শিরোনাম: |
গণকমিশনের কথিত শ্বেতপত্র প্রত্যাখ্যান: ১৮ মে ২০২২ এর সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবী
|
বহুল বিতর্কিত সংগঠন ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি (ঘাদানিক) এবং জাতীয় সংসদের আদিবাসী ও সংখ্যালঘু বিষয়ক ককাসের নিজস্ব উদ্যোগে গঠিত ‘বাংলাদেশে মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস তদন্তে ‘গণকমিশন’ নামে কথিত কমিশন কর্তৃক প্রকাশিত শে^তপত্রকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে এর নেপথ্যে থাকা ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজে বের করে সম্প্রীতি নষ্টের অভিযোগে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন আলেম-উলামা, ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ, ইসলামি চিন্তাবিদ ও ধর্মপ্রাণ শান্তিপ্রিয় নাগরিকবৃন্দ। বুধবার (১৮ মে) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ইসলামিক কালচারাল ফোরাম বাংলাদেশের আয়োজনে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় এ দাবী জানানো হয়। শ্বেতপত্রে কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা, কওমি শিক্ষার সলেবাস, আলিয়া ও জেনারেল শিক্ষা ব্যবস্থায় ইসলামি বিষয়ের অন্তর্ভুক্তি, ইসলামি রাজনৈতিক দল, ১০০০ হাজার কওমি মাদ্রাসাকে চিহ্নিত করণ, আলেমদের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত সমাজসেবামূলক বিভিন্ন সংগঠন, সংস্থা, মাসিক ইসলামি পত্রিকা ও ওয়াজ মাহফিল নিয়ে উদ্দেশ্যপ্রসূত, মনগড়া, অসংলগ্ন মতামতের জন্য ক্ষমা চেয়ে শে^তপত্র প্রত্যাহারের আহবান জানানো হয়। ইসলামিক কালচারাল ফোরাম বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মাওলানা মাহমুদুল হাসান মমতাজীর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারী জেনারেল মাওলানা মো. নাজমুল হকের পরিচালনায় মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন । ,হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমীর দেওনার পীর অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান , মাওলানা ইয়াহইয়া মাহমুদ, দ্বীনিয়া বোর্ডের মহাসচিব মুফতি মোহাম্মদ আলী, জামিয়াতুল উলুমুল ইসলামিয়া ঢাকার মুহতামিম মুফতি মাহমুদুল হাসান, কাসেমী, মুফতি আরিফ বিল্লাহ, মুফতি ইমাদুদ্দীন, মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক, ফোরামের কেন্দ্রীয় সদস্য মাওলানা আবু জাফর কাসেমী, মাওলানা মানসূরুল হক, মাওলানা আবুল কাসেম আশরাফী, মুফতি আব্দর রহিম কাসেমী, মাওলানা রিয়াদুল ইসলাম, মুফতি আব্দুর রাজ্জাক কাসেমী, মুফতি ওয়াহিদুল আলম, হাফেজ মাওলানা মোতাহার উদ্দিন, মাওলানা শফিকুল ইসলাম ও আলহাজ ফজলুল হক, হাফেজ মাওলানা গোলাম মস্তফা, শায়েখ উসমান গনি, মাওলানা সাদ সাইফুল্লাহ মাদানী, মাওলানা সৈয়দ শামসুল হুদা , মাওলানা আব্দুল্লাহ ফিরোজী, মাওলানা ইব্রাহীম বিন খলীল প্রমুখ । সভায় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মাওলানা নাজমুল হক সেক্রেটারী জেনারেল । মতবিনিময় সভায় বক্তারা বলেন, ১১৬ জন বরেণ্য আলেমের বিরুদ্ধে যে ধৃষ্টতাপূর্ণ আচরণ করা হয়েছে, তাতে দেশবাসী স্তম্ভিত। এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা বা শুধু আলেমদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র নয়। বরং দেশ ও ইসলামের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। উল্লেখিত আলেমগণ দেশ- বিদেশে ইসলামের খেদমত করে আসছেন। তাদের প্রতি দেশের মানুষের অকৃত্রিম ভালোবাসা, শ্রদ্ধাবোধ রয়েছে। কিন্তু শ্বেতপত্রে সম্মানিত শীর্ষস্থানীয় আলেম-ওলামাদের সম্পর্কে অত্যন্ত আপত্তিকর, অসম্মানজনক ভাষা ব্যবহার করে তাদের হেয় করা হয়েছে। এ ধৃষ্টতা অমার্জনীয়। বক্তারা বলেন, কওমি মাদ্রাসা প্রসঙ্গে তাদের করা প্রত্যেকটি অভিযোগ মিথ্যা, মিথ্যা এবং মিথ্যা। দেশের আনাচে-কানাচে অবস্থিত কওমি মাদ্রাসাগুলো সারাক্ষণ উন্মুক্ত, এখানে যে কেউ, যেকোনো সময় যেয়ে মাদ্রাসার পাঠ্যক্রম, শিক্ষার পরিবেশ, আয়-ব্যয় সম্পর্কে জানতে পারেন। এই চিরন্তন সত্য থেকে মুখ লুকিয়ে শান্তিবিনাশী কথিত তদন্তকারীরা কোথা থেকে এমন উদ্ভট, বানোয়াট অভিযোগ উত্থাপন করল, তা বোধগম্য নয়। এ কারণে, তদন্তকারীদের সত্যিকারের পরিচয়, তদন্তের উদ্দেশ্য, মিথ্যাচারের কারণ উদঘাটনে প্রশাসনের প্রতি আমরা দাবি জানাই। বক্তারা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, এই কমিশন শুধু কওমি মাদ্রাসা নয়, দেশের সব ধরনের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও ধর্ম প্রচারের মাধ্যমকে তারা টার্গেট করেছে। তাদের এই অনুসন্ধানে এটা স্পষ্ট, কথিত শ্বেতপত্রে ভয়ঙ্করভাবে লক্ষ বানানো হয়েছে জনসম্পৃক্ত আলেমদের।ম গণকমিশনের শ্বেতপত্র প্রকাশ ও তদন্ত প্রক্রিয়া বাংলাদেশের সংবিধানের ধারা মতে আইন বিরুদ্ধ কাজ। যারা এমন আইন বিরুদ্ধ কাজ করেছে, তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানানোর পাশাপাশি তাদেরকে কারা অর্থায়ন করে, কোন স্বার্থে কোন শক্তি তাদের পোষে, এই সংগঠনের আয়-ব্যয়ের হিসাব সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেওয়ারও দাবী জানানো হয় মতবিনমিয় সভা থেকে। সভা থেকে দাবী করা হয়, যারা শ্বেতপত্র প্রকাশের মাধ্যমে আলেমদের সম্মানহানি করেছে, কওমি মাদ্রাসাগুলোকে ভিন্নভাবে দেশবাসীর সামনে উপস্থাপন করেছে, সেবামূলক সংগঠনগুলোর কার্যক্রমকে অবজ্ঞা ও প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করা হয়েছে। তাই তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। মতবিনিময় সভায় আলেম-উলামদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও কারাবন্দী আলেমদের অবিলম্বে মুক্তির পাশাপাশি সারাদেশে ওয়াজ মাহফিলগুলোকে সব ধরনের প্রশাসনিক বিধি-নিষেধের আওতামুক্ত রাখা এবং সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহ, নবী মুহাম্মদ (সা.), পবিত্র কোরআন, রাসুলের হাদিস, ধর্মীয় বিধান, ইসলামি শরিয়ত এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব ও নেতাদের বিরুদ্ধে মানহানিকর উক্তি, শব্দের ব্যবহার আইন করে নিষিদ্ধ করা।
|