৫০ টাকা করে ফি নেওয়া হচ্ছে।এই ক্ষেত্রে মানবিক ও বিজনেস স্টাডিজে এক হাজার ৮৫০ টাকা, বিজ্ঞানে এক হাজার ৯৫০ টাকা বোর্ড ফি। বাকি টাকা মার্চ মাস পর্যন্ত অনলাইন চার্জ এবং মডেল টেস্ট ফি বলে উল্লেখ করছে। জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির প্রভাতি শাখার ইনচার্জ সাবেরা সুলতানা পুষ্প বলেন, এ বিষয়ে তিনি কথা বলতে অপারগ। প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি। তবে প্রধান শিক্ষক কাওসার আলি শেখের ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।

নয়াবাজার এলাকার আহমদ বাওয়ানী স্কুলও চার হাজার টাকা করে নিচ্ছে। বাকি দুই হাজার টাকা কোচিং ফি। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, করোনার মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি কীভাবে কোচিং করাবে। সবুজ বিদ্যাপীঠের এক অভিভাবক বলেন, সন্তান স্কুলে পড়ায় নাম প্রকাশ করতে পারছি না। আমরা জিম্মি। বাড়তি অর্থ না-নিলে সন্তান বিপাকে পড়তে পারে। তাই পত্রিকায় ফোন করেছি যদি বোর্ড প্রতিবেদন আমলে নিয়ে পদক্ষেপ নেয়।চট্টগ্রামের হাটহাজারীর ছিপাতলী ঈদগাহ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে তিন হাজার ৯৪৫ টাকা নেওয়া হচ্ছিল। অতিরিক্ত টাকা দিতে না-পারায় অনেকের ফরম পূরণ করেনি স্কুল কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি অভিযোগ আকারে পেয়ে প্রাথমিক তদন্ত শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষককে শোকজ করেছেন বলে জানা গেছে।পটুয়াখালীর বাউফল প্রতিনিধি জানান, উপজেলায় বিভিন্ন স্কুল ও মাদ্রাসায় এসএসসি-দাখিল পরীক্ষার ফরম পূরণে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। কোনো প্রতিষ্ঠানে চার হাজার টাকা পর্যন্ত ফি আদায় করছে। বিষয়টি নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অতিরিক্ত ফি নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি সূর্যমণি ইউনিয়নের ইন্দ্রকুল মাধ্যমিক বিদ্যালয়।

সেখানে টোকেন দিয়ে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ করেন বিদ্যালয়টির অভিভাবক শফিজ উদ্দিন রাঢ়ি। তিনি বলেন, তার নাতি আল কাইয়ুম এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী। শ্রেণিশিক্ষক তাকে সাদা কাগজে লিখে চার হাজার ২৩৫ টাকা পরিশোধের কথা বলেছেন। আরও কয়েকজন অভিভাবক একই অভিযোগ করেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান অবশ্য দাবি করেন, বোর্ড নির্ধারিত ফি-ই নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া যাদের কাছে বকেয়া পাওনা আছে, সেটা আদায় করা হচ্ছে।ফরম পূরণের সময় বাড়ছে : এদিকে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফরম পূরণের সময় বুধবার শেষ হয়েছে। আজ থেকে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত বিলম্ব ফি-সহ ফরম পূরণ করার সুযোগ ছিল। তবে ‘লকডাউন’ চলায় ফরম পূরণের সুযোগ শিক্ষা বোর্ডগুলো আবার দেবে। এজন্য বিলম্ব ফি নেওয়া হবে না। বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, বিলম্ব ফি ছাড়া ফরম পূরণের সময় বাড়ানো হবে। ‘লকডাউন’-এর পর এ নিয়ে চেয়ারম্যানদের বৈঠক আছে। বৈঠকের পর নতুন সময়সূচি জানিয়ে দেওয়া হবে। কারও কাছ থেকে বিলম্ব ফি নেওয়া যাবে না।করোনা মহামারির কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের প্রতিষ্ঠান ৩০ মার্চ খুলে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পরিস্থিতির কারণে তা পিছিয়ে ২৩ মে খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। আর ২৪ মে খুলবে বিশ্ববিদ্যালয়।






আরও খবর


Chief Advisor:
A K M Mozammel Houqe MP
Minister, Ministry of Liberation War Affairs, Government of the People's Republic Bangladesh.
Editor & Publisher: A H M Tarek Chowdhury
Sub-Editor: S N Yousuf

Head Office: Modern Mansion 9th Floor, 53 Motijheel C/A, Dhaka-1223
News Room: +8802-9573171, 01677-219880, 01859-506614
E-mail :[email protected], [email protected], Web : www.71sangbad.com