মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ১৭ বৈশাখ ১৪৩১
শিরোনাম: নাটোরে আরো ২০ নারীকে সেলাই মেশিন       ন্যাশনাল ব্যাংক একীভূত হচ্ছে না ইউসিবির সঙ্গে        ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি; বাপ্পী সভাপতি এবং সহ-সভাপতি আশিক মাহমুদ       ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স অ্যাওয়ার্ড পেল ইসলামী ব্যাংক       আইনগত সহায়তা পাওয়া করুণা নয়, দরিদ্র-অসহায় নাগরিকের অধিকার: আইনমন্ত্রী       তীব্র গরমে পথচারীদের বিনামূল্যে শরবত রুহ্ আফজা দিচ্ছে হামদর্দ       সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ির ধাক্কায় শিক্ষার্থীর মৃত্যু      
ঈদের আগেই মাংস-মসলাসহ সব পণ্যের দাম চড়া
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: বুধবার, ১০ এপ্রিল, ২০২৪, ৩:৫৩ পিএম |

‘দুই দিন আগেও গরুর মাংস ছিল ৭৬০ টাকা কেজি, কী এমন হইলো যে দুই দিনে কেজিতে ৪০ টাকা বাড়লো। সরকার তো দাম নির্ধারণ করেই খালাস, বাজারে তো সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নাই।’ রাজধানীর মিরপুর ১১ নম্বরে একটি মাংসের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে এভাবেই ক্ষোভ ঝাড়ছিলেন হাসানুল ইসলাম নামের একজন ক্রেতা।

ঈদ ঘিরে আবারও অস্থির মাংসের বাজার। গরুর মাংস কেজিপ্রতি ৪০-৫০ টাকা আর খাসির মাংস কেজিতে ১০০-১৫০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়ে গেছে। ঈদের আগে মুরগি ও সব ধরনের মসলার দামও চড়া বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।

ঈদের আগের দিন বুধবার (১০ এপ্রিল) মিরপুর ১১ ও ১২ নম্বরের বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, মাংস কিনতে আসা ক্রেতারা বাড়তি দাম নিয়ে অস্বস্তিতে পড়েছেন। তবে মুরগি ও গরুর মাংসের দোকানের সামনে ক্রেতার ভিড় দেখা গেছে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে শুধু মাংসই নয়; চাল, পেঁয়াজ, আদা, রসুন, আলু ও মসলাজাতীয় পণ্যসহ প্রায় সব নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি গরুর মাংস ৮০০ টাকা, খাসির মাংস ১১৫০ থেকে ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতারা বলছেন, দুদিন আগেও একই বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৫০-৭৬০ টাকা আর খাসির মাংস ১০০০ বা ১১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

কেজিতে ৪ টাকা বেড়েছে চালের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে প্রায় ৪০-৫০ টাকা বেড়ে ব্রয়লার মুরগি ২৫০-২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৭০-৩৮০ টাকা কেজি দরে৷ আর লেয়ার মুরগির কেজি বেড়ে হয়েছে ৩৫০ টাকা , যা এক সপ্তাহ আগেও ছিল ২৮০-৩০০ টাকা।

দাম বাড়ার কারণ হিসেবে বিক্রেতারা বলছেন, চাহিদা বেশি থাকায় খামারিরা মুরগির দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। অন্যদিকে গরু কিছুটা কম আসায় মাংসের দাম বেড়ে গেছে।

তাদের যুক্তি, ঈদে গরু ও মুরগির মাংসের চাহিদা বেশি থাকে। বাড়তি চাহিদার কারণে বাজারে দামও একটু বেড়ে যায়। ঈদের পর দাম আবার স্বাভাবিক হবে।

মিরপুর ১১ নম্বর বাজারে শামসুল নামে একজন মাংস বিক্রেতা বলেন, ট্রাক কম আসছে। বাজারে গরু-ছাগলের সরবরাহও কিছুটা কম। বিপরীতে চাহিদা অনেক বেশি। এ কারণে গরু ও খাসি মাংসের দাম সামান্য বেড়েছে৷

তিনি বলেন, চাঁদ রাতে আমাদের বাড়তি খরচ আছে। বকশিস দিতে হয়, কর্মচারীদের বেতন দিতে হয়। ঈদের পরে গরুর মাংসের দাম আবারও কমে যাবে।

মাংসের দামের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মসলার দাম। প্রতি কেজি এলাচ ২৮০০ টাকা, দারুচিনি ৫০০ টাকা, লবঙ্গ ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে এসব মসলার দাম কেজিপ্রতি ১০০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।

জয়ফল প্রতি কেজি ১২৫০ টাকা, জয়ত্রী ৩৬০০ টাকা, আলুবোখারা ৪৮০ টাকা, পেস্তা বাদাম ২৯৫০ টাকা, কাজুবাদাম ১২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া চিনা বাদাম ১৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কিশমিশ বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ৫৫০ থেকে ৬৫০ টাকা কেজি দরে।

ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, এরই মধ্যে ডানো, পুষ্টি ও ডিপ্লোমাসহ ইত্যাদি ব্র্যান্ডের গুঁড়ো দুধের দামও বেগেছে। খোলা চিনি ১৪০ টাকা ও প্যাকেটজাত চিনি ১৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। কোথাও কোথাও কেজিতে ৫-১০ টাকা বাড়তি রাখা হচ্ছে।

বাজারে ঈদ উপলক্ষে বাহারি নাম ও স্বাদের সেমাইয়ের পসরা সাজিয়েছেন বিক্রেতারা। কিশোয়ান, বিডিফুড, বনফুল, অলিম্পিক, ফুলকলি, স্বপ্ন সেমাই, ওয়েল ফুড, ডেকো, কোকোলা, কুলসনসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ২০০ গ্রাম ও ৪০০ গ্রামের প্যাকেটে বিক্রি হচ্ছে সেমাই।

ক্রেতারা বলছেন, সেমাই ও মিষ্টান্ন তৈরির সামগ্রীর দাম বেড়েছে। এবার সেমাই কোম্পানির প্যাকেটে দাম ৫ টাকা বেশি রয়েছে। ৪৫ টাকার সেমাই ৫০ টাকা হয়েছে। অন্যদিকে বাজারে পাওয়া যাচ্ছে খোলা লাচ্ছা ও চিকন সেমাই। এসব সেমাইয়ে কেজিপ্রতি ২০-৩০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে।

মিরপুর ১২ নম্বর বাজারে সেমাই কিনতে আসা ক্রেতা শাহাজাহান বলেন, রোজা শুরুর আগে, রমজান চলাকালে ও ঈদের আগের দিন পণ্যের দাম বাড়ানো একটা রীতি হয়ে গেছে। এটা কেউ দেখে না। যে যার মত দাম বাড়াচ্ছে।

মাংস-মসলার পাশাপাশি বেড়েছে চালের দামও। বর্তমানে পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি চিকন মিনিকেট ৭২ টাকা, নাজিরশাইল ৭০-৮০ টাকা ও মোটা আটাশ চাল ৫৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে চালের দাম কেজিতে ৪-৫ টাকা বেড়েছে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।

তবে কিছুটা কমতির দিকে সবজির দাম। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ৬০ থেকে ৮০ টাকা, শিম ৩০ থেকে ৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৩৫ থেকে ৫০ টাকা, উস্তে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৩৫ থেকে ৫০ টাকা, পটল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, শসা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, সজনে ডাটা ১০০ থেকে ১২০ টাকা, কাকরোল ১১০ থেকে ১৩০ টাকা, ধুন্দল ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া ঝিঙ্গে ৪০ থেকে ৬০ টাকা, গাজর ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বরবটি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, করলা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, লম্বা বেগুন ৪০ থেকে ৫০ টাকা, টমেটো ৪০ থেকে ৫০ টাকা, গোল বেগুন ৫০ থেকে ৬০ টাকা, মুলা ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, শিমের বিচি ৭০ থেকে ৮০ টাকা। প্রতি পিস লাউ ৪০ থেকে ৬০ টাকা, ফুলকপি ৩০ টাকা ও বাঁধাকপি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।


সবজি দাম তুলনামূলক কম হওয়ার কারণ হিসেবে বিক্রেতা সজীব হোসেন বলেন, ঈদের কয়েকদিন মাংসের চাহিদা বেশি থাকে। এ কারণে রমজানের মাঝামাঝি থেকে সবজির দাম কমতে শুরু করে। আবার ঢাকা থেকে অনেক মানুষ চলে যাওয়ায় বাজারে সবজির দাম কিছুটা কমে যায়।






আরও খবর


Chief Advisor:
A K M Mozammel Houqe MP
Minister, Ministry of Liberation War Affairs, Government of the People's Republic Bangladesh.
Editor & Publisher: A H M Tarek Chowdhury
Sub-Editor: S N Yousuf

Head Office: Modern Mansion 9th Floor, 53 Motijheel C/A, Dhaka-1223
News Room: +8802-9573171, 01677-219880, 01859-506614
E-mail :[email protected], [email protected], Web : www.71sangbad.com