শিরোনাম: |
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সমাজবিজ্ঞানী, একুশে পদকপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ, বর্ষিয়াণ লেখক, প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. অনুপম সেনের ৮৩ তম জন্মদিন আজ
প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. অনুপম সেনের ৮৩ তম জন্মদিন আজ
|
![]() উল্লেখ্য,
চট্টগ্রাম মহানগরীতে জন্মগ্রহণকারী প্রফেসর সেনের পিতা-বিরেন্দ্রলাল সেন ও
মাতা-স্নেহলতা সেন। পিতা বিরেন্দ্রলাল সেন ইংরেজিতে এমএ ও বিএল ডিগ্রি
প্রাপ্ত ছিলেন এবং চট্টগ্রাম কোর্টে ওকালতি পেশায় নিযুক্ত ছিলেন। মাতা
স্নেহলতা সেন বেথুন স্কুল থেকে তাঁর পাঠ সম্পন্ন করেন। প্রফেসর
সেন চট্টগ্রাম মহানগরীতে জন্মগ্রহণ করলেও তাঁর গ্রামের বাড়ি পটিয়া উপজেলার
ধলঘাটে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬২ সালে সমাজতত্ত্বে স্নাতক ও
১৯৬৩ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। কানাডার ম্যাকমাস্টার
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ১৯৭৪ সালে সমাজতত্ত্বে এমএ ডিগ্রি এবং ১৯৭৯ সালে
এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। বিশ্বের
অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান রাউটলেজ এন্ড কেগানপল থেকে তাঁর ‘দি
স্টেট, ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজেশন এন্ড ক্লাশ ফরমেশন ইন ইন্ডিয়া’ গ্রন্থটি ১৯৮২
সালে প্রকাশিত হওয়ার পর উত্তর আমেরিকার বহু বিশ্ববিদ্যালয় যেমন, কানাডার
টরেন্টো বিশ্ববিদ্যালয়, আমেরিকার ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয় ও নিউইয়র্ক
বিশ্ববিদ্যালয়; সুইডেনের টিনবারজেন বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৬৯ সালে অর্থনীতিতে ১ম
নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত টিনবারজেনের নামে এই বিশ্ববিদ্যালয়), ভারতের দিল্লি
বিশ্ববিদ্যালয়, জহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয় ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়-সহ
বিশ্বের অনেক খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান, উন্নয়ন অর্থনীতি
(ডেভেলপমেন্ট ইকোনমিক্স) ও রাষ্ট্র্রবিজ্ঞানের পাঠ্যতালিকায় গ্রন্থটি
অন্তর্ভুক্ত হয়। প্রফেসর
সেন ১৯৬৫ সালে পূর্ব পাকিস্তান প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে
(বর্তমান বুয়েটে) সমাজতত্ত্ব ও রাজনীতি বিজ্ঞান বিষয়ের প্রভাষক হিসেবে
যোগদান করে কর্মজীবনে প্রবেশ করেন। ১৯৬৬ সালে তিনি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়
থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগে যোগদান করেন। ১৯৬৯ সালে
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজতত্ত্ব বিভাগে অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর (তখন
সিনিয়র লেকচারার) হিসেবে যোগ দেন। ১৯৭১
সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির
সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কে
যুক্ত করে বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে ‘এবারের সংগ্রাম’ এই নামে ১৭ই
মার্চ থেকে লালদিঘির ময়দানে সপ্তাহব্যাপী এক কর্মসূচি পালন করেন। এই
অনুষ্ঠানে বাইরে থেকে যুক্ত ছিলেন বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক ও সংস্কৃতি কর্মী
ডা. কামাল এ. খান, বিশিষ্ট নাট্যকার মমতাজ উদ্দীন, কবি-অধ্যাপক মোহাম্মদ
রফিক প্রমুখ। এ সময় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ছিলেন
পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. শামসুল হক, যিনি
স্বাধীনতাত্তোরকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হয়েছিলেন। ড.
আনিসুজ্জামান ও বাংলা বিভাগের তৎকালীন সহকারী অধ্যাপক আবু জাফরের
সহযোগিতাও বিশেষভাবে উল্লেখ্য।১৯৭৩ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ১৯৭৯ সালের
এপ্রিল পর্যন্ত তিনি কানাডার ম্যাকমাস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা সহায়ক ও
টিউটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৯ সালে দেশে ফিরে চট্টগ্রাম
বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগে পুনরায় যোগদান করেন। প্রফেসর
সেন ‘দি স্টেট, ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজেশন এন্ড ক্লাশ ফরমেশন ইন ইন্ডিয়া’ ছাড়াও
অনেকগুলো গ্রন্থের রচিয়তা। এক্ষেত্রে তাঁর দি পলিটিক্যাল এলিটস অফ
পাকিস্তান এন্ড আদার সোশিওলজিক্যাল এসেস (১৯৮২, অমর প্রকাশন, দিল্লি),
বাংলাদেশ: রাষ্ট্র ও সমাজ, সামাজিক অর্থনীতির স্বরূপ (১৯৮৮), বাংলাদেশ ও
বাঙালি রেনেসাঁস: স্বাধীনতা চিন্তা ও আত্মানুসন্ধান (২০০২), বিলসিত
শব্দগুচ্ছ (২০০২), ব্যক্তি ও রাষ্ট্র: সমাজ-বিন্যাস ও সমাজ-দর্শনের আলোকে
(২০০৭), কবি শশাঙ্কমোহন সেন (২০০৭), সমাজ, সংস্কৃতি, সাহিত্য: নানা কথা,
নানা ভাবনা, নানা অর্ঘ্য (২০০৭), সুন্দরের বিচার সভাতে (২০০৮), আদি-অন্ত
বাঙালি, বাঙালি সত্তার ভূত-ভবিষ্যত (২০১১), বাংলাদেশ: ভাবাদর্শগত ভিত্তি ও
মুক্তির স্বপ্ন (২০১১), জীবনের পথে প্রান্তরে (২০১১), বাঙালি-মনন, বাঙালি
সংস্কৃতি, সাতটি বক্তৃতা (২০১৪), ইতিহাসে অবিনশ্বর (২০১৬) ও বিচিত ভাবনা
(২০১৭) প্রভৃতি গ্রন্থ উল্লেখযোগ্য। তাঁর ‘দি স্টেট, ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজেশন
এন্ড ক্লাশ ফরমেশন ইন ইন্ডিয়া’ গ্রন্থটি ১৯৮২ সালে প্রকাশের প্রায় সাড়ে তিন
দশক পরে রাউটলেজ আবার প্রকাশ করেছে ২০১৭ সালে, ‘রাউটলেজ লাইব্রেরি এডিশন:
ব্রিটিশ ইন ইন্ডিয়া’ শিরোনামে। |