শিরোনাম: |
গাছ-গাছালি জনজীবনে স্বস্তি দিতে পারে
|
চলমান তাপপ্রবাহে অতিষ্ঠ জনজীবনে তাপ শোষণ করে স্বস্তি এনে দিতে পারে গাছ-গাছালি। তবে গাছ বাছাইয়ে সচেতন হওয়ার আহ্বান প্রকৃতি ও পরিবেশবিদদের। এপ্রিল-মে মাসের পুরোটা জুড়েই চলে তাপপ্রবাহ। গ্রীষ্মকালে এমন তাপপ্রবাহ স্বাভাবিক মনে করলেও জনজীবন অতিষ্ঠ হওয়ার জন্য মানুষই দায়ী বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। প্রকৃতি এবং অঞ্চলভেদে গাছের রয়েছে ভিন্নতা। প্রকৃতির ভারসাম্য না বুঝেই বৃক্ষরোপণ আমাদের জন্য বিপরীত ফল এনে দিচ্ছে। যা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে চলমান তাপপ্রবাহে অতিষ্ঠ জনজীবনে। এ ক্ষেত্রে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাকারী পরিকল্পিত বৃক্ষরোপণে এগিয়ে আসার আহ্বান সংশ্লিষ্টদের। এরই মধ্যে সারাদেশকে আমরা বিদেশি জাতের গাছ দিয়ে ভরিয়ে দিয়েছি। যেমন: আকাশমনি, ইউক্লিপটাস, মেহগনি, রেইনট্রি, শিশু, ইপিলইপিল, চাম্বল, কনকচূড়া, লম্বু ইত্যাদি। বিদেশি গাছের সাথে আমার দেশের জীববৈচিত্র্য পশু-পাখি, ইনসেক্ট, প্রজাপতি একদম নির্ভরশীল নহে! তাই দেশের বৃহত্তর স্বার্থে তথা টেকসই জীববৈচিত্র্য, তাপ নিয়ন্ত্রণ এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় এসব বিদেশি জাতের গাছপালা পরিহার করে; দেশি গাছপালা রোপণের এখনই সময় বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টজনেরা। তাপপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণ, টেকসই জীববৈচিত্র্য এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় নিম্নোক্ত দেশি গাছপালা রোপণের এখনই সময় বলে মনে করেন কৃষি ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা। দেশীয় গাছ যেমন: নিম, অর্জুন, বট, পাকুড়, ডুমুর, বরুণ, বহেড়া, আমলকি, হরতকি, হিজল, করাস, কাঠবাদাম, কদম, কৃষ্ণচূড়া, আম, কাঁঠাল, জাম, আমড়া, কামরাঙা, ডেউয়া, গামারি, রাধাচূড়া, সোনালু ইত্যাদির মধ্যে অনেক গাছই এখন বিরল প্রজাতির তালিকায় উঠেছে। ওষুধি গাছ শুধু প্রকৃতিকে শীতলতা এনে দেয় না; সহায়ক হয় বাস্তুসংস্থানেও। দেশি গাছের সাথে জীববৈচিত্র্য পশু-পাখি, ইনসেক্ট, প্রজাপতি ইত্যাদি নির্ভরশীল। ফুলে-ফলে ভরা গ্রীষ্মকাল গাছের পাতা হলুদ হওয়ার কারণ ও প্রতিকার দেশি গাছ থাকলে এই জীববৈচিত্র্য টিকে থাকবে। সৃষ্টি থেকেই মানুষ পরিবেশ নির্ভর! পরিবেশ ব্যতিরেকে জীবনে টিকে থাকার কোনো বিকল্প নেই। অর্থাৎ ব্যাক টু নেচার- আমাদের সবাইকেই নেচারের কাছে ফিরে যেতে হবে। মানুষকে আবার পেছনে ফিরে যেতে হবে। আর পেছন মানেই হলো; গাছ-পালা, লতা-পাতা বেষ্টিত আমাদের অরিজিন প্রকৃতি ও আবাসস্থল। একটি বয়স্ক বৃক্ষ শত শত টন কার্বন শোষণের মাধ্যমে বায়ুর দূষণরোধ ও তাপপ্রবাহ দুপুরে প্রস্বেদনের মাধ্যমে বাতাসে প্রায় ১০০ গ্যালন পানি নির্গত করে পরিবেশ ঠান্ডা রাখে। গাছ কার্যকর শব্দ বাধা তৈরি করে, অক্সিজেন উৎপন্ন করে, কার্বন সিংক হয়ে যায়, বায়ু পরিষ্কার করে, ছায়া এবং শীতলতা দেয়, বাতাসের ব্রেক হিসেবে কাজ করে, মাটি ক্ষয়ের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং সম্পত্তির মান বাড়ায়। আসুন আমরা প্রাণীর জীবন বাঁচাতে কল্পিতভাবে সঠিক জাত নির্বাচন করে বৃক্ষরোপণ করি এবং অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্যোগ থেকে মানুষকে রক্ষা করি। |