শিরোনাম: |
অধূমপায়ীদের সুরক্ষায় ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত এলাকা- ডিএসএ’ একটা বড় বাধা গবেষণায় ডিএসএ বাতিলের সুপারিশ
|
![]() ডিএসএ বিষয়ক প্রজ্ঞার উপস্থাপনায় বলা হয়, ১১৮টি আবাসিক হোটেলের মধ্যে মাত্র ১৮টিতে ডিএসএ পাওয়া গেছে। ৭টি হোটেলের ডিএসএ ধূমপানমুক্ত এলাকা থেকে আলাদা নয় এবং ৭টিতে সেবা প্রদানের জন্য কর্মীদের ডিএসএ অতিক্রম করতে হয়। উল্লেখ্য, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত এলাকাকে (ডিএসএ) ধূমপানমুক্ত এলাকা থেকে পৃথক রাখার বিধান রয়েছে। আইনি বাধ্যবাধকতা থাকলেও ১৭টি হোটেলের ডিএসএ’তে সতর্কতামূলক নোটিশ প্রদর্শন করা হয়নি। গবেষণায় ৫৩টি ট্রেনের ২১টিতে ডিএসএ পাওয়া গেছে, যারমধ্যে ৭টিতে বিভিন্ন খাবার ও পানীয় বিক্রি হওয়ায় অধূমপায়ীয়দের পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হওয়ার সুযোগ রয়েছে। ডিএসএ থাকা ২১টি ট্রেনের কোনোটিতেই ধূমপানের জন্য নির্ধারিত এলাকা বা ডিএসএ সংক্রান্ত কোনো নোটিশ দেখা যায়নি। অর্থাৎ ১টি ট্রেনেও পরিপূর্ণভাবে আইন মেনে ডিএসএ রাখা হয়নি। ৩৫৫টি রেস্টুরেন্ট এর মধ্যে মাত্র ২টিতে ডিএসএ পাওয়া গেছে এবং কোনটিতেই এ সংক্রান্ত আইন পরিপূর্ণভাবে মানা হয়নি।। গবেষণার উপসংহারে বলা হয়েছে, ধূমপানের জন্য নির্ধারিত এলাকা (ডিএসএ) অধূমপায়ীদের পরোক্ষ ধূমপানের ছোবল থেকে সুরক্ষা প্রদান করতে পারে না এবং এই বিধান চালু রেখে ধূমপানমুক্ত আইন বা নীতির সুফল পাওয়া সম্ভব নয়। সুতরাং শতভাগ ধূমপানমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে ডিএসএ বাতিল করা প্রয়োজন। ভয়েস এর উপস্থাপনায় জানানো হয়, তামাক কোম্পানিগুলো নগদ টাকা ও সরঞ্জামাদি প্রদানের মাধ্যমে রেস্টুরেন্টগুলোতে ডিএসএ স্থাপনে উৎসাহিত করে থাকে। বিদ্যমান আইনের দুর্বলতার কারণেই কোম্পানিগুলো এই কূটকৌশল অবলম্বনের সুযোগ পাচ্ছে। অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্বস্বাস্থ্য অনুবিভাগ) কাজী জেবুন্নেছা বেগম বলেন, “আশাকরি ডিএসএ বাতিলসহ তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী দ্রুত পাস হবে। এবং সেটা হলেই তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনের পথ সুগম হবে।” সিটিএফকে’র প্রিন্সিপাল কনসালটেন্ট, সাউথ এশিয়া কমিউনিকেশনস জসপ্রীত কাউর পাল বলেন, “পরিপূর্ণভাবে আইন প্রতিপালন করে এমন একটিও ডিএসএ গবেষণায় পাওয়া যায়নি। কাজেই ধূমপানমুক্ত স্থানে ডিএসএ বাস্তবায়ন যোগ্য নয়। পরোক্ষ ধুমপান থেকে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিশ্বের ৬৭টি দেশের ন্যায় বাংলাদেশকেও দ্রুততম সময়ের মধ্যে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের মাধ্যমে ডিএসএ ব্যবস্থা বিলুপ্ত করতে হবে।” জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ড. নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, শতভাগ ধূমপানমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে চাইলে ডিএসএ বিধান অবশ্যই বাতিল করতে হবে। এটি তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনের অন্তরায়। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল এর সমন্বয়কারী (অতিরিক্ত সচিব) হোসেন আলী খোন্দকার, সিটিএফকে বাংলদেশ লিড পলিসি অ্যাডভাইজার মো. মোস্তাফিজুর রহমান এবং তামাকবিরোধী সংগঠনসমূহের প্রতিনিধিবৃন্দ। উল্লেখ্য, পরোক্ষ ধূমপান মৃত্যু ঘটায়। বিশ্বে বছরে ১২ লক্ষ মানুষ পরোক্ষ ধূমপানের কারণে অকালে মৃত্যুবরণ করেন। গ্লোব্যাল অ্যাডাল্ট টোব্যাকো সার্ভে (গ্যাটস) ২০১৭ অনুযায়ী, বাংলাদেশে আচ্ছাদিত কর্মস্থলে কাজ করেন এমন প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠির ৪২.৭ শতাংশ (৮১ লক্ষ) এবং প্রায় ২ কোটি ৫০ লক্ষ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ (২৪ শতাংশ) গণপরিবহনে যাতায়াতের সময় পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন। প্রায় ৬১,০০০ শিশু পরোক্ষ ধূমপানজনিত বিভিন্ন অসুখে ভোগে। তামাক ব্যবহারজনিত রোগে দেশে বছরে ১ লক্ষ ৬১ হাজার মানুষ মৃত্যু বরণ করেন। বর্তমানে থাইল্যান্ড, নেপাল, তুরস্কসহ বিশ্বের ৬৭টি দেশ পূর্ণাঙ্গ ধূমপানমুক্ত আইন প্রণয়ন (‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান’ রাখার বিধান বাতিলসহ) ও বাস্তবায়ন করছে। |