শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ৬ বৈশাখ ১৪৩১
শিরোনাম: সুবিধাবঞ্চিত পথশিশুদের মাঝে ইফতার বিতরণ করল উইনসাম স্মাইল ফাউন্ডেশন       অসংক্রামক রোগে মৃত্যু বাড়ছে, মোকাবেলায় বাড়ছে না বরাদ্দ       ওয়ালটন ফ্রিজ কিনে ৩৩তম মিলিয়নিয়ার হলেন রাজশাহীর মাদ্রাসা শিক্ষক আমিনুল       জাপানের বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড সনি’র জেনুইন পণ্য এখন চট্টগ্রামে       এয়ার টিকিট ফ্রি পাওয়ার সুযোগ       ৪৪তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ১১৭৩২       দু'দেশের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে গুরুত্বারোপ      
বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ
প্রকাশ: রোববার, ১২ মার্চ, ২০২৩, ৭:৫১ পিএম |

ইতিহাস গড়তে বাংলাদেশের লক্ষ্য ছিল মাত্র ১১৮ রান। তবে পাওয়ার প্লেতে দুই ওপেনারকে হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়েছিল টাইগাররা। তবে আগের ম্যাচে জয়ের নায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর অনবদ্য ইনিংসে ভর করে ৪ উইকেটের জয় তুলে নিয়েছে সাকিব আল হাসানের দল। এতে বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে ইতিহাস গড়ে প্রথম কোনো সিরিজ জিতল লাল সবুজের বাংলাদেশ।

ইংল্যান্ড প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে মাত্র ১১৭ রান করেছিল জস বাটলারের ইংল্যান্ড। জবাবে ইংল্যান্ডের দেওয়া ১১৮ রানের টার্গেট ১৮.৫ ওভারে ৪ উইকেট হাতে রেখেই পেরিয়ে যায় টাইগার বাহিনী। আগের ম্যাচে ফিফটি হাঁকানো শান্ত আজও ৪৬ রানের ম্যাচজয়ী ইনিংস খেলে জয়ের উল্লাসে মাতেন।

আজ (১২ মার্চ) মিরপুরের শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব। তবে সিরিজে ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে ইংল্যান্ডের হয়ে আজ ব্যাটিংয়ে ওপেন করতে নামেননি অধিনায়ক জস বাটলার।

তাই ফিল সল্টের সঙ্গে ব্যাটিং উদ্বোধনীতে আসেন ডেভিড মালান। প্রথম ওভারে তাসকিন আহমেদ ১০ রান দিয়ে দেন। তবে নিজের দ্বিতীয় ওভারে মালানের উইকেট তুলে নেন দেশসেরা এই পেসার। দলীয় ১৬ রানের মাথায় তার অফস্টাম্পের বাইরের বলে স্ল্যাশ করতে গিয়ে থার্ডম্যানে থাকা হাসান মাহমুদের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ৫ রান করে ফেরেন এই ব্যাটার।

এরপর ডানহাতি বাঁহাতি কম্বিনেশন ধরে রাখতে তিনে ব্যাট করতে নামেন অলরাউন্ডার মঈন আলী। সল্টকে সঙ্গ দিয়ে ইনিংসে হাল ধরেন তিনি। এই জুটি পাওয়ার প্লেতে দলের রান পঞ্চাশও ছাড়িয়ে নিয়ে গিয়ে বড় সংগ্রহের পথে এগিয়ে যান। তবে সপ্তম ওভারে বোলিংয়ে এসেই ইংলিশ শিবিরে আঘাত হানেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব।


নিজের দ্বিতীয় বলেই সল্টের উইকেট তুলে নেন টাইগার কাপ্তান। নিজের বলেই দুর্দান্ত এক ক্যাচ নিয়ে ফিল সল্টকে ২৫ রানেই সাজঘরে ফেরান সাকিব। সাকিবের পর বোলিয়ে এসে নিজের প্রথম ওভারেই ইংল্যান্ড অধিনায়ক জস বাটলারের উইকেট তুলে নেন হাসান মাহমুদ।

টাইগার পেসারের স্বপ্নের মতো এক ইয়র্কার ডেলিভারিতে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে বাটলারের উইকেট নেন হাসান। ওপেনিং পজিশন থেকে চারে নেমে ডানহাতি এই বিধ্বংসী ব্যাটার ৬ বল টিকে করেন মাত্র ৫ রান। বাটলার ফেরার পর মঈনের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন বেন ডাকেট।

দুই বাঁহাতির সামনে মিরাজকে আনতে দেরি করেননি সাকিব। আঘাত করতে দেরি করলেন না মিরাজও। মঈনের স্লগ সুইপ ডিপ মিডউইকেটে ফিল্ডারের কাছে গেছে সোজা ক্যাচ। ফলে ৫৭ রানের মধ্যে ইংল্যান্ড ৪ উইকেট হারিয়ে বেসামাল বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। সেখান থেকে দলকে ট্র্যাকে ফেরাতে বেন ডাকেট আর স্যাম কারান জুটি মিলে ৩৪ রান করেন।

তবে এরপরই জোড়া আঘাত মিরাজের। ১৫তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ১২ রান করা কারানকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন মিরাজ। এক বল বাদে শূন্য হাতেই ক্রিস ওকসকেও সাজঘরের পথ দেখান মিরাজ। বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়ে দুজনই স্ট্যাম্পিং হন লিটন দাসের হাতে।

এক ওভার বাদে নিজের শেষ ওভার করতে এসে আবারও লাল-সবুজের গ্যালারিকে উল্লাসে ভাসান মিরাজ। ১৭তম ওভারের শেষ বলে ক্রিজ জর্ডানকে ফেরান রনি তালুকদারের ক্যাচ বানিয়ে। ১০০ রানেই ৭ উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। ইনিংসের শেষ ওভারে এসে উইকেটের দেখা পান মুস্তাফিজুর রহমানও।

শেষ ওভারের প্রথম বলেই ২৮ বলে ২৮ রান করা বেন ডাকেটটে ফেরান নাজমুল হোসেন শান্তর ক্যাচ বানিয়ে। ওভারের চতুর্থ বলে রানআউট হয়ে ফেরেন ১১ বলে ১১ রান করা অভিষিক্ত রেহান আহমেদ। ইনিংসের শেষ বলে এসে রান আউট হন জোফরা আর্চারও। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে সবগুলো উইকেট হারিয়ে ১১৭ রান সংগ্রহ করে ইংল্যান্ড।

বাংলাদেশের হয়ে বোলিংয়ে মিরাজ ক্যারিয়ার সেরা চার উইকেট শিকার করেন। এ ছাড়াও তাসকিন, সাকিব, হাসান ও মোস্তাফিজ প্রত্যেকে একটি করে উইকেট তুলে নেন। ইংল্যান্ডের ১১৭ রান তাড়া করতে নেমে ওপেনাররা ব্যর্থ হয়েছেন। ওয়ানডে সিরিজের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজেও ব্যর্থতার বৃত্তে ঘুরপাক খাওয়া লিটন দাস দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। দলীয় ১৬ রানে স্যাম কারানের বলে সল্টের হাতে ক্যাচ দিয়ে ব্যক্তিগত ৯ রানে ফেরেন লিটন।

তার বিদায়ের পর আর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি রনি তালুকদারও। এই সিরিজ দিয়ে দীর্ঘদিন পর দলে ফেরা এই ওপেনার উইকেটে থিতু হয়েও জোফরা আর্চারের বলে ক্যাচ দিয়ে ইনিংস বড় করতে পারেননি। সাজঘরে ফেরার আগে ১৪ বলে ৯ রান নামের পাশে যোগ করেছেন রনি।

২৭ রানে দুই ওপেনার ফিরলে বাংলাদেশের আকাশে শঙ্কার কালো মেঘ জমে। তবে শান্ত-হৃদয় জুটিতে সেই শঙ্কার মেঘ উড়ে গেছে। দুই তরুণের সাবলীল ব্যাটিংয়ে দশম ওভারে দলীয় অর্ধশতক পূর্ণ করে বাংলাদেশ। তবে এরপর আর বেশি দূর এগোতে পারলেন না হৃদয়। তার ব্যাট থেকে এসেছে ১৭ রান।

৫৬ রানে ৩ উইকেট হারালেও উইকেটের এক প্রান্তে লড়তেছিলেন আগের ম্যাচের ম্যাচসেরা শান্ত। চতুর্থ উইকেটে মিরাজকে সঙ্গে নিয়ে দলকে নিয়ে যেতে থাকেন জয়ের দিকে। দুজন মিলে এই জুটিতে যোগ করেন ৪১ রান। দলীয় ৯৭ রানে গিয়ে আর্চারের বলে আদিল রশিদের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মিরাজ। ফেরার আগে করেন ১৬ বলে ২০ রান।

জয়ের জন্য আর বাকি ২১ রান। উইকেটে আসেন টাইগার ক্যাপ্টেন সাকিব আল হাসান। তবে সমর্থকদের আজ হতাশই করেছেন সাকিব। ৩ বল খেলে মঈন আলীর বলে ফিরেছেন শুন্য রানেই। দলীয় ১০০ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় বংলাদেশ। সাত নম্বরে নেমে আফিফও ব্যর্থ এদিন, ৩ বলে ২ রান করেই ফেরেন আর্চারের ১৪৮ কি.মি গতির বোলিংয়ে। ১০৫ রানেই ষষ্ঠ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

শেষ দুই ওভারে বাংলাদেশের জয়ের জন্য দরকার ছিল ১৩ রান। ১৯তম ওভারে ক্রিস জর্ডানের প্রথম বলেই বলে বাউন্ডারি হাকিয়ে বাংলাদেশকে জয়ের দিকে নিয়ে যান শান্ত। ওই ওভারের চতুর্থ আর পঞ্চম বলে টানা দুই চারে বাংলাদেশকে জয়ের বন্দরে ভেড়ান তাসকিন আহমেদ।

৪ উইকেটে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন শান্ত আর তাসকিন। আগের ম্যাচেই ফিফটি করে ম্যাচসেরা হওয়া শান্ত আজও অপরাআজিত থেকেই মাঠ ছাড়েন ৪৭ বলে ৪৬ রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলে।






আরও খবর


Chief Advisor:
A K M Mozammel Houqe MP
Minister, Ministry of Liberation War Affairs, Government of the People's Republic Bangladesh.
Editor & Publisher: A H M Tarek Chowdhury
Sub-Editor: S N Yousuf

Head Office: Modern Mansion 9th Floor, 53 Motijheel C/A, Dhaka-1223
News Room: +8802-9573171, 01677-219880, 01859-506614
E-mail :[email protected], [email protected], Web : www.71sangbad.com