শিরোনাম: |
অপরাধের শেষ নেই, দেন নৈতিকতার সবক
সাইবার অপরাধীদের আয়নাবাজি
|
নিজেদেরঅপরাধের অন্ত নেই। হত্যা, ধর্ষণ, মানিলন্ডারিংসহ নানা অপরাধে দণ্ডিতআসামি তাদের অনেকেই।একাধিক মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানাথাকার পরও সংশ্লিষ্টকর্তৃপক্ষের চোখে ধুলো দিয়েগোপনে দেশ ছেড়েছেন। রাষ্ট্রেরবিরুদ্ধে মিথ্যা বক্তব্য দিয়েবিভিন্ন দেশে নিয়েছেন রাজনৈতিকআশ্রয়। পালিয়েযাওয়া এসব অপরাধীইএখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেনীতি-নৈতিকতার ছবকদিয়ে বেড়াচ্ছেন।ফেসবুক, ইউটিউবে একাধিক অ্যাকাউন্টখুলে নিজেকে সুশীলহিসেবে উপস্থাপন করার পাশাপাশিরাষ্ট্রবিরোধী অপপ্রচার চালাচ্ছেন নিয়মিত। ধর্মীয়, সামাজিক অনুভূতিতে আঘাত করছেনমাঝেমধ্যেই। সরকারপ্রধানকেনিয়ে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য, আবার কখনো ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি কিংবা কোনোদিবস বা আইননিয়ে বিষবাষ্প ছড়াচ্ছেনঅহরহই। বিভিন্নদেশে থাকা এসবব্যক্তিকে আইনের আওতায় আনতেনা পারার জন্যকর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নতুলেছেন ভুক্তভোগীসহ অনেকেই। সংশ্লিষ্টরাবলছেন, এসব ভয়ংকরঅপরাধীর বিষয়ে সমন্বিত উদ্যোগনেই। একেঅপরের ওপর দায়চাপিয়েই নিজেদের দায়িত্ব শেষকরছেন তারা।যদিও বিদেশে থাকাএসব অপরাধীর বর্তমানএবং অতীত কর্মকাণ্ডেরফিরিস্তি তাদের কাছে রয়েছে। কূটনৈতিকচ্যানেল ব্যবহার করে সংশ্লিষ্টদেশকেও আমরা তাদের বিষয়গুলোযথাযথভাবে উপস্থাপন করতে পারছিনা। এসবব্যর্থতার কারণেই তাদের রোখাসম্ভব হচ্ছে না। রাষ্ট্রের বিভিন্ন ব্যক্তিএবং প্রতিষ্ঠানের নামেসোশ্যাল মিডিয়ায় কাল্পনিক, বানোয়াটগল্প সাজিয়ে ‘ব্ল্যাকমেল’ করে যাচ্ছে। অপরাধবিশেষজ্ঞ ও ঢাকাবিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগেরঅধ্যাপক শেখ হাফিজুররহমান কার্জন বলেন, ’৭৫-এর আগেওদেশে দেশে অনেকগুজব তৈরি করাহয়েছিল। মাঝেমধ্যেসে রকম আশঙ্কাওদেখতে পাই আমরা। এখনভিন্ন দেশ থেকেএসব প্রচার করাহচ্ছে। বিদেশেবসে তাদের অনেকেইসস্তা জনপ্রিয়তার আশায় এমনভয়ংকর তৎপরতা চালাচ্ছে।এর ফলে দেশেরভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে বহির্বিশ্বে। তাইআমাদের কর্তৃপক্ষের উচিত সমন্বিতভাবে বিষয়টিরমোকাবিলা করা। সাইবার অপরাধীদের যতকালোঅধ্যায় টিটো রহমান : পুরো নাম মোস্তাফিজুররহমান টিটো।২০০৫ সালে ১৭আগস্ট সিরিজ বোমা হামলারআসামি টিটো দিনাজপুর পৌরসভারইটগাঁও আবাসিক এলাকার বাসিন্দা। বিএনপিরসিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেকরহমান ও একুশেআগস্ট গ্রেনেড হামলার কারিগরআবদুস সালাম পিন্টুর ঘনিষ্ঠজনবলে দাবি করেননিজেই। দেশেরবিভিন্ন এলাকায় হওয়া একাধিকমামলার আসামি হয়ে কানাডাপালিয়ে গিয়ে নিয়েছেন রাজনৈতিকআশ্রয়। একটিকারখানায় শ্রমিকের কাজ করেন, থাকেন শ্রমিকদের জন্য বরাদ্দদেওয়া একটি ফ্ল্যাটে, পাশাপাশিসরকারের রিফিউজি ভাতা পাননিয়মিত। জীবনেকখনো সাংবাদিকতার ধারেকাছেওছিলেন না।তবে আগের পরিচয়আড়াল করতে টিটোনিজেকে কানাডার কথিত নাগরিকটেলিভিশনের ‘সিইও’ বলে পরিচয়দেন। প্রবাসেথেকে এই নাগরিকটিভি নামে ইউটিউবও ফেসবুকভিত্তিক পেজখুলে চালিয়ে যাচ্ছেনসরকারবিরোধী জঘন্য সব কর্মকা। টার্গেট করেদেশের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ওশিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে নানা গুজব, মিথ্যা তথ্য ও অপপ্রচারচালান। একপর্যায়ে ‘ব্ল্যাকমেল’ করে টাকাপয়সাদাবি করেন।রফাদফা না হলেইআপলোড হতে থাকেতাদের তৈরি করা একেরপর এক কল্পিতনোংরা কন্টেন্ট। তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কথিত সাংবাদিকটিটোর প্রধান উদ্দেশ্য দেশকেব্যর্থ ও অকার্যকররাষ্ট্র হিসেবে বহির্বিশ্বে প্রমাণকরা। ২০১৮সালে সরকারের বিরুদ্ধেশিক্ষার্থীদের উসকানি দিয়ে সহিংসতারদিকে ঠেলে দেওয়ারমাস্টারমাইন্ড এ টিটো। তারবিরুদ্ধে ব্যবসায়ী এবং সরকারিকর্মকর্তার কাছে চাঁদা চাওয়ারএকাধিক অভিযোগ রয়েছে। নাজমুস সাকিব : কানাডায় বসে কথিত ‘নাগরিক টিভি’ নামের ফেসবুকএবং ইউটিউব চ্যানেলেদিনরাত সরকারের শীর্ষ ব্যক্তি, বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের নিয়েনিয়মিত মিথ্যাচার করেন।দেশে থাকতে ছিলেনশিবিরের সক্রিয় কর্মী।বিএনপি-জামায়াতের কাছ থেকেনিয়মিত অর্থ পান নাজমুসসাকিব। তারেকরহমানের সঙ্গে সরাসরি যোগযোগরাখা সাকিবের মূলটার্গেট সোশ্যাল মিডিয়ায় বঙ্গবন্ধুপরিবারকে নিয়ে অপপ্রচার চালানো। জানাগেছে, নিউইয়র্ক ও লন্ডনেজামায়াত নেতা, যুদ্ধাপরাধী মীরকাসেম আলীর রেখে যাওয়াঅর্থ তাকে পাঠানোহয় প্রতি মাসে। এটাকা দিয়ে নাজমুসসাকিব গং নাগরিকটিভি নামের একটিআইপি টিভি খুলেসরকারবিরোধী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেননিয়ম করে। ধর্ষণ, ডিজিটাল নিরাপত্তাআইনসহ বিভিন্ন ধারায় নাজমুসসাকিবের বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিকমামলা। দেশছাড়ার আগে ২০১১সালে রাজধানীর সবুজবাগএলাকায় পাঁচ বছর বয়সীএকটি শিশুকে ধর্ষণকরেছিলেন নাজমুস সাকিব।ধর্ষণের শিকার সেই ছোট্টশিশুটি কথা বলারশক্তি হারিয়ে এখন বাকপ্রতিবন্ধী। ২০১১সালে ঘটনাটি তোলপাড়হয়েছিল দেশজুড়ে। সে সময় পুলিশতাকে গ্রেফতারে তৎপরতাশুরু করলেও তিনিগা ঢাকা দেন। পাড়িজমান আমেরিকায়।ওই ঘটনায় রাজধানীরসবুজবাগ থানায় একটি মামলাকরেছিল শিশুর পরিবার।তদন্তে পুলিশ ঘটনার সত্যতাপেয়েছিল। মামলারসর্বশেষ অবস্থা জানতে চাইলেসম্প্রতি সবজুবাগ থানার ওসিমোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, ‘মামলাটি অনেক পুরনা।আমি থানায় নতুন। তবেযতটুকু যানি ওই মামলারতদন্ত শেষে শিশুটিকে ধর্ষণেজড়িত অভিযুক্ত করেনাজমুস সাকিবের বিরুদ্ধে আদালতেচার্জশিট দেওয়া হয়েছে।’ সবুজবাগএলাকায় সরেজমিন দেখা গেছে, শিশুটির পরিবার যে বাড়িতেথাকত এখন আরসে বাড়িতে নেই। ধর্ষণেরঘটনার বছর তিনেকপর ওই এলাকাছেড়ে চলে যায়পরিবারটি। কারণধর্ষণের অপবাদ সইতে পারছিলনা নিরপরাধ পরিবারটি। স্থানীয়বাসিন্দা মোবাশ্বের হোসেন জানান, ‘শিশুটির পরিবার লোকলজ্জার কারণেশেষ পর্যন্ত এলাকাইছেড়ে দিল। কারণ নাজমুস সাকিবেরএ ধর্ষণের ঘটনাসবাই জানে।’ বর্তমানে রামপুরা টিভি ভবনেরপেছনের গলির আমির উদ্দিনেরএকটি টিনশেডের বাড়িতেথাকে পরিবারটি।দুই রুমের ঘরটিতেদুই মেয়ে আরএক ছেলেকে নিয়েপরিবারটি কোনোমতে টিকে রয়েছে। সম্প্রতিসাংবাদিক পরিচয় পেয়ে প্রথমেকথা বলতে নাচাইলেও পরে হাউমাউকরে কাঁদতে থাকেনধর্ষণের শিকার শিশুটির পিতা। পাশেররুমে বসে থাকামেয়েটির দিকে ইশারা দিয়েতিনি বলেন, ‘আমারপরিবারের সুখ কেড়েনিয়েছে ধর্ষক নাজমুস সাকিব। আমারসুস্থ মেয়েটি ওই ঘটনারধকল সইতে নাপেরে কথা বলারশক্তি হারিয়ে ফেলেছে।ওই ঘটনার পরকোনো কথা বলতেপারে না। মাসখানেক চিকিৎসার পরএখন কোনোমতো বেঁচেআছে। কিন্তুশুধু ঘরের এককোনায় বসে কান্নাকরে। মেয়েরএমন কষ্ট দেখেবুকটা ফাইট্টা যায়।’ তিনি ক্ষুব্ধ কণ্ঠেবলেন, নাজমুস সাকিব আমারমেয়ের জীবনটা শেষ করেদিয়েছে। তারবিচার চাই। সেদিনযা ঘটেছিল : খোঁজনিয়ে জানা গেছে, ঘটনার সময় রাজধানীরবাসাবোর সবুজবাগ এলাকার ২৮নম্বর মায়াকাননের পেছনে তিনটিবাড়ির পর একটিটিনশেডের ঘরে পরিবারেরসঙ্গে থাকত শিশুটি।তার বাবা সিএনজিঅটোরিকশা চালিয়ে সংসার চালাতেন। ঘটনারদিন চকলেটের লোভদেখিয়ে ফুটফুটে ছোট্ট শিশুটিকে২৮ মায়াকাননে নিজবাড়িতে নিয়ে যান মাদকাসক্তনাজমুস সাকিব। এরপরছাদে নিয়ে একাধিকবারধর্ষণ করেন।অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের একপর্যায়ে শিশুটিকে নিচতলারগ্যারেজে রেখে পালিয়ে যাননাজমুস সাকিব। ওই সময় বাড়িরকেয়ারটেকার বাচ্চু মিয়া শিশুটিরকান্নার শব্দ শুনে এগিয়েযান। তিনিশিশুটির করুণ অবস্থা দেখতেপান। তখনতার চিৎকারে জড়োহন এলাকাবাসী।পরে শিশুটি পুরোঘটনা জানান সবাইকে। এঘটনার পর নাজমুসসাকিবের বাবা জলিলুল আজমসহশিশুটির বাবা মিলে তাকেস্থানীয় একটি হাসপাতালে নেন। শিশুটিরঅবস্থা সংকটাপন্ন দেখে হাসপাতালকর্তৃপক্ষ শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেলকলেজ হাসপাতালে নেওয়ারপরামর্শ দেন।প্রায় ২৮ দিনসেখানে চিকিৎসার পর প্রাণেবেঁচে গেলেও শিশুটি হয়েপড়ে বাকপ্রতিবন্ধী।ধর্ষণের শিকার, অতিরিক্ত মানসিকচাপ ও অতিরিক্তরক্তক্ষরণের কারণে কথা বলারশক্তি হারিয়ে ফেলে শিশুটি। বিষয়টিদ্রুত ধামাচাপা দেওয়ার জন্যনাজমুস সাকিবের মামা আবুদায়ান ও বাবাজলিলুল আজম মেয়েটিরপরিবারকে টাকা দিয়ে মুখবন্ধ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তুশিশুটির বাবা টাকা নানিয়ে বিচার চান। নাজমুসসাকিবের প্রভাবশালী বাবা ওমামার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করেসবুজবাগ থানায় ধর্ষণের মামলাকরেন। শুধুএ শিশুই নয়, নাজমুস সাকিবের বিরুদ্ধে আরওঅনেক ধর্ষণের অভিযোগপাওয়া গেছে।বিকৃত যৌনাচারে অভ্যস্ত নাজমুসসাকিব নিজের খালাতো বোন ‘কাজী রুবাইয়া’কেও ধর্ষণকরেন। এরপররুবাইয়া গর্ভবতী হয়ে পড়লেপরিবারের চাপে তাকে বিয়েকরেন তিনি।নিজ এলাকাতেই একাধিকযৌন নির্যাতনের অভিযোগআছে নাজমুস সাকিবেরবিরুদ্ধে। খিলগাঁও, সবুজবাগ এবং মতিঝিলথানায় রয়েছে একাধিক মামলাএবং সাধারণ ডায়েরি। নাজমুসসাকিবের বিরুদ্ধে মতিঝিল থানায়ধর্ষণের মামলার বিষয়ে জানতেচাইলে মতিঝিল থানার ভারপ্রাপ্তকর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমানবলেন, ‘আমি থানায়নতুন এসেছি।তার বিরুদ্ধে ধর্ষণমামলার কথা থানাররেকর্ডে আছে।আমি এখন বাইরেআছি, বিষয়টি তদন্তাধীন। পরেজানাতে পারব। খিলগাঁওথানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফারুকুল আলমবলেন, ‘তার বিরুদ্ধে (নাজমুস সাকিব) ধর্ষণের মামলারকথা শুনেছি।আমি থানায় নতুন। পুরনোমামলা। খোঁজনিয়ে বিস্তারিত জানাতেপারব।’ খোঁজনিয়ে জানা গেছে, নাজমুস সাকিবের বাসাবোর বাড়িরভাড়াটিয়া কুমিল্লার দাউদকান্দির রেজাউলকরিমের স্ত্রীকেও দলবেঁধে ধর্ষণকরেছিল নাজমুস সাকিব ওতার দল। ২০১০ সালের সেইঘটনার পর এলাকাছাড়েন ওই স্বামী-স্ত্রী। লোকলজ্জারভয়ে সেদিন মামলাকরেননি, নীরবে বাড়ি ছেড়েছিলেনতারা। সেইরেজাউল এখন মিরপুরেরপীরেরবাগ এলাকায় থাকেন।তিনি বলেন, নাজমুসসাকিবের শাস্তি চাই। খোঁজ নিয়ে জেনেছিনাজমুস সাকিব এখন নাকিআমেরিকায় গিয়ে ইউটিউবে কীসেরশো করে। তবে সেদিনেরকথা এখন আরমনে করতে চাইনা। তারযৌন নির্যাতনের কথাএখনো মনে হলেআমার স্ত্রী আত্মহত্যারচেষ্টা করে।আমরা সেই কষ্টবুকে নিয়ে কোনোমতেবেঁচে আছি। পিনাকী ভট্টাচার্য : রাজশাহী মেডিকেল কলেজ থেকেএমবিবিএস পাস করাপিনাকী ভট্টাচার্য বগুড়া জিলাস্কুলের প্রয়াত শিক্ষক ওসাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শ্যামল ভট্টাচার্যেরবড় ছেলে।একসময় আওয়ামী ঘরানার রাজনীতিরসঙ্গে জড়িত ছিলেন, নিয়েছেন
|