সোমবার ২০ জানুয়ারি ২০২৫ ৭ মাঘ ১৪৩১
শিরোনাম: জাতীয়করণের দাবিতে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা সমাবেশ       জামায়াতে ইসলামী আজ গণমানুষের আস্থা ও ভালোবাসার দল       বিএনপির জন্য আগামী নির্বাচন এত সহজ নয় : তারেক রহমান       জাতীয় শিক্ষক ফোরামের প্রদান দাবি স্বতন্ত্র ইফতেদায়ী মাদ্রাসা জাতীয়করণ করতে হবে       আলেমদের অবদানের স্বীকৃতি দিতে হবে ঘোষণাপত্রে: হেফাজত আমির       ফিলিস্তিনিরা ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে স্বস্তির প্রহর গুনছেন        বাংলার জমিনে সন্ত্রাস চাঁদাবাজি দখলদারিত্বমুক্ত ইনসাফ কায়েমের লড়াই চলবেই : আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান      
সরকার সিন্দাবাদের দৈত্য হয়ে জনগণের কাঁধে চেপে বসেছে : জি এম কাদের
প্রকাশ: শনিবার, ১১ মে, ২০২৪, ৬:৩৬ পিএম |

বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, জাতি আজ চরম সংকটময় সময় পার করছে। দিন যতই যাচ্ছে সংকটের গভীরতা ততই বাড়ছে। আমরা যেটাকে সংকট বলেছি, এখন মনে হচ্ছে সেটা কোন সংকটই ছিল না। দেশের বেশির ভাগ মানুষ আয় দিয়ে সংসার চালাতে পারছে না। সরকার সিন্দাবাদের দৈত্য হয়ে জনগণের কাঁধে চেপে বসেছে। 


আজ শনিবার (১১ মে) দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানীর কার্যালয় মিলনায়তনে দলটির ঢাকা মহানগর উত্তরের মতবিনিময় সভায় জি এম কাদের এসব কথা বলেন।

জাপা চেয়ারম্যান বলেন, জিনিসপত্রের দাম প্রতিদিনই বাড়ছে। টাকার অবমূল্যায়নে ডলারের দাম বেড়ে গেছে, মূল্যস্ফীতি হচ্ছে। ডলার সংকটের কারণে সরকার আমদানি সংকোচন করেছে। এতে অনেক কলকারখানা বন্ধ হয়ে মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। সার্বিকভাবে অর্থনৈতিক মন্দা সৃষ্টি হয়েছে। বেশির ভাগ মানুষ কাজ পাচ্ছে না, খেতে পাচ্ছে না। এমন বাস্তবতায় একটি শ্রেণি ইউরোপের স্টাইলে জীবনযাপন করছে। সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে বিশাল অর্থ সম্পদের মালিক হয়েছে তারা। বিশ্ব সংস্থাগুলোর জরিপে দেশে ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য বাড়ছে। একটি শ্রেণি আধাপেট খেয়ে বেঁচে আছে। অনেকে অর্থের অভাবে চিকিৎসা করতে পারছে না। এই বৈষম্যের জন্য মানুষের মধ্যে হতাশা বাড়ছে। আমাদের সবচেয়ে বড় অর্জন হচ্ছে আমাদের স্বাধীনতা। দেশের মানুষ চেয়েছিল নিজেদের একটি দেশ হবে। প্রজাতন্ত্র মানে প্রজারাই দেশের মালিক।



গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরও বলেন, রাজনীতিতে গুণগত একটি পরিবর্তন এসেছে। একটি শ্রেণি কিছু সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে। তারা ভাবছে, সরকার তো জেকে বসেছে, থাকবেই। তাদের সঙ্গে লাইন দিয়ে যেটুকু পাওয়া যায়। আবার সরকার যাদের নিচ্ছে না, তাদের বাধ্য হয়ে সরকারের বিপক্ষে থাকতে হচ্ছে। তারা না চাইলেও জনগণের পক্ষে দাঁড়াতে হচ্ছে। আমাদের কিছু জায়গা দিয়েছে এটাই হচ্ছে, সর্বনাশ। এভাবে চলতে থাকলে সামনের দিকে দেশে আর রাজনীতি থাকবে না, বিরাজনীতিকরণ চলছে। জনগণকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আজকাল নির্বাচনে লোকজন যায় না, তাদের বক্তব্য আমরা গেলেই কী আর না গেলেই কী। একদলীয় শাসন ব্যবস্থা সিন্দাবাদের দৈত্য হয়ে মানুষের কাঁধে বসে আছে। সামনের দিকে রাজনীতি আরও কঠিন হবে। সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমরা মানুষের পাশে থাকব নাকি সুযোগ-সুবিধার পক্ষে থাকব। জনগণের পক্ষে থাকতে হলে ত্যাগ স্বীকারের মানসিকতা থাকতে হবে। যারা সুযোগ-সুবিধার লোভে পড়েছে, এটা স্বল্প সময়ের জন্য। সামনের দিকে হয়তো তাদের প্রয়োজনীয়তা থাকবে না। যারা সরকারের দালালি করেছে, তাদের কিন্তু লাথি দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে।


জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান আরও বলেন, বিদ্যুতের চাহিদা ১৩ থেকে ১৬ হাজার মেগাওয়াট। হঠাৎ করে গত বছর ১৭ হাজার হয়ে গিয়েছিল। তখন ক্যাপাসিটি চার্জ দেওয়া ১০ হাজার মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ প্লান্ট বসিয়ে রাখা হয়েছিল। এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ নেওয়া হয়নি। অথচ ২৭ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদনের জন্য ক্যাপাসিটি চার্জ দেওয়া হয়েছে। ব্যবহার করতে পারছেন না, তাহলে বানালেন কেন? প্রয়োজনের চেয়ে কিছু বেশি বানাতে পারেন। তারপরও তো লোডশেডিং আছে। এক লাখ ৩৭ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে তাদের ক্যাপাসিটি চার্জ। বসিয়ে বসিয়ে পয়সা দেওয়া হচ্ছে, মানুষ কষ্ট পাচ্ছে, কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আরও উৎপাদন কেন্দ্র বানানো হচ্ছে, সেগুলোতেও বসিয়ে বসিয়ে পয়সা দিতে হবে। ঋণের ২০ ভাগ নেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ খাতে। অথচ বিদ্যুতের দাম বেড়েছে। লোকসান কমানোর জন্য বছরে তিন বার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। তিন টাকা থেকে বছরে আট টাকা হয়েছে ইউনিট। সামনে আরও তিনগুণ বেড়ে যেতে পারে। এই টাকা দেওয়া হচ্ছে বসিয়ে রাখা বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে ক্যাপাসিটি চার্জ হিসেবে। এমন কিছু প্রতিষ্ঠান আছে যারা কোনোদিনই বিদ্যুৎ উৎপাদন করে নাই। আমরা জানি, ক্যাপাসিটি চার্জ ছাড়া চুক্তি হয়। ব্যবসায়ীরা ঠিক করবে কেমনে তারা ব্যবসা করবে। এই সেক্টরে ব্যবসায়ী আনা হয়নি, কিছু সুবিধাভোগী লোক আনা হয়েছে। কোনো ব্যবসা ছাড়াই তাদের হাজার হাজার কোটি টাকা দেওয়া হচ্ছে। সামনে বিদ্যুতের দাম বাড়বে, মালামালের দাম বাড়বে, জনগণের কষ্ট আরও বাড়বে।

Advertisement

ঢাকা মহানগর উত্তরের যুগ্ম আহ্বায়ক সামছুল হক সামছুর সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভা পরিচালনা করেন মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব সুলতান আহমেদ সেলিম। এসময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য শেরীফা কাদের।






আরও খবর


সম্পাদক : এ এইচ এম তারেক চৌধুরী, সহ-সম্পাদক: এম এ ওয়াহেদ- ০১৮৫৯-৫০৬৬১৪
প্রধান কার্যালয় : নাহার ম্যানশন ৫ম তলা, ১৫০ মতিঝিল বা/এ, ঢাকা -১০০০।
নিউজ রুম: ০২৪৭১১০৪৫৪, ০১৬৭৭২১৯৮৮০।
e-mail: [email protected], web: 71sangbad.com