রোববার ৩ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩০
শিরোনাম: ঢাকা কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশন (ডি.কেজি.এ) এর বৃত্তি পরীক্ষা ২০২৩ অনুষ্ঠিত       একতরফা নির্বাচন রাজনৈতিক সংকট তীব্র করবে : গোলাম মোস্তফা       বোস্টনে দন্ডিত যৌন অপরাধীর স্ত্রী পারভিনের চোখে বাংলাদেশিদের ভোট        আ.লীগ ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় সমাবেশ ডেকেছে        ইসলামী ব্যাংকের উদ্যোগে বার্ষিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা সম্মেলন অনুষ্ঠিত       ক্যাডেট কলেজ ক্লাব এবং নিউ হরাইজন ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের মধ্যে সমঝোতা       ইবিতে ‘নাইট ক্রিকেট টুর্নামেন্ট’, বিজয়ী যে দল      
আল্লাহ বিশ্ব জাহানের সৃষ্টিকর্তা-- আল্লামা মাহমূদুল হাসান
প্রকাশ: শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ২:৫৭ পিএম |

এ দুনিয়ায় যা আছে, এগুলোর কোনোটিই নিজে নিজে পয়দা হয়নি। সবকিছুরই একজন স্রষ্টা আছেন। সেই স্রষ্টা হলেন মহান রব্বুল আলামিন। তিনিই সমগ্র বিশ্ব জাহানের একমাত্র সৃষ্টিকর্তা।


সৃষ্টির সেরা : সব সৃষ্টির মাঝে মানুষ হচ্ছে সবচেয়ে সুন্দর, সর্বাপেক্ষা জ্ঞানী ও বুদ্ধিমান এবং সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ মর্যাদার অধিকারী। মানুষকে এ শ্রেষ্ঠত্ব দানের কথা উল্লেখ করে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ ইরশাদ করেন : ‘নিশ্চয়ই আমি আদম সন্তানকে মর্যাদা দান করেছি, আমি তাদের স্থলে ও জলে চলাচলের বাহন দান করেছি; তাদের উত্তম জীবনোপকরণ প্রদান করেছি এবং তাদের অনেক সৃষ্টবস্তুর ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছি।’ (বনি ইসরাইল-৭০)।

সৃষ্টিকুলের পরিমাণ অসংখ্য-অগণিত : অনেকে বলে থাকেন, আল্লাহতায়ালা সর্বমোট ১৮ হাজার মাখলুকাত সৃষ্টি করেছেন। অথচ সৃষ্টিকুলের মোট সংখ্যা কারও জানা নেই। বরং সৃষ্টিকুল হচ্ছে অসংখ্য, অগণিত। সুবৃহৎ কলেবরে সুদীর্ঘ ৩০ খন্ডে সমাপ্ত এক অসাধারণ তাফসির গ্রন্থের লেখক প্রখ্যাত মুফাস্সির আল্লামা তানতাভি (রহ.) স্বীয় তাফসির গ্রন্থের ভূমিকায় লিখেছেন, লোকেরা বলে, আল্লাহ সর্বমোট ১৮ হাজার মাখলুকাত সৃষ্টি করেছেন। লোকদের এ কথা শুনে আমি আল্লাহর বিভিন্ন সৃষ্টি সংখ্যা গুনতে আরম্ভ করলাম। এক এক করে গুনতে গুনতে ১০ লাখ পর্যন্ত পৌঁছেছি। কিন্তু তাতেও গণনা শেষ হয়নি। গণনার বাইরে আরও অসংখ্য মাখলুক রয়ে গেছে। যা হোক, জলভাগ এবং স্থলভাগের সব সৃষ্টির মাঝে সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি হচ্ছে মানুষ। আল্লাহ মানুষকে সবকিছুর ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। সব সৃষ্টির চেয়ে মানুষকে সর্বাপেক্ষা সুন্দর হিসেবে সৃষ্টি প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আমি মানুষকে সুন্দরতম অবয়বে সৃষ্টি করেছি’। (সুরা তীন-৪)।


মানুষকে সর্বশেষে সৃষ্টি করার রহস্য : আল্লাহ সব সৃষ্টির চেয়ে মানুষকে সর্বাধিক সুন্দর করে বানিয়েছেন। সবকিছু সৃষ্টি করার পর সর্বশেষে মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। কেননা অন্যান্য সৃষ্টিকে বানানো আল্লাহর মূল লক্ষ্য ছিল না; বরং মানুষকে সৃষ্টি করাই ছিল আল্লাহর মূল লক্ষ্য। তাই মানবজাতি হচ্ছে আল্লাহতায়ালার মূল লক্ষ্যবস্তু। ওয়াজ-মাহফিলে যেরূপ বক্তা এবং শ্রোতারা আগমনের আগেই সভাস্থলে বিছানা বিছানো হয়, লাইটিং করা হয় এবং মাইকের ব্যবস্থা করা হয়, যাতে শ্রোতারা পাক-পবিত্র পরিবেশে বসে বক্তার মুখে কোরআন-হাদিসের কথা শুনতে পায়। যথাযথভাবে দীনি আলোচনা করা ও তা শ্রবণ করার সুবিধার্থে বক্তা এবং শ্রোতাদের সভাস্থলে উপস্থিত হওয়ার আগেই উপরোল্লিখিত আনুষঙ্গিক কাজগুলো করে রাখতে হয়। সভা শেষে বক্তা ও শ্রোতারা যখন সভাস্থল ছেড়ে নিজ নিজ গন্তব্যে চলে যান তখন সেই বিছানাপত্র উঠিয়ে ফেলা হয়, লাইট খুলে ফেলা হয় এবং মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয়। তদ্রুপ আশরাফুল মাখলুকাত মানুষকে সৃষ্টি করার আগেই তাদের বসবাসের জন্য এ পৃথিবীকে সৃষ্টি করা হয়েছে। মানুষের জন্যই চাঁদ, সূর্য গ্রহ-নক্ষত্র, পাহাড়-পর্বত, নদী-সাগর, আগুন পানি এবং আলো-বাতাস প্রভৃতি সৃষ্টি করা হয়েছে। মানুষের কল্যাণার্থে আনুষঙ্গিক সবকিছুকে সৃষ্টি করার পর আল্লাহপাক মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। চন্দ্র-সূর্যের নমুনা রূপে মানুষকে দুটি চক্ষুদান করেছেন। এই চন্দ্র-সূর্য না থাকলে শুধু চোখ দ্বারা দেখা আমাদের পক্ষে সম্ভব হতো না।


মানুষের অকৃতজ্ঞতা : সৃষ্টির সেরা হওয়ার জন্য আল্লাহর নিকট আমরা কোনো দিন কোনো দরখাস্ত করিনি। কোনো প্রকার আবেদন-নিবেদন এবং দরখাস্ত ছাড়াই আল্লাহ আমাদের তাঁর সব ধরনের নেয়ামত দান করেছেন। তিনি আমাদের বসবাসের উপযোগী বাসস্থানের ব্যবস্থা করেছেন, আমাদের রক্ষণাবেক্ষণ ও সব ধরনের রিজিকের ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছেন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, মানুষের প্রতি আল্লাহ এই সীমাহীন অনুগ্রহ প্রদর্শন সত্ত্বেও তারা আল্লাহর সবচেয়ে বেশি নাশুকরি করছে। অন্য কোনো সৃষ্টি এভাবে আল্লাহর নাশুকরি করে না।


বাকশক্তি আল্লাহর দান : আল্লাহতায়ালা মানুষকে অসংখ্য নেয়ামত দান করেছেন। সুস্থ-সবল ও সুঠাম শরীর দান করেছেন। কিন্তু এতদসত্ত্বেও সে যদি কথা বলতে না পারত, তাহলে দুঃখের সীমা থাকত না। তাই আল্লাহ তাকে বাকশক্তি দান করেছেন, কোটি কোটি টাকার মালিক হওয়া সত্ত্বেও কেউ যদি কথা বলতে না পারে, তবে তার মতো দুঃখী মানুষ দুনিয়ায় আর কেউ নেই। আমাদের আশপাশের বোবা মানুষগুলো কথা বলতে না পেরে কতই না কষ্ট করে থাকে। এই বাকশক্তি কোনো দোকানে বিক্রি হয় না। টাকা-পয়সায় কিনতে পাওয়া যায় না। পৃথিবীর সব মানুষ মিলেও কাউকে বাকশক্তি দান করতে পারবে না। এটা একমাত্র আল্লাহর দান; মানুষের প্রতি আল্লাহর অসীম অনুগ্রহের অন্যতম।


দৃষ্টিশক্তি : আল্লাহ আমাদের আরেকটি মহা নেয়ামত দান করেছেন। তা হলো দৃষ্টিশক্তি। উদ্দেশ্য হলো, যেন আমরা আসমান-জমিনকে দেখে আল্লাহর কুদরত নিয়ে চিন্তা করি। নিজের শরীরের নানা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিয়ে গবেষণা করে আল্লাহর অনুগ্রহের কথা স্বীকার করি, অর্থাৎ মনে-মনে এ কথা চিন্তা করি যে, দৃষ্টিশক্তি তো আমার নিজের সৃষ্টি নয়, কোনো দোকানেও পাওয়া যায় না, কোনো গুদামেও সংরক্ষিত থাকে না, আমরা তা কোথা থেকে পেলাম? এই যোগ্যতা আমাকে কে দান করল? এভাবে ভাবতে ভাবতে আমাদের অন্তরে এ কথা বুঝে আসে যে, এই দৃষ্টিশক্তি কোনো বিজ্ঞানীর আধুনিক প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতির ব্যবহারে সৃষ্টি হয়নি। এটা কোনো পন্ডিত গবেষকের গবেষণার ফলও নয়। বরং যে মহান আল্লাহ আমাদের কাজ করার জন্য দুটি হাত দিয়েছেন, শ্রবণ করার জন্য দুটি কান দিয়েছেন, ঘ্রাণ নেওয়ার জন্য নাক দিয়েছেন এবং চলার জন্য দুটি পা দান করেছেন, সেই সুমহান আল্লাহতায়ালাই আমাদের দৃষ্টিশক্তি দান করেছেন।

লেখক : আমির, আল হাইআতুল উলয়া ও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ






আরও খবর


Chief Advisor:
A K M Mozammel Houqe MP
Minister, Ministry of Liberation War Affairs, Government of the People's Republic Bangladesh.
Editor & Publisher: A H M Tarek Chowdhury
Sub-Editor: S N Yousuf

Head Office: Modern Mansion 9th Floor, 53 Motijheel C/A, Dhaka-1223
News Room: +8802-9573171, 01677-219880, 01859-506614
E-mail :71sang[email protected], [email protected], Web : www.71sangbad.com