শুক্রবার ৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩০
শিরোনাম: মাত্র ৭১ দিনে পদ্মা ব্যাংকের ফিক্সড ডিপোজিট স্কিম “বিজয় ৭১”       তথ্য, যোগাযোগ ও প্রযুক্তি শিল্পের পুঁজিবাজারে প্রবেশের পথ সুগম করতে বেসিস এবং প্রাইম ব্যাংকইনভেস্টমেন্টের চুক্তি স্বাক্ষর       কিস্তিতে মার্সেল ফ্রিজ কিনে লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার পেলেন নোয়াখালীর অটোমেকানিক আলাউদ্দিন       ক্রেনের আঘাতে ট্রেন লাইনচ্যুত, ঢাকার সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ       নাদিহা আলীর মৃত্যতে বসুন্ধরা পরিবারের শোক       হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বহির্গমন লাউঞ্জে যমুনা ব্যাংক পিএলসি এর কর্মশালার আয়োজন       রেপো, লিকুইডিটি সাপোর্ট সুবিধা এবং আইবিএলএফ নিলামের ফলাফল      
৭০ ভাগ মানুষই জানেন না তারা কিডনি রোগে আক্রান্ত
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১০ মার্চ, ২০২২, ১০:২৯ এএম |

বাংলাদেশে পৌনে তিন কোটি মানুষ কিডনি রোগে ভুগছেন। দেশে জনসংখ্যার ৪৩ শতাংশই শিশু এবং এদের মধ্যে সাড়ে ৬ শতাংশই কিডনি সমস্যায় ভুগছে। এছাড়া দেশের ৭০ ভাগ মানুষ জানেন না তারা কিডনি রোগে আক্রান্ত।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই মুহূর্তে দেশে প্রায় আড়াই থেকে পৌনে তিন কোটি মানুষ কিডনি রোগে ভুগছেন। এদের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগীর সংখ্যা প্রায় ৯-১০ লাখ। প্রতিবছর আবার প্রায় দুই লাখ নতুন রোগী যোগ হচ্ছে। চিকিৎসা ব্যয় বেশি হওয়ায় ৯০ ভাগ রোগীই তা বহন করতে পারছে না। বছরে ৪০ হাজারের বেশি এ রোগী বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছেন। এর বিস্তার যে কেবল বাংলাদেশেই তা নয়।

সবশেষ পরিসংখ্যান বলছে, বিশ্বে প্রতি ১০ জনের একজনই কিডনি রোগে ভুগছেন। দেশে এ রোগের চিকিৎসা ব্যবস্থাও করুণ। ২০০১ সালে জাতীয় কিডনি ইন্সটিটিউটের যাত্রা শুরু হলেও এ পর্যন্ত মাত্র ৩৬টি কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। যদিও বাংলাদেশে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে প্রায় তিন হাজার কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। আজ জাতীয় কিডনি দিবস। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘কিডনি হেলথ ফর অল অর্থাৎ সবার জন্য সুস্থ কিডনি।’এ উপলক্ষ্যে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে বাংলাদেশে কিডনি রোগী ও চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে এমন চিত্রই পাওয়া গেছে। মগববাজারে বেসরকারি ইনসাফ বারাকাহ কিডনি হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিশিষ্ট ইউরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. এম ফখরুল ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত দেশে প্রায় তিন হাজার কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে শ্যামলীতে বেসরকারি সিকেডি হাসপাতালের চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. কামরুল ইসলাম এক হাজার ৫০টির মতো প্রতিস্থাপন করেছেন।

করোনা শুরুর আগে বিএসএমএমইউতে সপ্তাহে একটা করে কিডনি প্রতিস্থাপন করা হচ্ছিল। এর বাইরে বেসরকারিভাবে ন্যাশনাল কিডনি ফাউন্ডেশন, অ্যাপোলো, এভারকেয়ারসহ দেশে সাত থেকে আটটি হাসপাতালে কিডনি প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে। সেই দিক থেকে বিশাল ভবন নির্মাণ করে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করেও জাতীয় কিডনি হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থা বেশ করুণ।কিডনি ইন্সটিটিউট হাসপাতালের চিকিৎসক-কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলছেন, ২০০১ সালের ১৮ এপ্রিল রাজধানীর শেরে বাংলানগরে ১১৬ শয্যার জাতীয় কিডনি অ্যান্ড ইউরোলজি ইন্সটিটিউট উদ্বোধন হয়। ২০০১ সালে ৩১ মে পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠার ১০ বছর পর ২০১১ সালের ৯ এপ্রিল প্রথম কিডনি প্রতিস্থাপন হয়। এরপর ২০১৫ সালের ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত ৩০ জন রোগীর দেহে কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। পরবর্তীতে আইসিইউ সচল না থাকা, ডিজিটাল এক্সরে মেশিন অকেজো হওয়া, রোগীদের এনজিওগ্রাম ও টিস্যু টাইপিংয়ের ব্যবস্থা না থাকায় মুখ থুবড়ে পড়েছে এর কার্যক্রম।

সম্প্রতি নতুন করে সেবাটি চালু হয়েছে। গত এক বছরে মাত্র তিনজনের কিডনি স্থাপন করা হয়েছে।বুধবার হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মিজানুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, আমি দেড় বছরেরও কম সময় (১৪ মাস) দায়িত্ব নিয়েছি। চিকিৎসাকেন্দ্রটি ঢেলে সাজানোর চেষ্টা করছি। এরইমধ্যে তিনজনের শরীরে কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। তিনজন রোগী পাইপলাইনে রয়েছে। তিনি বলেন, প্রতিস্থাপনের পূর্বশর্ত রোগীর টিস্যু টাইপিং, এইচএলএ পরীক্ষা ও ড্রাগ লেভেল নির্ণয়। সে ব্যবস্থা এখানে নেই। ফলে বিএসএমএমইউ ও পরিচিত হাসপাতাল থেকে করিয়ে আনছি। কিন্তু ধার করে হলেও টান্সপ্লান্ট কার্যক্রম চালু করছি।তিনি আরও বলেন, প্রয়োজনীয় কিছু সরঞ্জাম যেমন, ওটি লাইট ও ট্রান্সপ্লান্ট সেট দরকার, সেগুলোর জন্য মন্ত্রণালয়ে চাহিদাপত্র জমা দিয়েছি। আশা করছি আগামী জুন মাসের মধ্যে পেয়ে যাব। রোগীদের কাছ থেকে প্রতি ডায়ালাইসিস বাবদ ৫১০ টাকা হারে ৬ মাসে ২০ হাজার টাকা নেওয়া হচ্ছে। বাকিটা সরকার ভর্তুকি দিচ্ছে।

গত জানুয়ারিতে ৩ হাজার ২০০টি ও ফেব্রুয়ারিতে ২ হাজার ৮৭ রোগীর কিডনি ডায়ালাইসিস হয়েছে।হাসপাতালের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফিরোজ খান বলেন, দেশসহ বিশ্বব্যাপী কিডনি বিকল ভয়াবহ স্বাস্থ্য সমস্যা। ক্রমেই এ রোগের প্রকোপ বাড়ছে। চিকিৎসা নিতে গিয়ে মানুষ নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছেন। বিশ্বে প্রতি ১০ জন প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে ১ জন দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে ভুগছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আশঙ্কা অনুযায়ী এমনটা চলতে থাকলে আগামী ২০৪০ সালের মধ্যে ৫০ লাখের বেশি কিডনি বিকল রোগী সংকটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসার অভাবে অকাল মৃত্যুবরণ করবে। তাছাড়া মৃত্যুঘাতী হিসাবে দুই যুগ আগেও রোগটি ২৭তম অবস্থানে ছিল, বর্তমানে সপ্তম অবস্থানে রয়েছে। আগামী ২০৪০ সালে মানুষের মৃত্যুর পঞ্চম কারণ হবে রোগটি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নন কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল (এনসিডিসি) লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. মো. রোবেদ আমিন বলেন, একটি সুষ্ঠু কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। দেশে এ রোগ নিয়ে কোনো নীতিমালা, কৌশলপত্র বা নির্দেশিকা নেই।

প্রতিরোধযোগ্য রোগটির ঝুঁকি ও সচেতনতা তৈরি এখনই জরুরি।দিবসটি উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ রেনাল অ্যাসোসিয়েশন, কিডনি রোগ গবেষণা সংস্থা ক্যাম্পাসসহ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। আজ সকালে জাতীয় কিডনি হাসপাতাল স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের উপস্থিতিতে র‌্যালি ও আলোচনা সভা হবে। বেসরকারি ইনসাফ বারাকাহ হাসপাতালে মাসব্যাপী বিনামূল্যে মেডিকেল ক্যাম্প করবে। কিডনি ফাউন্ডেশনে র‌্যালি ও আলোচনা সভা হবে। গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল একটি প্রকল্পের আওতায় আগামী ১৫ এপ্রিল থেকে দরিদ্র কিডনি রোগীদের গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে রাত ৮টা হতে ভোর ৫টার শিফটে হেমোডায়ালাইসিসে অল্প খরচে বিশেষ সুবিধা দেবে।








Chief Advisor:
A K M Mozammel Houqe MP
Minister, Ministry of Liberation War Affairs, Government of the People's Republic Bangladesh.
Editor & Publisher: A H M Tarek Chowdhury
Sub-Editor: S N Yousuf

Head Office: Modern Mansion 9th Floor, 53 Motijheel C/A, Dhaka-1223
News Room: +8802-9573171, 01677-219880, 01859-506614
E-mail :71sang[email protected], [email protected], Web : www.71sangbad.com