শিরোনাম: |
শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় ভরা এক অপ্রত্যাশিত চিঠি, প্রিয় তৌফিক সুলতান স্যার
|
![]() স্যার, আমি ভুলে গিয়েছিলাম! ভাবা যায়? অথচ তিন বছর আগে, এই দিনটায় আমরা কত উচ্ছ্বাসে আপনাকে শুভেচ্ছা জানাতাম। তখন আমরা ভাবতাম, আপনি কি সত্যিই মানুষের মতো, নাকি কোনো দার্শনিক চরিত্র, যে শুধু আমাদের জীবন আলোকিত করতেই এসেছেন! কারণ আপনার চোখে ছিল রহস্য, কণ্ঠে ছিল এমন এক শক্তি, যা আমাদের টেনে নিয়ে যেত জ্ঞানের গভীর সমুদ্রে। আমি গুগল করলাম—কেবল স্মৃতিচারণের জন্য। স্যার, জানেন? আজকের এই দিনে শুধু আপনার জন্মদিন নয়, ইতিহাসেও কত ঘটনা ঘটেছে! ১৭৮৯ সালের আজকের দিনে জর্জ ওয়াশিংটন আমেরিকার প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৪৮ সালে শ্রীলঙ্কা ব্রিটিশদের হাত থেকে স্বাধীন হয়েছিল। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ডেনমার্ক, সুইডেন, নরওয়ে... কত দেশ! আর ১৯৯৯ সালের এই দিনে, আপনিও জন্মেছিলেন! স্যার, আমি কিছু বলতে চাই, যা কখনো বলিনি— আপনার ক্লাসে বসে আমাদের মাঝে একটা অদ্ভুত অনুভূতি হতো। আপনি যখন কথা বলতেন, মনে হতো, একেকটা শব্দের পেছনে অজানা কোনো সংকেত লুকিয়ে আছে। আপনি কখনো সোজাসাপ্টা উত্তর দিতেন না, বরং এমনভাবে বলতেন, যেন আমরা নিজেরাই উত্তর খুঁজে বের করি। এটা কি আপনার কোনো পরীক্ষামূলক কৌশল ছিল, নাকি আমাদের নিয়ে একধরনের রহস্যময় খেলা? আর একটা কথা! আপনার ধমক, সেটা ছিল একেবারেই অন্যরকম! বাইরে থেকে ভয়ংকর, কিন্তু ভেতরে যেন একরকম স্নেহ লুকিয়ে থাকতো। আপনার কঠোরতা আমাদের গঠন করেছে, আমাদের আত্মবিশ্বাসী করেছে। কিন্তু স্যার, আপনি কেন এত রহস্যময় ছিলেন? কেনো কখনোই আমাদের কাছে পুরোপুরি খোলাসা করলেন না, আপনি কে? আপনার স্বপ্নগুলো কী? আজ তিন বছর হয়ে গেলো, আপনার সাথে দেখা নেই। কেমন আছেন, স্যার? এখনও কি সেই পুরনো হাসিটা আছে? এখনও কি ক্লাসে ঢুকে প্রথমেই আমাদের চোখের দিকে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করেন, কে মনোযোগী আর কে চিন্তায় ডুবে আছে? আজকের দিনে আমি শুধু আপনাকে শুভেচ্ছা জানাতে চাই না, স্যার। আমি বলতে চাই—আপনার শূন্যতা আমরা অনুভব করি। আপনি ছিলেন আমাদের জীবনের এক টুকরো রহস্য, এক টুকরো আলো। এবং আজও সেই আলো নিভে যায়নি, বরং আরও বেশি উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে আমাদের স্মৃতিতে। শুভ জন্মদিন, প্রিয় স্যার! যেখানেই থাকুন, ভালো থাকুন। আপনি আমাদের হৃদয়ে চিরজীবী।
|