শিরোনাম: |
আবহাওয়া অনূকূলে না থাকার কারণে মাঠে থাকা বোরো ধান এবং সয়াবিন দ্রুত কেটে ঘরে তোলার আহ্বান
|
![]() অন্য দিকে, ঝড়ো বাতাসে কিছু কিছু ধান গাছ মাটিতে নুয়ে পড়ায় সেগুলো অনেকাংশে নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া সয়াবিন ক্ষেতে বৃষ্টির পানি জমে থাকার কারণে পচে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। কৃষি বিভাগ বলছে, মাঠের ধান ৮০ শতাংশ পাকলে কাটার উপযুক্ত হয়। আর যে সব ক্ষেতের সয়াবিন গাছ হলুদ বর্ণ ধারণ করেছে, সেগুলো তুলে ফেলা যায়। তাই প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে মাঠের ফসল রক্ষার্থে দ্রুত কেটে ফেলার আহ্বান জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। কৃষকরা বলছেন, ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে বৃষ্টিপাত হওয়ায় ক্ষেতে পানি জমে যাচ্ছে। ফলে ফসল কাটতে কিছুটা ভোগান্তি হচ্ছে। এদিকে বাড়ির উঠানে থাকা ধান নিয়েও ভোগান্তির শেষ নেই। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির কারণে ধান শুকানোর কাজ ব্যাহত হচ্ছে। সয়াবিন ক্ষেত সয়াবিন ক্ষেত লক্ষ্মীপুর কৃষি অফিসের তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে জেলায় ৩৫ হাজার ৪১০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে, আর সয়াবিনের আবাদ হয়েছে ৩৮ হাজার হেক্টর জমিতে। ৯ মে পর্যন্ত মাঠ থেকে ধান কাটা হয়েছে প্রায় ৪০ শতাংশ। আর সয়াবিন তোলা হয়েছে প্রায় ২৫ শতাংশ। লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চররমনী মোহন ইউনিয়নের চরআলী হাসান গ্রামের কৃষক হারুনুর রশিদ বাংলানিউজকে বলেন, ৪০ শতাংশ জমিতে সয়াবিন এবং ৮০ শতাংশ জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছি। সয়াবিনগুলো এখনো কাঁচা। ধান কিছুটা কাটা হয়েছে। তাই ক্ষেতের ফসল নিয়ে এখনো শঙ্কায় আছি। সয়াবিন ক্ষেতে পানি জমে আছে, সয়াবিনে পানি লাগলে সেগুলোর রং কালো হয়ে যায়। একই এলাকার কৃষক নুর আলম বলেন, এক একর জমিতে সয়াবিন চাষ করেছি। সেগুলো এখনো ক্ষেতে। বৃষ্টি হওয়ায় ক্ষেতে পানি জমে আছে। পানি নামার কোনো ব্যবস্থা নেই। কৃষক রহিম ঢালী বলেন, বোরো ধানের ক্ষেতে পানি জমে আছে। ধান কাটার শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। তবে হারভেস্টার মেশিনের মাধ্যমে অল্প সময়ের মধ্যে ধান কাটার ব্যবস্থা থাকলেও ক্ষেতে পানি থাকার কারণে প্রতি একরে দুই হাজার টাকা বাড়তি দিয়ে কাটাতে হচ্ছে। ক্ষেত শুকনো থাকলে সময় এবং টাকা কম লাগত। আরেক কৃষক সফিকুল ইসলাম বলেন, আমার ক্ষেতে থাকা ধান এখনো ভালোভাবে পাকেনি। এরই মধ্যে ঝড়ো বাতাসে ধান গাছ ভেঙে জমিতে বিছিয়ে গেছে। এতে পানি এবং পোকা ধরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কাঁচা থাকায় কাটতেও পারছি না। কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, ধান নিয়ে খুব বিপদে আছি। এবার ধানের ফলন ভালো হয়েছে। তবে মাঠের ধান শুকিয়ে গোলায় না তোলা পর্যন্ত আমাদের দুঃচিন্তা কাটবে না। এরই মধ্যে যেগুলো কেটে ঘরে তুলেছি, সেগুলো শুকানো নিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি এবং পর্যাপ্ত রোদ না থাকায় ধান গোলায় তুলতে পারছি না। কৃষক রফিকুল ঢালী বলেন, এবার ধানের ফলন ভালো। দামও ভালো। ক্ষেত থেকে ৭৭০ টাকা মণ ধরে কাঁচা ধান বিক্রি করা যায়। আর শুকনো ধানের মণ ৮০০ টাকা। তাই ফলন ভালো হলেও ক্ষেতের ধান ঘরে না তোলা পর্যন্ত আতঙ্ক থেকেই যায়। লক্ষ্মীপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মো. জাকির হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, এবার ধান এবং সয়াবিনের ফলন ভালো হয়েছে। তবে ঘূর্ণিঝড় অশনিসহ অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ক্ষেতে থাকা ফসল নিয়ে কৃষকরা দুঃচিন্তায় রয়েছেন। তাই আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি, দ্রুত ফসল ঘরে তুলতে। তিনি বলেন, ধান কাটার শ্রমিক সংকট থাকলেও হারভেস্টার মেশিনের মাধ্যমে অল্প সময়ের মধ্যে অধিক জমির ধান কাটা সম্ভব। তবে ক্ষেতে বৃষ্টির পানি জমে থাকার কারণে মেশিনের সাহায্যে ধান কাটতে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে। |