শিরোনাম: |
সাজেদা ফাউন্ডেশন ও খান একাডেমি বাংলাদেশ গবেষণা কর্মসূচি উদ্বোধন
|
![]() সিরডাপে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ওই অরিয়েন্টশন কর্মসূচিতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি), জেলা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস, অংশগ্রহণকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের সূচনা বক্তব্য দেন সাজেদা ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, জাহেদা ফিজ্জা কবীর। তিনি তার বক্তব্যে সাজেদা ফাউন্ডেশনের যাত্রাপথের কথা তুলে ধরেন, যা সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষা প্রদান করতে একটি গ্যারেজ স্কুল থেকে শুরু হয়েছিল। সময়ের সাথে সাথে এই প্রতিষ্ঠান নারী ক্ষমতায়ন, মানসিক স্বাস্থ্য, ক্ষুদ্র ঋণ, জলবায়ু পরিবর্তনসহ বিভিন্ন খাতে কার্যক্রম সম্প্রসারণ করেছে। তিনি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন যে, সাজেদা ফাউন্ডেশন এখন খান একাডেমি বাংলাদেশ গবেষণা প্রকল্পে অর্থায়ন করছে, যাতে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত খান একাডেমি প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের জন্য মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা যায়। খান একাডেমি বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, আজওয়া নাইম ব্যাখ্যা করেন, কীভাবে খান একাডেমি প্ল্যাটফর্ম শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও শিক্ষা প্রশাসকদের ক্ষমতায়ন করে। এই প্ল্যাটফর্মটি ব্যক্তিগত শিক্ষার অভিজ্ঞতা, রিয়েল-টাইম অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ ও ইন্টারেক্টিভ কনটেন্ট সরবরাহ করে, যা শিক্ষার্থীদের গভীর ধারণাগত দক্ষতা গঠনে সহায়তা করে। ইতোমধ্যে ভারত, ব্রাজিল, ফিলিপাইন ও শ্রীলঙ্কার মতো দেশে এই প্ল্যাটফর্মের ইতিবাচক প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে। বাংলাদেশে গবেষণা কর্মসূচির মূল লক্ষ্য হল শিক্ষার্থীদের মৌলিক গণিত দক্ষতা উন্নত করা এবং বিশেষ করে সরকারি বিদ্যালয়গুলোর জন্য মানসম্মত শিক্ষা আরও সহজলভ্য করা। প্রফেসর ড. এ কিউ এম শফিউল আজম, মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব), তার বক্তব্যে বলেন যে, শিক্ষার রূপান্তরমূলক পরিবর্তন গ্রহণ করা এখন সময়ের দাবি, যা শিক্ষকের ভূমিকা পরিবর্তন করবে এবং শিক্ষার্থীদের নতুন শিক্ষার পদ্ধতিতে প্রস্তুত করবে। খান একাডেমি বাংলাদেশের গবেষণা কর্মসূচি এই পরিবর্তনের প্রথম ধাপ, যা শিক্ষার্থীদের গণিত দক্ষতা বৃদ্ধিতে এই প্ল্যাটফর্মের প্রভাব বিশ্লেষণ করবে। প্রফেসর ড. খান মঈনুদ্দিন আল মাহমুদ সোহেল, পরিচালক (মাধ্যমিক), মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর, বলেন, গবেষণা কর্মসূচির সাফল্য নির্ভর করবে উপযুক্ত স্কুল, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নির্বাচন এবং তাদের বিদ্যমান সুযোগ-সুবিধার ওপর। তিনি সমন্বয়, পর্যবেক্ষণ ও পারস্পরিক সহায়তা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব দেন যেন সঠিক বাস্তবায়ন সম্ভব হয়। ঢাকা জেলার শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবদুল মজিদ বলেন যে, খান একাডেমি বাংলাদেশ কার্যক্রমটি শিক্ষাক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনতে পারে, যা শিক্ষক বাতায়ন প্ল্যাটফর্মের মতো গণিত শিক্ষা সহজ ও কার্যকর করতে পারবে। প্রফেসর শিপন কুমার দাস, প্রকল্প পরিচালক, লার্নিং অ্যাকসেলারেশন ইন সেকেন্ডারি এডুকেশন (LAISE) প্রকল্পের প্রজেক্ট ডিরেক্টর, তিনি ব্যাখ্যা করেন কিভাবে LAISE প্রকল্প ও খান একাডেমি গবেষণা কর্মসূচি একে অপরের পরিপূরক। তিনি বলেন, খান একাডেমি প্ল্যাটফর্ম শিক্ষার্থীদের বিশ্লেষণধর্মী চিন্তাভাবনা ও সমস্যা সমাধানের দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করে, যেখানে বাংলা ভাষার কনটেন্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। প্রফেসর মো. সাইদুর রহমান, পরিচালক (প্রশিক্ষণ), মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর, গণিতের তাত্ত্বিক ও সৃজনশীল চিন্তাভাবনা বিকাশে ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেন এবং জেলা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের সহযোগিতা কামনা করেন যেন গণিত ও বিজ্ঞান শিক্ষার মান আরও উন্নত হয়। সমাপনী বক্তব্যে সাজেদা ফাউন্ডেশনের উপ-প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফজলুল হক এই উদ্যোগের স্বকীয়তা তুলে ধরেন। গবেষণা কর্মসূচির সাফল্য নিশ্চিত করতে পারস্পরিক সহযোগিতা ও নিয়মিত পর্যবেক্ষণের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেন। তিনি সফল বাস্তবায়নের জন্য টিমের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। এই সমাপনী বক্তব্যের মাধ্যমে ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বের সমাপ্তি হয়। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় অংশে খান একাডেমি বাংলাদেশ টিম উপস্থিত সকল প্রধান শিক্ষক ও অধ্যক্ষের সাথে একটি ওয়ার্কশপের আয়োজন করে। ওয়ার্কশপে বিদ্যালয়গুলোতে কিভাবে খান একাডেমি প্লাটফর্মটি ব্যবহার করা হবে এবং সেক্ষেত্রে কি কি চ্যালেঞ্জ হতে পারে এবং তার সমাধান কি সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। খান একাডেমি বাংলাদেশের এই গবেষণামূলক কার্যক্রমে নির্বাচিত সকল বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও অধ্যক্ষগণ সানন্দে এই ওয়ার্কশপে অংশগ্রহন করেন এবং প্রতিটি বিদ্যালয়ে কীভাবে এই প্লাটফর্ম ব্যবহার করা যায় সে সম্পর্কে তাদের পরিকল্পনা সবার সামনে উপস্থাপন করেন। ওয়ার্কশপ শেষ হওয়ার মাধ্যমেই খান একাডেমি বাংলাদেশ আয়োজিত এই ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানটি শেষ হয়।
|