শিরোনাম: |
শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা
ন্যয্যমুল্য না পাওয়ার শংকায় কৃষকরা
রমেশ সরকার,শেরপুর প্রতিনিধি :
|
![]() উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে , এ বছর চলতি রোপা আমন মৌসুমে উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও পৌর এলাকায় ২২ হাজার ৮শত ১০হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও অর্জিত হয়েছে ২২হাজার ৮শত ২৫হেক্টর। চাউল ফলন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৮০০০ মেট্রিকটন আর সম্ভাব্য উৎপাদন ধরা হয়েছে ৭৫০০০মেট্রিকটন। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি। এবার উপজেলার বিভিন্ন মাঠে কাটারীভোগ, স্বর্ণা ৫, ব্রিধান ৪৯, ৫১, ৯০, দেশী ও ইন্ডিয়ান পাইজাম, বিনা ১৭, ব্রিধান ৮৭, ব্রিধান ৩৪, স্থানীয় তুলশীমালা (আতপ) সহ উন্নত ফলনশীল বিভিন্ন জাতের ধান চাষ করেছেন কৃষকরা। যা এ উপজেলার চালের চাহিদা পূরণ করেও বাইরে রপ্তানী করতে পারবে। সরকারের কৃষি অফিসের ব্যাপক তৎপরতা, কৃষকের অক্লান্ত পরিশ্রম, অনুকূল আবহাওয়া, সার, কীটনাশকসহ বাজারে কৃষি উপকরণের পর্যাপ্ত সরবরাহ ও সেচের জন্য প্রয়োজনীয় বিদ্যুতের ব্যবস্থাপনা এবং আবাদ উপযোগী পরিবেশ ইত্যাদি বিবেচনায় চলতি মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখছেন কৃষি বিভাগ সহ সংশ্লিষ্টরা। জানা গেছে, উপজেলার সর্বত্র শেষ সময়ে কৃষক তাদের ক্ষেতের ধান কাটার অপেক্ষায় আছে। নতুন ধান ঘরে উঠার খুশিতে কৃষক পরিবারসহ ব্যবসায়ীরা। ক্ষেতের মধ্যে পোতা বাঁশের কঞ্চি ও গাছের ডালের ওপর ময়না, ফিঙ্গে, শালিক, দোয়েলসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি সুযোগ বুঝে ধান ক্ষেতের ক্ষতিকারক পোকা ওইসব খেয়ে ফেলছে। কখন নতুন ধান ঘরে তুলবেন এজন্য অধীর আগ্রহে কৃষাণ-কৃষাণীরা। তাই প্রতিটি বাড়ি বাড়ি চলছে নতুন ধান ঘরে তোলার নবান্ন উৎসবের প্রস্তুতি। ![]() উপজেলার আন্ধারুপাড়া গ্রামের সাংবাদিক ও কৃষক এম সুরুজ্জামান, ময়েজ উদ্দিন, সাইফুল ইসলাম, নন্নী পুর্বপাড়া গ্রামের কৃষক আহেজ উদ্দিন, হাতিপাগাড় গ্রামের আল আমিনসহ কয়েকজন কৃষক বলেন, চলতি মৌসুমের শুরু থেকেই বুক ভরা আশা নিয়ে দিনভর মাথার ঘাম পায়ে ফেলে মাঠে কাজ করেছি। এই এলাকার কৃষকরা বিপুল পরিমাণ ফসল উৎপাদন করে অত্র অঞ্চলের খাদ্যের চাহিদা পূরণ করেও ৭০/৭৫ ভাগ ধান দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করে থাকে। কৃষকরা আরো বলেন, এবছর তেল, সার, কীটনাশক, সেচসহ কৃষি সংশ্লিষ্ট উপকরণের মুল্য বৃদ্ধি ও খড়ার জন্য ফসল ফলাতে কৃষকদের অতিরিক্ত অর্থ ব্যায় করতে হয়েছে। ফলে গতবারের চেয়ে এবছর ধানচাষে উৎপাদন খরচ বাড়ার কারনে বাজারে ধানের ন্যায্য দাম না পাওয়ার আশংকা করছেন কৃষকরা। ধানের ভালো দাম না পেলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে কৃষক, পরবর্তীতে ধান চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। অপরদিকে- ভারত সীমান্তবর্তী নালিতাবাড়ী উপজেলার পাহাড়ী এলাকার কৃষকদের প্রায় ৮০০ একর আধাপাকা ধান সম্প্রতি ভারতীয় বন্য হাতি খেয়ে ও পায়ে মাড়িয়ে চাষীদের অপুরনীয় ক্ষতি করেছে। এনিয়ে স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় এর আগে অনেক সংবাদ প্রকাশ হয়। এব্যাপারে নালিতাবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আলমগীর কবির এ প্রতিনিধিকে বলেন, সরকারী ভাবে চাষীদের মাঝে বিভিন্ন প্রনোদনা দেওয়া হচ্ছে। ধানের বাম্পার ফলন ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়ে আমরা মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন ধরনের কাজ করে যাচ্ছি। কৃষকরা যাতে লাভবান হতে পারেন এবং কোনো প্রকার সমস্যায় না পড়েন এজন্য আমরা সার্বক্ষণিক নজর রাখছি। আশা করছি গত মৌসুমের চেয়ে এবার আমন ধানের বাম্পার ফলন হবে। কৃষকরাও ধানের ন্যায্য দাম পাবেন।
|