শিরোনাম: |
৮০ শতাংশ তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী ভুগছেন ফ্যাটি লিভারে
|
‘জার্নাল অব ক্লিনিকাল অ্যান্ড এক্সপেরিমেন্টাল হেপাটোলজি’-তে একটি সমীক্ষার রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে দাবি করা হয়েছে দেশের প্রায় ৮০ শতাংশ তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীরই নাকি ফ্যাটি লিভার রয়েছে। অস্বাস্থ্যকর খাদ্য খাওয়া, দীর্ঘ সময়ে বসে থেকে কাজ, রাত জাগার অভ্যাস, নেশা করা ইত্যাদি কারণ রয়েছে এর পিছনে। কেবল মদ্যপানের কারণেই যে লিভারে মেদ জমছে তা কিন্তু নয়। যারা মদ্যপান করেন না, তাদেরও লিভারে চর্বির স্তর বেড়ে চলেছে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় যাকে বলে ‘নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার’। সমীক্ষা বলছে, দেশের জনসংখ্যায় প্রাপ্তবয়স্কদের অন্তত ৩৮ শতাংশ ‘নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার’-এর সমস্যায় ভুগছেন। শিশুরাও বাদ যাচ্ছে না। চণ্ডীগড়ে নাকি এই সংখ্যা খুবই বেশি। সেখানকার জনসংখ্যায় অন্তত ৫৩ শতাংশেরই ফ্যাটি লিভারের সমস্যা রয়েছে। লিভারে মেদ জমছে কেন? স্থূলতা বা ওজন বৃদ্ধি ভাজাভুজি, বেশি চিনি দেওয়া পানীয়, প্রক্রিয়াজাত মাংস খাওয়ার অভ্যাস শরীরচর্চার অভাব দীর্ঘ সময়ে একটানা বসে কাজ রাত জাগা, মধ্যরাতে জাঙ্ক ফুড খাওয়া ফ্যাটি লিভার দুই রকম। অ্যালকোহলিক ও নন অ্যালকোহলিক। মাত্রাতিরিক্ত মদ্যপান থেকে লিভারে চর্বি জমলে তা অ্যালকোহলিক ফ্যাট। কিন্তু দ্বিতীয় ক্ষেত্রটি মূলত খাদ্যতালিকায় অতিরিক্ত, তেল, ফ্যাট জাতীয় উপাদান বেড়ে গেলে হয়। লিভারের স্তরে স্তরে চর্বি জমলে ‘মেটাবলিক ডিজ়ফাংশন-অ্যাসোসিয়েটেড স্ট্যাটোটিক লিভার ডিজিজ়’ বা এমএএসএলডি রোগও হয়। এমনটাই জানিয়েছে, মেডিসিনের চিকিৎসক পুষ্পিতা মণ্ডল। তার কথায়, লিভারে যদি ১০ শতাংশের বেশি মেদ জমে যায়, তখন তা ধীরে ধীরে স্ট্যাটোটিক রোগের দিকে বাঁক নেয়। ফ্যাটি লিভারে তেমন ক্ষতি হয় না, কিন্তু যদি তা বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে যায়, তা হলে লিভারের ক্ষত বা সিরোসিস এবং তার থেকে লিভার ক্যানসার হতে পারে। কেবল তাই নয়, লিভারের রোগ থেকে কিডনি ফেলিয়োর হওয়ার ঝুঁকিও বাড়ে। কখন বুঝবেন চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে? ওজন দ্রুত কমতে থাকবে, সারাক্ষণ বমি ভাব থাকবে। চিকিৎসক কুমার গৌরব জানাচ্ছেন, পেটের উপরে ডান দিকে ব্যথা হবে, প্রস্রাবের রং গাঢ় হয়ে যাবে। প্রচণ্ড ক্লান্তি ও নির্ঘুম থাকবে। অনেকের ক্ষেত্রে জন্ডিসের লক্ষণও দেখা দেয়। কী কী টেস্ট করিয়ে রাখা জরুরি লিভারে মেদ জমছে কি না, তা বাইরে থেকে বোঝার উপায় নেই। কাজেই কিছু টেস্ট করিয়ে রাখতেই হবে। সেগুলি কী কী— ১) লিভার ফাংশন টেস্ট ২) আলট্রাসাউন্ড বা ফাইব্রোস্ক্যান টেস্ট, ফ্যাটি লিভারের সমস্যা বাড়লে বা লিভার শক্ত হতে থাকলে তা বোঝার জন্য এই পরীক্ষা করা হয়। ৩) ব্লাড সুগার, লিপিড প্রোফাইল, এইচবিএ১সি ৪) এমআরআই বা সিটি স্ক্যান লিভার ভাল রাখতে কার্বোহাইড্রেট ও চিনি খাওয়ার পরিমাণ কমাতে হবে। বাইরের খাবার, ভাজাভুজি, প্রক্রিয়াজাত খাবার, নরম পানীয়, অ্যালকোহল পুরোপুরি বন্ধ করে দিতে হবে। সেই সঙ্গে নিয়মিত শরীরচর্চাও জরুরি।
|