শিরোনাম: |
“মূর্খ নাকি বুদ্ধিমান” আমি তোকে জাহান্নামে যেতে দেবো না-এম এস মিঠু
|
![]() এই লেখাটা তোকে পড়তেই হবে কারণ তুই বিবেক-বোধ সম্পন্ন মানুষ। তুই কি এতোটাই বোকা মূর্খ! যে, ভালো মন্দের জ্ঞান চিন্তা করার পার্থক্য লোপ পেয়েছে তোমার। হায় আপসোস, কিসের পদ পদবী ক্ষমতার মোহ আমাকে হিংস্র পশু করে দিয়েছে? এই রাজনীতি বড় চেয়ার আমার সত্যিকার সম্মানের বিপরীতে গিয়ে সবখানে আমাকে নির্লজ্জ বেহায়া বানিয়ে দিয়েছে। আমার মৃত্যুর খবর শুনে পরিচিত অথবা অপরিচিত মানুষেরা আলহামদুলিল্লাহ পড়ছে! হায় আপসোস, চোখের পানি ফেলে কান্না করার সময়ে এই জনগণ আমার মৃত্যুতে খুশি হয়ে গিয়েছে। আমার আশেপাশে যারা ঘোরে তারা তো দোয়া করার সঠিক নিয়ম পদ্ধতিও জানে না। ওরা তো পদের নেশায় আমার স্থলাভিষিক্ত হওয়ার কাজেই ব্যতিব্যস্ত হয়ে গেছে। ঐ কবর বড় ভয়ংকর স্থান, আমার মৃতদেহ শরীর সে কুরে কুরে খাবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। শুনেছি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষ মুহাম্মদ সা বলেছেন, কবর ঐ ব্যক্তির জন্য আরাম দায়ক ও শান্তির যায়গা হবে, যার দুনিয়ার জীবনের আমল ও কথাবার্তা কাজকর্ম সত্য পরিচ্ছন্ন ছিলো। আমার কি তা আছে। আমি তোকে জাহান্নামে যেতে দেবো না। কারণ ঐ মহান স্রষ্টার সবচেয়ে সেরা সৃষ্টি তুই ‘মানুষ’। এই সুন্দর অবয়ব আমার রব খুব মায়া করে দরদ মেখে সৃষ্টি করেছেন। জাহান্নামের কীটপতঙ্গ আগুন এই সুন্দর মুখ ঝলসে দেবে তা আমি মেনে নিবো না। কিসের আত্মপ্রতারণা তোমাকে আমাকে ভুলিয়ে দিয়েছে সব। আমাদের পিতা আদম ও মা হাওয়া জান্নাতের পাখি হিসেবে মহান রবের সান্নিধ্যে সূচনা লগ্ন অতিবাহিত করেছেন। আমাদের আগমন ঐ জান্নাত থেকেই। ইবলিশের মতো নিকৃষ্ট সামান্য কোনো সৃষ্টির কাছে সৃষ্টির সেরা আশরাফুল মাখলুকাত, হে মানুষ, কেন তুমি ঐ শয়তানের গোলাম হবে? তোমার বিবেক কি তোমাকে জাগিয়ে তোলে না। কুকুরকে সামান্য খাবার দিয়ে লালন করলে সে প্রভুর কথা শোনে, গরুকে আদর যত্ন করলে সে মালিককে দুধ দেয় আবার হাল চাষ করতেও সহযোগিতা করে। অন্যদিকে এই মানুষকে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সবকিছু দিয়ে লালন-পালন করছেন। অক্সিজেন, আলো, বাতাস, পানি, খাবার প্রয়োজনীয় সব কোনো না কোনো ভাবে ঐ রব তোমাকে আমাকে অবিরাম দিয়ে যাচ্ছেন। শুধুমাত্র এতটুকু স্বীকার করে তার গোলামী মেনে নেওয়ার জন্য এতো সব আয়োজন। এই গোলামের বাচ্চা গোলামকে আল্লাহ সব দিচ্ছেন, তবুও কেন ঐ রবকে একমাত্র ইলাহ বা তার বিধান বা তার দেওয়া নিয়ম-নীতি মানতে তোমার আমার এতো দ্বিধা সংশয়। সামান্য চিন্তার স্বাধীনতা ভোগ করতে গিয়ে তুমি উম্মাদ হয়ে গিয়েছো। অনেকে নিজেকে নাস্তিক হিসেবে দাবি করে, এরা তো পঞ্চাশ শতাংশ এক আল্লাহকে মেনেই নিয়েছে। শুধুমাত্র ঐ মহান রবের পথে চলাকে, নিজের ব্যক্তি জীবনে অনুস্মরণ করার শতাংশটুকু বাকি রেখেছে। কিসের নেশায় মত্ত তুমি? কত সম্পদ, কত অর্থ, কত টাকা, কী বৈভব চাও তুমি? অমুক তমুক অমানুষের কুদর্শ ভঙ্গিতে কেন আমি অনর্থক স্লোগান তোল? কত সুন্দরী নারীর প্রেমে মজে যৌবন ধ্বংস করেছো? পঁচা দুর্গন্ধ নোংড়া অধিক জীবানুযুক্ত জরায়ূ পথে তোমাকে আমাকে প্রবেশ করিয়েছেন ঐ মহান আল্লাহ। আবার দ্বিতীয়বার ঐ নোংড়া পথে দিয়েই তোমাকে আমাকে পৃথিবীতে বাহির করেছেন। এরপর কতটা দুর্বল ছিলাম আমি, ভেবে দেখেছ কি? সামান্য প্রশাব-পায়খানা পরিচ্ছন্নতা ছিলো না আমার। সব অন্যের হাতে করিয়েছেন ঐ মহান আল্লাহ। এভাবেই বছরের ধারাবাহিকতায় ধীরে ধীরে বাল্যকাল পেরিয়ে আমি তরুণ-যুবক শক্তিশালী হয়ে উঠলাম। এবার আমি ভুলে গেলাম সব। এখন আমি কোনো কিছুকে কেয়ার করি না। মন যা চাই, তাই করতে এগিয়ে যায়। সুন্দরী নারীকে দেখলে মাথা নষ্ট হয়ে যায়। ধৈর্য ধরি না বরং সেখানেই আশ্ব মিটিয়ে তাঁকে ধর্ষণ করি। পশু আচরণ দিয়ে পুরো পরিবেশ বিষাক্ত করে তুলি। বেমালুম ভুলে যায় এমনই কোনো এক মায়ের জরায়ূ পথেই আমার জন্ম হয়েছে। এভাবেই সামনে আসে আমার সমাজে পাওয়ারফুল ক্ষমতাধর বিরাট কিছু হওয়ার উম্মাদনা। ক্ষমতাসীন হয়ে এমন কোনো নোংড়া কাজ নেই যা আমার দ্বারা হয় না বরং আমারই মতো প্রতিটি মানুষ আমাকে চরম ভাবে ভয় পায় বা সমীহ করুক এটাই প্রত্যাশা করি। হায় হায় কতটা বোকা নির্লজ্জ আমি। প্রকৃত পক্ষে এই জনগণ আমাকে বিরাট কিছু মনে করে নাকি প্রচন্ড ঘৃণা করে। চোখ বুজে একটু চিন্তা করুন তো, কিসের পাগলামী আমাকে আমার গন্তব্য ভুলিয়ে দিয়েছে? যে জান্নাত থেকে আমার পথ চলা শুরু হয়েছিল, সেই জান্নাতের পথ ভুলে আমি অন্য কোন পথ ধরে হাঠছি? বিবেক তুমি কি ঘুমিয়ে-ই সময় পার করে দিবে? অন্যায় জুলুম মিথ্যার সাথে সঙ্গ দিয়ে অল্প ক’বছরের এই জীবন এভাবেই শেষ হবে! সত্যবাদী, বিপ্লবী, আদর্শবান কী হবে না তুমি। আশ্চর্য, আমি তো মানুষ। আমার তো একটা জ্ঞান বুদ্ধি ভালো মন্দ বুঝার শক্তি ঐ রব সৃষ্টিগত ভাবেই দিয়ে রেখেছেন। তবুও কিসের অহংকার হিংসায় আমি আমার ভিতরের মানবতাবোধকে নিভিয়ে রেখেছি। বিপক্ষ গোষ্ঠীর নাম শুনলেই কেন আমার অন্তর জ্বলে ওঠে? বিরোধী মত পথের কথা শুনলেই কেন তাঁকে দমন করার জন্য আমি উঠে পড়ে লেগে যায়? আমি কি কোনো পশু প্রাণী বা হিংস্র কোনো জানোয়ার হায়েনা? সদা মিথ্যা কথা বলা কেন আমার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। সহজ সুন্দর স্বাবলীল ভালোবাসার মায়াজাল তৈরি করা আমার কাজ হোক। হিংসার চাদর ধরে টানাটানি করে গোমরাহীর চরিত্র গঠন আমার উদ্দেশ্য যেন না হয়। আমরা সকলে ফিরে যাবো জান্নাতে। মানুষ হিসেবে আমাদের পথ একটাই। কিছুটা পথচূত্য হয়েছো বলে মনে হলে, ফিরে এসো। আবার সোজা সরল সঠিক রাস্তা চিনে নিয়ে এগিয়ে যাও। বন্ধু এ পথের শেষ বিন্দু যদি তোমার আমার জান্নাতের হয় তবেই তুমি সত্যিকার মানুষ। |