বুধবার ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১২ আশ্বিন ১৪৩০
শিরোনাম: উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান রাষ্ট্রপতির       জিটি২ প্রো ব্যবহারহারীদের জন্য রিয়েলমি নিয়ে এলো অ্যান্ড্রয়েড ১৪ ভিত্তিক রিয়েলমি ইউআই ৫.০ আর্লি অ্যাক্সেস       অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব এর সাথে আইসিএসবি-এর প্রতিনিধি দলের সৌজন্য সাক্ষাৎ       ১৯ তম এশিয়ান গেমস, দাবা ইভেন্ট       উত্পাদনশীলতা বাড়াতে ২ হাজার জলবায়ু-প্রভাবিত চাষীদের সাহায্য করবে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ও সিএনআরএস       স্মার্টফোন রপ্তানিতে বিশ্ববাজারে শীর্ষস্থান ধরে রাখল স্যামসাং       মার্কিন প্রতিনিধিদল নির্বাচন বিষয়ে জানতে বাংলাদেশে আসছে       
প্রিয় ফরম্যাটে ফিরে বিজয় বুঝিয়ে দিলেন, ওয়ানডেতেই তিনি সেরা
প্রকাশ: শুক্রবার, ৫ আগস্ট, ২০২২, ৫:০৫ পিএম |

ওয়ানডে ফরম্যাটটা বেশ প্রিয় বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের জন্য। এনামুল হক বিজয়ের কাছে? তার কাছে সম্ভবত সবচেয়ে বেশি প্রিয়। এই ফরম্যাটেই নিজের জাত চেনাতে ভালোবাসেন এই ওপেনার। সেটা আরো একবার প্রমাণ হলো। তিন বছরেরও বেশি সময় পর ওয়ানডেতে ফিরেই দুর্দান্ত এক হাফ সেঞ্চুরি করে ফেলেছেন তিনি। ৬২ বলে ৭৩ রান করে আউট হলেন তিনি।

একের পর এক নতুন নতুন ক্রিকেটারের আগমণ ঘটছে বাংলাদেশের ক্রিকেটে। নতুনদের ভিড়ে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলে পুরনোদের জায়গা কোথায়? তার ওপর, প্রায় বিস্মৃতির অন্তরালে চলে যাওয়া ক্রিকেটারদের তো পূনরায় দলে ফিরে আসার ঘটনা বলা যায় বিরল।

কিন্তু পারফরম্যান্স করে কোনো নির্দিষ্ট ক্রিকেটার যখন নিজেই জাতীয় দলে ফেরার দাবিটা জোরালো করে তোলেন, তখন নির্বাচকরাও বাধ্য হন তাকে জায়গা করে দিতে। এনামুল হক বিজয় নিজেই সেই পথটা তৈরি করে নিয়েছেন।

ওপেনার হিসেবে দারুণ সম্ভাবনা নিয়েই ২০১২ সালের ৩০ নভেম্বর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জাতীয় দলের হয়ে অভিষেক ঘটেছিল বিজয়ের। অভিষেকের দ্বিতীয় ম্যাচেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খুলনায় ১২০ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে বিজয় জানান দিয়েছিলেন, হারিয়ে যেতে আসেননি। এরপর তার পথচলা চলছিল চড়াই-উতরাই পেরিয়েই।

২০১৪ সালে ঢাকায় পাকিস্তানের বিপক্ষে উপহার দেন দ্বিতীয় সেঞ্চুরি (১০০) এবং একই বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে গিয়ে সেন্ট জর্জে আরও একটি সেঞ্চুরি (১০৯) উপহার দেন তিনি।

বিজয়ের ছন্দপতনটা ঘটে ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে। নিউজিল্যান্ডের নেলসনে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে খেলতে গিয়ে ফিল্ডিংয়ের সময় কাঁধে ব্যথা পান। সেই যে দল থেকে ছিটকে গেলেন, আর ফিরতে পারলেন না। ২০১৮ সালে পূনরায় দলে ফিরলেন বটে; কিন্তু তার ব্যাটিংয়ে সেই ধার আর ছিল না।

২০১৮ এবং ২০১৯ সালে মোট ৮টি ম্যাচ খেলেছেন। একটি হাফ সেঞ্চুরিও করতে পারেননি। সর্বোচ্চ ৩৫ রান। দুই ম্যাচে ডাক মেরেছেন। যে কারণে বাদ পড়ে যান দল থেকে। বিজয়ের শেষটা দেখে ফেলেছিলেন সবাই। জাতীয় দলে ফেরা নিয়ে তার নিজেরই বিশ্বাস ছিল কি না সন্দেহ।

কিন্তু জাতীয় দলের নির্বাচক, ক্রিকেট ভক্ত-সমর্থক - সবার হিসাব-নিকাশ পাল্টে দেন বিজয় নিজেই। সর্বশেষ ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে ১৫ ম্যাচে ১১৩৮ রানের ইতিহাস গড়েন এনামুল হক বিজয়। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে কোনো নির্দিষ্ট ক্লাবের হয়ে এক টুর্নামেন্টে এত রান এর আগে আর কেউ কখনো করেনি।

কোনো নির্দিষ্ট লিস্ট ‘এ’ টুর্নামেন্ট কিংবা লিগে এর আগে সর্বোচ্চ ৯৭১ রানের রেকর্ড ছিল অস্ট্রেলিয়ার টম মুডির। ১৯৯১ সালে এই রেকর্ড গড়েছিলেন তিনি।

১১৩৮ রান চাট্টিখানি কথা নয়। জাতীয় দলে বিজয়কে ফেরানো অপরিহার্য করে তোলেন তিনি নিজেই। সুতরাং, নির্বাচকরাও বাধ্য হলেন বিজয়কে জাতীয় দলে জায়গা করে দিতে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে দলে সুযোগ মিললো এই মারকুটে ব্যাটারের।

কিন্তু পরিহাসের বিষয় হলো, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কর্মকর্তারা কিংবা টিম ম্যানেজমেন্ট ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে বিজয়কে খেলালেন টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টিতে। এই দুই ফরম্যাটে ওয়ানডেতের চেয়ে অনভ্যস্ত বিজয়। ফল যা হওয়ার তাই হলো- বিজয় পারলেন না। সমালোচনার ঝড় উঠলো, ‘ঘরোয়া ক্রিকেটে বাঘ, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এলে বিড়াল হয়ে যান বিজয়রা।’

কিন্তু টিম ম্যানেজমেন্ট বিজয়ের প্রিয় ফরম্যাট ওয়ানডেতে তাকে যাছাই করে দেখলেন না একটি ম্যাচেও। এমনকি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডেতে প্রথম দুই ম্যাচ জয়ে সিরিজ নিশ্চিত করে ফেলার পর যখন শেষ ম্যাচটা নিয়ম রক্ষার ম্যাচে পরিণত হয়েছিল, তখনও বিজয়কে সুযোগ দেয়া হয়নি।

আশ্চর্য! যে ওয়ানডেতেই সবচেয়ে বেশি স্বচ্ছন্দ, ওয়ানডেতেই প্রিমিয়ার লিগে সবচেয়ে বেশি রান করে বিশ্ব রেকর্ড গড়েছেন, তাকে কি না টেস্ট আর টি-টোয়েন্টিতে পরখ করেই বলে দেয়া হলো ‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে’ পারে না! ওয়ানডেতে একবারও সুযোগ দেয়া হবে না!

জিম্বাবুয়ে সফরে বিজয়ের সামনে সুযোগ এলো। তাও অরেক কাঠখড় পোড়ানোর পর। টি-টোয়েন্টিতে যথারীতি ব্যর্থতার পরিচয় দিলেন। আর ওয়ানডেতে সুযোগ পেলেন সাকিব আল হাসান না থাকার কারণে। তারওপর নাজমুল হোসেন শান্ত টানা ব্যর্থতার পরিচয় দেয়ার ফলে টিম ম্যানেজমেন্টের মনে হলো- এই ফরম্যাটটাতে বিজয়কে একটু সুযোগ দিয়ে দেখা হোক।

সুযোগটা মিলে যেতেই নিজের প্রিয় ফরম্যাটে নিজেকে মেলে ধরলেন বিজয়। খেললেন ৭৩ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস। ৬২ বল মোকাবেলা করে ৬টি বাউন্ডারি এবং ৩টি ছক্কার মার মেরে বিজয় বুঝিয়ে দিলেন, তিনি ওয়ানডেতেই সেরা। এটাই তার প্রিয় ফরম্যাট। টিম ম্যানেজমেন্ট শুধু শুধু তাকে টেস্ট আর টি-টোয়েন্টিতে ট্রাই করে সময়ক্ষেপনই করেছে এবং সে সঙ্গে দলের ক্ষতিও করেছে। বিজয়ে জায়গায় টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টিতে অন্য কাউকে নেয়া হলে সম্ভবত আরো ভালো করতো দল।






আরও খবর


Chief Advisor:
A K M Mozammel Houqe MP
Minister, Ministry of Liberation War Affairs, Government of the People's Republic Bangladesh.
Editor & Publisher: A H M Tarek Chowdhury
Sub-Editor: S N Yousuf

Head Office: Modern Mansion 9th Floor, 53 Motijheel C/A, Dhaka-1223
News Room: +8802-9573171, 01677-219880, 01859-506614
E-mail :71sang[email protected], [email protected], Web : www.71sangbad.com