শিরোনাম: |
মারাত্মক নিরাপত্তা ঝুঁকিতে রয়েছে বরিশাল বিমানবন্দর
|
![]() কেননা সেখানে কারও ধূমপান করার কথা নয়। এখানেই শেষ নয়, স্থানীয় দায়িত্বশীলদের অবহেলা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, রানওয়েতে বিমান অবতরণ-উড্ডয়নের জরুরি লাইন মার্কিং পর্যন্ত ঢাকা পড়েছে ঘাসের নিচে। জরুরি ভিত্তিতে এসব ত্রুটি দূর করতে কর্মপরিকল্পনা চাওয়া হয়েছে বরিশাল বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপকের কাছে।বিষয়টি জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও পাওয়া যায়নি ব্যবস্থাপক আব্দুর রহিম তালুকদারকে। মোবাইলে দেওয়া ফোন রিসিভ না করার পাশাপাশি পাঠানো খুদে বার্তারও কোনো জবাব দেননি তিনি। এ বিমানবন্দরের নানা সমস্যা নিয়ে কিছুদিন ধরেই খবর প্রকাশ হচ্ছিল যুগান্তরসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৭ জানুয়ারি পরিদর্শনে আসে বেবিচক গঠিত টিম। সিনিয়র অ্যারোড্রাম ইন্সপেক্টর আয়ুব খানের নেতৃত্বে টিমে ছিলেন এজিএ পরিদর্শক ও পরামর্শক তপন কুমার ঘোষ এবং এজিএ সহকারী পরিচালক আব্দুল লতিফ। পরিদর্শন শেষে তারা এ সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট জমা দেন বেবিচকের ফ্লাইট স্ট্যান্ডার্ড রেগুলেশন এবং আইএ বিভাগের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মুকিত উল আলম মিয়ার কাছে।পরে ১৮ জানুয়ারি মুকিত উল আলম স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি চিঠি বরিশাল বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপককে পাঠানোর পাশাপাশি সমস্যা সমাধানে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। পরে বেবিচকের প্রকৌশল দপ্তর থেকেও একটি নির্দেশনা পাঠানো হয় এখানকার ব্যবস্থাপককে। পরিদর্শন রিপোর্ট অনুযায়ী, ফ্লাইট ওঠানামাসহ বিমানবন্দর সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য সংরক্ষণের বাধ্যতামূলক এয়ারড্রোম ম্যানুয়াল যায়নি এ এয়ারপোর্টে। ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টারের (ইওসি) অস্তিত্ব পায়নি পরিদর্শক দল। পাওয়া যায়নি আইসোলেটেডে এয়ারপোর্ট বে। এটা না থাকাটা সত্যিকার অর্থেই ঝুঁকিপূর্ণ। অগ্নিনির্বাপক দলকে কোনো প্রশিক্ষণ দেওয়ারও নজির পায়নি পরিদর্শন দল। ফলে বিমান ক্র্যাশসহ জরুরি মুহূর্তে ফায়ারকর্মীরা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবে কিনা তা নিয়ে রয়েছে সন্দেহ। ২৬ বছর আগে যাত্রী পরিবহণ শুরু হওয়া এ বন্দরে পাওয়া যায়নি ডিজঅ্যাবল এয়ারক্র্যাফট প্ল্যান। রানওয়েতে বিমান অবতরণের জরুরি টিএইচআর এবং সেন্ট্রাল লাইন মার্কিংও নেই এ বিমানবন্দরে। বহু আগে করা মার্কিংয়ের রং উঠে ফ্যাকাসে হয়ে গেছে। আকাশ থেকে তা দেখা যায় না বললেই চলে। সেন্ট্রাল লাইন থেকে প্রস্থের উভয় প্রান্তে ১৫০ মিটার দূরত্বে যে আর ডব্লিউ ওয়াই সাইড স্ট্রিপ থাকার কথা তারও অস্তিত্ব নেই রানওয়েতে।প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, রানওয়ের পাশের ঘাস বড় হয়ে ঢাকা পড়েছে এই স্ট্রিপ। প্রশ্ন উঠেছে, এ স্ট্রিপ ঘাসের নিচে ঢাকা পড়তে কম করে হলেও ৭-৮ মাস সময় লেগেছে। বিষয়টি দায়িত্বশীলদের চোখ এড়ালো কী করে? রানওয়ের যেখানে এসে বিমান দাঁড়ায় সেই অ্যাপ্রোনের মার্কিংও খুঁজে পায়নি পরিদর্শন দল। নেই রানওয়ের দুই প্রান্তে ৬০ মিটারজুড়ে সেফটি এরিয়া। বিমান অবতরণে দুর্ঘটনাজনিত কারণে ক্র্যাশ হলে যা বিমান এবং তার যাত্রীদের বাঁচাতে সহায়তা করে। এছাড়া প্রতিবেদনে আরও যেসব সমস্যা উল্লেখ করা হয়েছে তা হলো-সিঙ্গেল লাইন ল্যাম্প না থাকা, এয়ারপোর্টের চারদিকের নিরাপত্তামূলক বাতিগুলো অকেজো থাকা। পরিস্থিতি দেখতে শনিবার বরিশালে আসেন বেবিচকের মেম্বার (অর্থ) শফিকুল ইসলাম, পরিচালক (অর্থ) মোয়াজ্জেম হোসেন এবং ডিভিশন ৩-এর নির্বাহী প্রকৌশলী আমিনুল হাসিব। শুক্রবারের আগুনের ঘটনা ও বিমানবন্দরের সার্বিক উন্নয়নের বিষয়গুলো দেখতেই বরিশালে আসা বলে জানিয়েছেন তারা। বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান বলেন, সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিচ্ছি আমরা। খুব শিগগিরই এ সংক্রান্ত কার্যক্রম শুরু হবে। বরিশাল বিমানবন্দরের নিরাপত্তা বিধানে সিভিল এভিয়েশনের ম্যানুয়াল অনুযায়ী সম্ভব সবকিছু করা হবে। |