শিরোনাম: |
নতুন কোনো বয়ান শুনতে চাই না : অন্তর্বর্তী সরকারকে আমীর খসরু
|
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বলেছেন, বয়ান হবে নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে দেয়া। এর বাইরে নতুন বয়ান শুনতে চাই না। আওয়ামী লীগকে ক্যান্সেল (বাতিল) করতে হলে জনগণের ভোটের মাধ্যমে করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ : নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। আয়োজন করে ভয়েস অব ডেমোক্রেসি অ্যান্ড ভোটার রাইটস। আমীর খসরু বলেন, আপনি যদি আওয়ামী লীগকে ক্যান্সেল করে চান অন্য কোনোভাবে, এগুলো টিকে থাকে না। ফ্যাসিস্টকে ক্যান্সেল করবেন, ভোটের মাধ্যমে চরমভাবে পরাজিত করে। অন্য কোনোভাবে ক্যান্সেল করলে কোনো সুফল বয়ে আনে না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বিএনপির জন্য সংস্কার নতুন কিছু নয়। খালেদা জিয়া ২০১৬ সালে ভিশন-২০৩০ সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছিল। তারেক রহমানও যুগপত আন্দোলনে থাকা সব দলের মতামতের ভিত্তিতে ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছেন। শুধু সবাইকে নিয়ে নয়, বাস্তবায়নের জন্য ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে থাকা সব দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটা জাতীয় সরকার গঠন করা হবে। তিনি বলেন, জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে সংস্কার বাস্তবায়ন করতে হবে। জনগণের আস্থা নিয়ে সংস্কার করবে হবে। সেটা একমাত্র সম্ভব নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমে। অনির্বাচিত কোনো সরকারের তাদের নিজস্ব চিন্তা ভাবনা ও দর্শনের সংস্কার করার সুযোগ নেই। যেসমস্ত সংস্কার ঐক্যমতে আছে, সেগুলো বাস্তবায়নের আমাদের কোনো আপত্তি নেই। বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, জনগণকে বাইরে রেখে যে বয়ান তৈরি করা হচ্ছে, তা জাতির কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। স্বাধীনতার পর শেখ মুজিবের একটা বয়ান ছিল, স্বেরাচারের একটা ছিল এবং ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার একটা বয়ান ছিল। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা বলেছিল ‘উন্নয়নের ওপরে গণতন্ত্র’। কিন্তু উন্নয়নের সাথে, হাতে হাত মিলে চলতে হয়। গণতন্ত্র বাদ দিয়ে উন্নয়ন করলে, লুটপাট ও বিদেশে টাকা পাচারের উন্নয়ন হবে। গণতন্ত্র বাদ দিয়ে উন্নয়ন করলে পকেটের উন্নয়ন হবে। একমাত্র বয়ান হবে নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে দেয়া। এর বাইরে নতুন বয়ান শুনতে চাই না। আমীর খসরু আরো বলেন, আমরা ৩১ দফা সংস্কার বাস্তবায়ন করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। ১৬ বছরে জ্বলে পুড়ে বিএনপি খাঁটি সোনায় পরিণত হয়েছে। ত্যাগ-জুলুমের মধ্যে দিয়ে বিএনপি নতুন বিএনপিতে পরিণত হয়েছে। বিএনপির নেতাকর্মীরা ত্যাগ করতে শিখেছে, রক্ত দিতে শিখেছে ও জীবন দিতে শিখেছে। আমরা গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও ভোটারধিকার ফিরিয়ে পাওয়ার লড়াইয়ে থেমে থাকব না। তিনি আরো বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে আমরা ব্যর্থ হতে দেবো না। আমরা সমর্থন দিয়ে যাচ্ছি এবং যাবো। সবাই মিলে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটিয়েছি। সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে গণতন্ত্র পক্ষের কাজ করতে হবে। হাসিনা পালনোর পর দেশের মানুষের মনোজগতের পরিবর্তন হয়েছে। যে দল ও ব্যক্তি বুঝতে পারবে না, তাদের রাজনীতি বেশি দূর এগোতে পারবে না। আমীর খসরু বলেন, বিএনপি শুধু বিপ্লব নয়, বিএনপি সংহতি। বিএনপি জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদের কথা বলছে। আমরা জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে, যেটা প্রতিষ্ঠিত করব সেটাই থাকবে। তাই বিএনপি নতুন বাংলাদেশ গড়তে চায়। স্বাধীন মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চায়। দেশকে সঠিক ট্র্যাকে ফিরিয়ে আনতে হবে। আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক মোস্তফা কামাল মজুমদারের সভাপতিত্বে এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের রহমতুল্লাহ প্রমুখ। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাবেক সহকারী অধ্যাপক ড. এম মুজিবুর রহমান।
|