শিরোনাম: |
ডিগ্রি শিক্ষার্থীদের সেশনজট নিরসনে অটোপ্রমোশনের দাবিতে শাহবাগে নতুন কর্মসূচি
|
সারা দেশ জুড়ে ডিগ্রি ৩ বছরের কোর্সের ছাত্রছাত্রীদের প্রতি দীর্ঘ ৬/৭ বছরের অযৌক্তিক সেশনজট, বৈষম্য ও অমানবিক হয়রানি চিরতরে নিরসনের লক্ষ্যে অটো প্রমোশনের এক দফা দাবিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিতে বাধা দেওয়াসহ নারী শিক্ষার্থীর ওপর হামলার পরে গত কয়েক সপ্তাহ যাবৎ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে ডিগ্রি বৈষম্যনিরসন ছাত্র আন্দোলন। রোববার সারা দেশের সকল জেলা/উপজেলা/কলেজ পর্যায়ে ডিগ্রি ছাত্রছাত্রীরা অফলাইন ও অনলাইনে সমন্বয়ক প্রতিনিধিদের মতামতের ভিত্তিতে সোমবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে ডিগ্রি বৈষম্যনিরসন ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা বিভাগীয় ও কেন্দ্রীয় টিমের অন্যতম সমন্বয়ক শাহরিয়ার সুলতানা মিম এবং চট্টগ্রাম বিভাগীয় ও কেন্দ্রীয় টিমের অন্যতম সমন্বয়ক অভি আহমেদ এই নতুন কর্মসূচির ঘোষণা দেন। আজ মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) নতুন কর্মসূচি ‘লং মার্চ টু ঢাকা’র বিষয়ে ডিগ্রি বৈষম্য নিরসন ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় টিমের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘বুধবার (১৬ অক্টোবর) আমাদের ডিগ্রি বৈষম্যনিরসন ছাত্র আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ অভিমুখে রাজধানীর শাহবাগ জাদুঘরের সামনে সকাল ৮টা থেকে শান্তিপূর্ণ এ অবস্থান কর্মসূচি পালিত হবে।’ তিনি আরও বলেন ‘আমরা দীর্ঘ ৬/৭ বছরের অমানবিক সেশনজট, হয়রানি ও বৈষম্যের শিকার। আমরা দীর্ঘদিন যাবৎ শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের ন্যায্য দাবি জানিয়ে আসছি। ডিগ্রি কোর্স সর্বোচ্চ ৩ বছরের মধ্যে শেষ করার কথা থাকলেও গত ৬/৭ বছরেও আমাদের ফাইনাল পরীক্ষার চূড়ান্ত ধাপ আজও শেষ হয়নি। ডিগ্রি কোর্সের এই অমানবিক সেশনজট চিরতরে বন্ধ করতে হলে ডিগ্রি প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের ফলাফলের ভিত্তিতে তৃতীয় বর্ষের ফাইনাল শিক্ষার্থীদের অটোপ্রমোশন দিয়ে দ্রুত ২০২৪ সালের মধ্যে সার্টিফিকেট প্রদানের জন্য অনুরোধ করেন।’ তিনি বলেন, ‘গত ৩/৪ বছরেও সময়মতো পরীক্ষা নেয়নি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। সেই ব্যর্থতার দায়ভার শিক্ষার্থীদের নয়! একাধিকবার জানানোর পরেও দিনের পর দিন ডিগ্রি শিক্ষার্থীদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছেন। আমাদের জীবন থেকে অন্যায়ভাবে অনেকগুলো বছর অযথা নষ্ট করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। আগামীতে ডিগ্রি শিক্ষার্থীদের আর যেনো একটি দিনও নষ্ট না হয়। দেয়ালে আমাদের পিঠ ঠেকে গেছে বলেই বাধ্য হয়ে আমরা ১ দফা অটোপ্রমোশনের দাবি জানিয়ে এসেছি। যেনো আমরা ২০২৫ সালের শুরুতেই মাস্টার্স কোর্সে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা করতে পারি। সেই প্রত্যাশাই করি সংশ্লিষ্টদের কাছে।’ জানা যায়, বুধবার ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি সফল করতে আমরা ডিগ্রির ফাইনাল শিক্ষার্থীরাসহ সকল ডিগ্রি শিক্ষার্থীদের উপর হওয়া অবহেলা, অবিচার ও জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলার প্রতিবাদে ছাত্রছাত্রীরা জড়ো হয়ে শান্তিপূর্ণভাবে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন শিক্ষার্থীরা। ডিগ্রি শিক্ষার্থীদের হয়রানি ও সেশনজট চিরতরে নিরসনের লক্ষ্যে তাদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে অটো প্রমোশনের ১দফা দাবিতে জড়ো হবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এতে সারা দেশের ডিগ্রি শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করবে বলে জানান। নতুন কর্মসূচি অনুযায়ী কেন্দ্রীয়ভাবে সকাল ৮ ঘটিকায় ঢাকার শাহবাগস্থ জাতীয় জাদুঘরের সামনে জড়ো হবেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। জানা যায়, ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ডিগ্রি কোর্সে অধ্যায়নরত ছাত্রছাত্রী বেশিভাগই নিয়মিত, অনিয়মিত, প্রাইভেট ও সার্টিফিকেট কোর্সের এবং নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। জীবিকার তাগিদে পড়ালেখার পাশাপাশি অনেকেই কাজকর্ম করেন। পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য অনেক সময় নিজেদের কাজকর্ম বা চাকুরিও ছেড়ে দিতে হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়ে অনেকেই আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন। আন্দোলনে আহত-ট্রমায় ভোগা শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব নয়। এরই মাঝে দেশের বিভিন্ন জেলা বন্যায় প্লাবিত হয়ে হয়েছে। এই অমানবিক পরিস্থিতিতে অযৌক্তিক সেশনজট চিরতরে নিরসনের লক্ষ্যে ডিগ্রি ১ম বর্ষ ও ২য় বর্ষের ফলাফল সমন্বয়করে ৩য় বর্ষে অটোপ্রমোশন দিয়ে ফলাফল ঘোষণা করে ২০২৪ সালের মধ্যে দ্রুত সার্টিফিকেট প্রদান করার দাবি করেন শিক্ষার্থীরা।’ এদিকে সারা দেশব্যাপী ডিগ্রি বৈষম্যনিরসন ছাত্র আন্দোলনের জেলা/উপজেলা ও কলেজ পর্যায়ের সমন্বয়ক/প্রতিনিধিরা সেশনজট নিরসনের লক্ষ্যে অটোপ্রমোশনের দাবিতে কলেজ প্রধানের কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের বর্তমান এক দফা দাবি হলো- ‘৩ বছরের ডিগ্রি কোর্সের ৭ বছরের অযৌক্তিক ও অমানবিক সেশনজট চিরতরে বন্ধ করতে হলে ডিগ্রি প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের ফলাফলের ভিত্তিতে তৃতীয় বর্ষের ফাইনাল শিক্ষার্থীদের অটোপ্রমোশন দিয়ে ফলাফল ঘোষনা করে দ্রুত ২০২৪ সালের মধ্যে সার্টিফিকেট প্রদান করা এবং ২০২৫ সালের শুরুতেই দ্রুত মাস্টার্স কোর্সে ভর্তি হয়ে যেনো পড়াশোনা করতে পারেন শিক্ষার্থীরা।’
|